Image default
জানা অজানা

মহাদেশগুলোর নাম করণের ইতিহাস ও আয়তন

আমাদের এ বিশাল পৃথিবীতে রয়েছে অনেকগুলো আঞ্চলিক পার্থক্য। আর এ পার্থক্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য মহাদেশ। মহাদেশ বলতে পৃথিবীর বড় ভূখণ্ডসমূহকে বুঝায়। আঞ্চলিকতার পার্থক্যে পৃথিবীকে ৭টি ভাগে বা মহাদেশে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো- এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া বা ওশেনিয়া ও এন্টার্কটিকা। এই মহাদেশগুলোর মধ্যে আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে এশিয়া সর্ববৃহৎ।

এশিয়া মহাদেশ ; ছবি : worldmapsinbangla

এশিয়ার নামকরণ করা হয়েছে ‘আসিরিয়ান’ বা ‘আসু’ শব্দ থেকে। রোমান সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের নাম ছিল আসিরিয়ান, আর সেই নাম থেকেই এই মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে ‘এশিয়া’। অধিকাংশ গ্রিক মনে করেন দেবতা প্রমিথিউসের স্ত্রীর নামে (অর্থাৎ হেসিওয়ান, Hesione) এশিয়ার নামকরণ করা হয়। কিন্তু লিডিয়ানরা মনে করে, কট্যাসের (Cotys) ছেলে এশিজের (Asies) নামে এর নামকরণ করা হয়। গ্রিক পুরাণে, “এশিয়া” (Ἀσία) বা “এশিয়” (Asie) (Ἀσίη) নাইম্ফ বা লিডিয়ার দেবী তিতান-এর নাম। এর আয়তন ৪,৪৫,৭৯,০০০ বর্গ কিলোমিটার।

আফ্রিকা মহাদেশ ;ছবি : worldmapsinbangla

আফ্রিকা মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে সেখানকার বর্বর এক জাতির নামানুসারে। প্রথম দিকে আফ্রিকা নামে একটি প্রদেশের নামকরণ করা হয়। পরে এই নাম পুরো মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে এই মহাদেশ আফ্রিকা নামে পরিচিতি পায়। কেউ বলেন আফ্রিকা এসেছে র্যাটিন ‘আপ্রিকা’ থেকে, যার মানে রৌদ্রজ্জল। কেউ বলেন মিশরীয় আফ-রুই-কা থেকে আফ্রিকা এসেছে, এর মানে ‘কা’ এর দিকে ধাবিত হওয়া। ‘কা’ অর্থ জন্মস্থান। কেউ বলেন র্যাটিন ‘আফ্রিকাস’ বা দক্ষিণা বাতাস থেকে আফ্রিকা নামকরণ হয়েছে। রবার্ট আর স্টিগলিৎজ এর মতে আফির-ইক-আ থেকে আফ্রিকা এসেছে, যার মানে সম্পদের ভান্ডার। এর আয়তন ৩০,২২১,৫৩২ বর্গ কিলোমিটার।

ইউরোপ মহাদেশ; ছবি : worldmapsinbangla

ইউরোপ মহাদেশের নামকরণ কিভাবে হয়েছে সে বিষয়ে সঠিক কোনও তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। একটি মতবাদ মনে করে এটি গ্রিক ইউরাস (eurus) থেকে এসেছে, যার অর্থ ব্যাপক, বিস্তৃত এবং অপস (ōps/ōp), যার অর্থ চোখ, মুখ, মুখায়ব। এর আয়তন ১,০১,৮০,০০০ বর্গ কিলোমিটার।

উত্তর আমেরিকা মহাদেশ; ছবি : worldmapsinbangla
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ; ছবি : worldmapsinbangla

আমেরিকা মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে বিখ্যাত পর্যটক আমেরিগো ভেসপুচ্চির নামানুসারে। বিখ্যাত এই পর্যটক জন্ম গ্রহণ করেন ১৪৫২ সালে এবং মৃত্যুবরণ করেন ১৫১২ সালে। বিখ্যাত এই পর্যটকের নাম থেকে আমেরিকা মহাদেশের নামকরণ করার পর আমেরিকাকে উত্তর ও দক্ষিণ ভাগে ভাগ করা হয় ফলে উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা নামে দুটি মহাদেশের জন্ম হয়। উত্তর আমেরিকার আয়তন ২,৪৭,০৯,০০০ বর্গ কিলোমিটার ও দক্ষিণ আমেরিকার আয়তন ১,৭৮,৪০,০০০ বর্গ কিলোমিটার।

অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ; ছবি : worldmapsinbangla

অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে ল্যাটিন শব্দ অস্ট্রালিস শব্দ থেকে, যার অর্থ দক্ষিণী। দ্বীপসমূহকে পার্শ্ববর্তী মহাদেশের অন্তর্গত হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপসমূহকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন ভূ-রাজনৈতিক অঞ্চল ওশেনিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে। এর আয়তন ৮৫,২৫,৯৮৯ বর্গ কিলোমিটার।

এন্টার্কটিকা মহাদেশ; ছবি : ইন্টারনেট

এন্টার্কটিকার নাম এসেছে গ্রিক শব্দ আর্কটিক থেকে। আর্কটিক শব্দের গ্রিক অর্থ ভাল্লুক। এন্টার্কটিকা মহাদেশটি ‘গ্রেট বিয়ার’ নক্ষত্রপুঞ্জের নিচে অবস্থিত বলে এই মহাদেশের নামকরণ এমন করা হয়েছে। এছাড়াও এন্টার্কটিকা মহাদেশে প্রচুর পরিমাণে সাদা ভাল্লুক দেখতে পাওয়া যায়। অ্যান্টার্কটিকা শব্দটি গ্রিক যৌগিক শব্দ অ্যান্টার্কটিকে এর রোমানিত সংস্করণ, যার মানে হলো উত্তরের বিপরীতে অবস্থিত। এর আয়তন ১,৪২,০০,০০০ বর্গ কিলোমিটার।

Related posts

পেঁয়াজ কাটলে কেন চোখে পানি আসে?

News Desk

ভগবান রামের চরিত্র থেকে জীবনের ৫ গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা

Sanjibon Das

সুকাত্রা : দ্বীপ নয়, এ যেন অন্য এক গ্রহ!

News Desk

Leave a Comment