ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার চলমান উত্তেজনা আরও বাড়লে বৈশ্বিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামে আরও চড়াভাব দেখা যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যান চেজ। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ইউক্রেনের সঙ্গে উত্তেজনার কারণে রাশিয়ার জ্বালানি তেল রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হলে তাতে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম বেড়ে প্রতি ব্যারেল ১২০ ডলারে উঠতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে প্রায় ৯১ ডলার দামে। খবর সিএনএনের
সম্প্রতি প্রকাশিত এক নিবন্ধে জেপি মরগ্যানের বৈশ্বিক ব্যবসায় কৌশল বিভাগের প্রধান নাতাশা কানেভা লিখেছেন, তেল উৎপাদনকারী অন্যান্য অঞ্চলের সরবরাহের পরিমাণ কম থাকায় রাশিয়ার ওপর বৈশ্বিক নির্ভরতা বেড়েছে। ফলে রাশিয়া থেকে তেল সরবরাহে যেকোনো বাধা সহজেই তেলের দাম অনেক বাড়াতে পারে। ইতিমধ্যে এর কিছুটা নজিরও দেখা গেছে। সিএনএন জানায়, গতকাল বুধবার প্রতি ব্যারেল তেলের দাম বেড়ে ৯৪ ডলারে পৌঁছায়, যা ছিল গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আর রাশিয়া থেকে তেল রপ্তানি অর্ধেক কমে গেলে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেল ১৫০ ডলারও হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জেপি মরগ্যান। এর আগে ২০০৮ সালের জুলাই মাসে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ১৪৭.৫০ ডলারে উঠেছিল। এখন পর্যন্ত সেটিই জ্বালানি তেলের সর্বকালের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের পরে রাশিয়াই হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ। ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের পরিণতিতে বৈশ্বিক তেলের বাজারে বেশ কিছু ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে সিএনএনের এক বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে। বার্তা সংস্থাটি জানায়, ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে সংঘাত হলে প্রথমত পূর্ব ইউরোপে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হবে। দ্বিতীয়ত, পশ্চিমা শক্তিগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাশিয়াকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এতে রাশিয়ার রপ্তানি কমে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়া তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারে। এতে ইউরোপের বাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়ে যাবে। কারণ, শিল্পকারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল।