চলতি বছর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে উত্তর কোরিয়া। আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম), হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র আর ট্রেন, সাবমেরিন ও সাঁজোয়া যান থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র—কী নেই এই তালিকায়। দেশটি শিগগিরই পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাও চালাতে যাচ্ছে বলেও মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকদের অনেকে।
শক্তিশালী সব ক্ষেপণাস্ত্র হাতে রাখায় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা কাঁধে নিয়ে ঘুরছে উত্তর কোরিয়া। তবে এসব তোয়াক্কা করেন না দেশটির নেতা কিম জং–উন। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো ‘শত্রুদের’ হামলা থেকে নিজের দেশকে রক্ষা করতে এসব অস্ত্র কাছে রাখাটা অতি গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় হামলা চালাতেই হয়তো এসব অস্ত্র দিয়ে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছেন কিম। ১৯৫০ সালে এমনই চেষ্টা করেছিলেন তাঁর দাদা কিম ইল সাং। তবে সে সময় তা সফল হয়নি। কিমের আরেকটি লক্ষ্য হতে পারে, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কখনো যুদ্ধ বাঁধলে সিউলের পাশে যেন ওয়াশিংটন না দাঁড়ায়, সে ব্যবস্থা করা।
উত্তর কোরিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের সব পরীক্ষাই চালানো হয়েছে উত্তর হ্যামগিয়ং প্রদেশের পুনগিয়ে–রি এলাকায়। এলাকাটি পবর্তে ঘেরা। সেখানে প্রথম পরীক্ষা চালানো হয়েছিল ২০০৬ সালের অক্টোবরে। ওই পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণে কোনো বড় ভবন বা শহরের অংশ বিশেষ ধ্বংস হতে পারে। অপরদিকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ পরীক্ষাটি চালানো হয়। ওই বোমা ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্র যে বোমা ফেলেছিল, সেগুলোর চেয়ে অন্তত ১৬ গুণ বেশি শক্তিশালী।
অলাভজনক সংস্থা বুলেটিন অব দ্য অ্যাটোমিