রাশিয়া শস্য রপ্তানি চুক্তি স্থগিত করায় রোববার থেকে ইউক্রেনের সমুদ্রসীমায় শস্য রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ইউক্রেন থেকে কোনো শস্যবাহী জাহাজ ছেড়ে যায়নি। এর আগের দিন শনিবার কৃষ্ণসাগরের ক্রিমিয়া উপকূলে নিজেদের নৌবহরে ড্রোন হামলার জবাবে ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পাদিত শস্য রপ্তানি চুক্তি স্থগিত করে মস্কো। এতে করে খাদ্যসংকটের ঝুঁকিতে পড়তে পারে অনেক দেশ।
এদিকে শস্য রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির চেষ্টা করছে রাশিয়া। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘ ও জি–২০ দেশগুলোর দ্রুত সাড়া চান তিনি।
গত ফেব্রুয়ারিতে রুশ হামলা শুরুর পর ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি বন্ধ ছিল। জুলাইয়ে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ’ চুক্তি করে দুই দেশ। চুক্তির পর ৮০ লাখ টন শস্য রপ্তানি করেছে ইউক্রেন। শনিবার সকালে ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল বন্দরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার পর চুক্তিটি স্থগিত করে মস্কো। এর ফলে বিশ্বজুড়ে নতুন করে খাদ্যসংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা টুইটে জানান, রোববার শস্যবাহী কোনো জাহাজ ইউক্রেনের বন্দর ছেড়ে যায়নি। কোনো জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করেনি। তাঁর অভিযোগ, মস্কো আবারও মানুষের ক্ষুধা নিয়ে খেলছে। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, আফ্রিকা ও এশিয়াকে নতুন করে বড় আকারের দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে ফেলতে মস্কো ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা করছে।
চুক্তি স্থগিত করায় রাশিয়ার সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোববার বলেন, রাশিয়ার এমন উদ্যোগ আপত্তিকর। এর ফলে বিশ্বে খাদ্যসংকট বাড়বে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন অভিযোগ করে বলেছেন, রাশিয়া খাদ্যশস্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত বদলাতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গতকাল টুইট করে ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছে, রাশিয়ার এমন সিদ্ধান্ত বিশ্বকে নতুন করে খাদ্যসংকটের মুখে ফেলবে। তাই মস্কোর প্রতি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার করার আহ্বান জানাচ্ছে ইইউ।