শিল্পকারখানার প্রথম নারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলা হয় তাকে। ১৮২৫ সালে রেবেকা লিউকেনসের বয়স ছিল ৩১ বছর। ওই বছরই তাঁর স্বামী মারা যান। এরপরই ব্র্যান্ডিওয়াইন আয়রন ওয়ার্কস অ্যান্ড নেইল ফ্যাক্টরির মালিকানায় আসতে হয়েছিল রেবেকাকে। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়াভিত্তিক এই কোম্পানির প্রথম মালিক ছিলেন রেবেকারই বাবা। পরে তা রেবেকার স্বামী চার্লস ইজারা নিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছরের মধ্যে এ দুজনের মৃত্যুর পর বাধ্য হয়েই প্রতিষ্ঠানের দেখভালের কাজ হাতে নিতে হয় রেবেকাকে।
ব্র্যান্ডিওয়াইন আয়রন ওয়ার্কস অ্যান্ড নেইল ফ্যাক্টরি ছিল মূলত লোহার কারখানা। এ কারখানার তত্ত্বাবধান করতে গিয়ে নিজের পরিবার থেকেই বাধা পেয়েছিলেন রেবেকা লিউকেনস। তবে তিনি দমে যাওয়ার মানুষ ছিলেন না। কোম্পানিকে নতুন উদ্ভাবনের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন রেবেকা। চার্লসের নেতৃত্বেই কোম্পানিটি রেলের বাষ্পীয় ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ তৈরিতে হাত দিয়েছিল। রেবেকা এটি আরও বেগবান করেছিলেন। সেই সঙ্গে রেলের লোকোমোটিভের জন্য লোহা প্রস্তুতের কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি।
মালিক হিসেবে অত্যন্ত সদাশয় ছিলেন রেবেকা। ১৮৩৭ সালে মার্কিন মুলুকে দেখা দিয়েছিল অর্থনৈতিক সংকট। ব্যবসার অবস্থা হয়ে গিয়েছিল অত্যন্ত খারাপ। ওই সময়ে একপর্যায়ে কর্মীদের বেতন দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যখন অর্থ দিতে পারছিলেন না রেবেকা, তখন তিনি খাবার দিয়ে কর্মীদের শ্রমের মূল্য চুকিয়েছিলেন। মূলত সব সময় নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে আসা এবং কোম্পানির ব্যবসায়িক নীতি প্রতিনিয়ত বদলানোর মধ্য দিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন রেবেকা, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও ডুবে যায়নি ব্র্যান্ডিওয়াইন আয়রন ওয়ার্কস অ্যান্ড নেইল ফ্যাক্টরি। বরং সংকট শেষ হওয়ার পর বিখ্যাত লোহার কারখানা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল সেটি। শিল্পকারখানার প্রথম নারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলা হয় রেবেকা লিউকেনসকে।
তথ্যসূত্র: স্টিল মিউজিয়াম ডট ওআরজি, উইমেন হিস্ট্রি ব্লগ ডট কম, সিএনএন, মেন্টাল ফ্লস, স্লেট ডট কম, হিস্ট্রি ডট কম, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, স্যালন ডট কম ও ফোর্বস