ইউটিউব থেকে কত টাকা আয় করা যায় এই প্রশ্নটির সঠিক উত্তর কেউ দিতে পারবে না। তবে আমরা একটি ধরনা করতে পারি যে একটি ভালো মানের ইউটিউব চ্যানেল থেকে মাসে কত টাকা আয় করা সম্ভব।
ধরুন আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে যার কিছু বৈশিষ্ট আছে। যেমন আপনার চ্যানেলে ২০ হাজার সাবসক্রাইবার আছে এবং প্রতিদিন ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার ভিউ হয়। এই অবস্থায় আপনার চ্যানেলের কত টাকা আয় হতে পারে। প্রতি হাজার ভিউ এর জন্য ইউটিউব কত টাকা দেয় এর কোন সঠিক হিসাব নেই। একটি বিষয় অবশ্যই সঠিক যে আপনি এশিয়া মহাদেশের ভিউ দিয়ে যত টাকা আয় করবেন তার থেকে কয়েক হাজার গুন বেশি আয় করবেন ইউরোপ মহাদেশের দেশ গুলো থেকে ভিউ পেলে।
আপনি যখন ইউটিউবে সার্চ করবেন যে ইউটিউব থেকে কত টাকা আয় করা যায় তখন দেখবেন হাজার হাজার কন্টেন্ট পাবেন। আবার আপনি যদি সার্চ করেন যে ইউটিউব প্রতি ১ হাজার ভিউয়ের জন্য কত টাকা দিয়ে থাকে। দেখবেন এর জন্য হাজার হাজার কন্টেন্ট পাবেন। কিন্তু সত্যিটা হল গুলো কোন দিন তাদের পলিসি প্রকাশ করে না।
হ্যাঁ গুগল এটা বলে থাকে তাদের মোট রেভিনিউয়ের ৬০% অর্থ পাবলিশার পেয়ে থাকে। এটা কম বেশি হতে পারে স্থান, কাল, পাত্র ভেদে।
ইউটিউব থেকে কত টাকা আয় করা সম্ভব
এবার আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি। ইউটিউব থেকে কত টাকা আয় করা সম্ভব। এই প্রশ্নের সব থেকে ভালো উত্তর হবে যদি আমি কিছু বিশ্ববিখ্যাত ইউটুবারের আয় তুলে ধরি।
বিউটি রিলেটেড গাইডলাইন রিলেটেড ইউটিউব চ্যানেল Jeffree Star যার ব্যাসরিক আয় অনুমানিক ১৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এই অর্থ তিনি আয় করেন শুধু গুগল এড রেভিনিউ থেকে। এছারা একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার অনেক উপায় আছে।
আশা করছি আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। মূল কথা হচ্ছে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে প্রতিষ্টিত করতে পারলে অর্থ নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না।
ইউটিউব থেকে অর্থ আয় করার উপায়
প্রথমেই বলে রাখা ভালো ইউটিউব থেকে অর্থ আয় করতে চাইলে ইউটিউব কিছু নিদিষ্ট রিকুয়েটমেন্ট আছে। আপনি যদি সেই শর্ত গুলো পূরণ করতে না পারেন তাহলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল এড প্রকাশের জন্য উপযুক্ত বলে গণ্য করা হবে না।
ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয়?
আমি একটি কথা আপনাদের বলতে চাই, ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে কখনো কখনো আপনি ১ ডলরও পাবেন না আবার কখনো দেখা যায় যে ১০০০ ভিউতে আপনি ৫ ডলার পর্যন্ত কামাতে পারবেন। আবার অনেকে ১০০০০ ভিউ হলেও ১ ডলার পান না।
এর কারণ হলো ইউটিউবের এই ইনকামটা নির্ভর করে গুগল এডসেন্সের উপর এবং পাশাপাশি ভিডিও টপিক, ভিজিটর্স বা ট্রাফিক কান্ট্রির উপরও নির্ভর করে।
তাহলে ধরে নিন ইউটিউব কত ভিউতে কত টাকা দিবে এর নির্দিষ্ট পরিমান কেউ কখনো বলতে পারবেনা।
কেননা ইউটিউব সুধু ভিউস এর উপর ভিত্তি করে নয় আরও অনেক কারণের উপর ভিত্তি করে ডলার পে করে থাকে। যেমন, এড ভিউস, CPC, CPM, Keywords, Traffic country ইত্যাদি।
কিওয়ার্ড রিসার্চ
ভিডিও বানানোর আগে আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চ এর প্রসেস অবশ্যই কমপ্লিট করতে হবে।
এতে আপনার বেচে নেওয়া কিওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম জানতে পারবেন পাশাপাশি সেই কিওয়ার্ড এ কেমন সিপিসি পাওয়া যেতে পারে এ বিষয়েও ধারণা পাবেন।
Country (দেশ)
আপনার ভিডিও যদি বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ার অডিয়েন্সদের দ্বারা দেখা হয় এবং এড ভিউ হয় তাহলে আপনি তেমন ভালো সিপিসি পাবেন না।
তবে যদি high CPC keyword নিয়ে কাজ করেন তাহলে ভালো সিপিসি পাবেন।
আর যদি আপনার এড ভিউ US, UK ইত্যাদি দেশগুলো থেকে আসে তাহলে অনেক ভালো পরিমানে সিপিসি আপনি পাবেন।
তাহলে বুজলেন তো, এডসেন্স কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে টাকা দেয় বা এডসেন্স কি হিসেবে টাকা দেয়।
ইউটিউবের শর্ত: আপনার চ্যানেলে মিনিমাম ১০০০ সাবক্রাইবার থাকতে হবে। এবং বিগত ১২ মাসে ৪০০০ ঘন্টা দেখার রেকর্ড থাকতে হবে। তারমানে ১২ মাসের মধ্যে ১০০০ সাবক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা দেখার রেকর্ড থাকলে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে এড প্রকাশের অনুমতি পাবেন।
ইউটিউব এড: আমার যখন ইউটিউবে ভিডিও দেখি তখন এড প্রকাশ করা হয়। এই দেখানোর কাজটির নিয়ন্ত্রন করে ইউটিউব কোম্পানি। যেহেতু আপনার ভিডিও দেখার সময় মানুষ এডটি দেখছে সুতরাং আপনি আয় করবেন এই বিজ্ঞাপনের জন্য। শুধু আপনি নন আপনার থেকে ইউটিউব আয় করবে।
ধরুন ইউটিউব একটি কোম্পানির এড প্রকাশের জন্য ১০০ টাকা নিল। এই টাকা ৬০% থেকে ৬৫% পাবেন আপনি। বাকি ৪০% বা ৩৫% পাবে ইউটিউব। যদিও অনেক কম রেভিনিউ শেয়ার করা হয় কিন্তু কিছু করার নেই কারন প্লাটফর্ম তাদের সুতরাং তারা তাদের ইচ্ছামত রেভিনিউ শেয়ার করবে এটাই স্বাভাবিক।
রেসপন্সার: আপনি আপনার চ্যানেলে ব্যক্তিগত ভাবে অন্যের পণ্যের প্রচার করতে পারবেন। সাধারনত লোকাল কোন পণ্য প্রচার করার ক্ষেত্রে বায়ার লোকাল ইউটুবার খুঁজে থাকেন। যেমন, আপার একটি রেস্টুরেন্ট আছে ঢাকা শহরে এবার আপনি সেই রেস্টুরেন্টের পণ্য বা নামের প্রচার করলে আপনার ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে এর ফলে আপনি কিছু নগদ অর্থ আয় করতে পারবেন।
এছারাও ইউটিউব রেসপন্সার পাওয়ার বিভিন্ন প্লাটফর্ম আছে আপনি সেই প্লাটফর্ম গুলো রেজিঃ করলে বিভিন্ন অ্যাপ, ওয়েবসাইটের রেসপন্সার শিপ পাবেন এবং কিছু নগদ অর্থ আয় করতে পারবেন।
ব্যবাসা: নিচের ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করে আপনি ব্যবসা করতে পারবেন। যখন আপনার প্রতি মানুষের বিশ্বাস হবে তখন আপনি আপনার চ্যানেলের মাধ্যমে যা ইচ্ছা তাই বিক্রয় করতে পারবেন।
উপরের তিনটি মাধ্যমে খুবেই জনপ্রিয় ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য।
শেষে, ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা আয় করা যায়?
বন্ধুরা, আমি উপরে অনেক বিষয়ের উপর কথা বলেছি। এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো আপনি যদি ইউটিউব প্লাটফর্মে নিয়মিত কাজ করতে থাকেন তাহলে আপ্নার subscriber বাড়তে থাকবে। আর আপনি একদিন সফল হবেনই।
যদি মন দিয়ে SEO এর বিষয়ে ধ্যান রেখে কাজ চালিয়ে যান তাহলে আপনার ভিডিওগুলোতে প্রচুর পরিমানে ভিউস বাড়তে থাকবে।
উদ্বাহরণস্বরূপে দেখুন,
যদি আপনার একটি ভিডিওতে ২০০০ ভিউস আসে। আমি উপরে বললাম ১০০০ ভিউসের জন্য যদি আপনি ৩-৫ ডলার করে পান।
তাহলে দেখুন ২০০০ ভিউসে আপনি পাচ্ছেন ৬-১০$। এটা সুধু একটি ভিডিওর উদাহরণ আমি দিলাম।
এরকম যদি প্রতিদিন আপনি ভিডিও আপলোড করতে থাকেন এবং ভিউস বারতে থাকে তাহলে বুজতেই পারছেন ইনকাম কেমন হবে।
আর একজন সফল ইউটিউবার হতে চাইলে আপনাকে প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করতেই হবে। তাহলে আপনার ইউটিউব থেকে ইনকামটা স্থায়ী হবে।
মনে রাখবেন, ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যাবে এর সঠিক পরিমান কেউ আপনাকে বলতে পারবেনা। কারণ এর পূরোটাই আপনার কাজের উপর নির্ভর করে।
অনেক ইউটিউবের আছেন, যারা ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছেন।
প্রথম অবস্থায় আপনি যখন ইউটিউবিং শুরু করবেন তখন মনিটাইজেশন পেয়ে গেলেও প্রথম ১০০$ হতে আপনার অনেকদিন সময় লাগতে পারে, এতে চিন্তার কনো কারণ নেই। মন দিয়ে কাজ করলে আস্তে আস্তে ভিউস আপনার চ্যানেলে আসবে এবং ইনকামও বাড়তে থাকবে।
তাই এখান থেকে কত টাকা আয় করা যাবে তার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না।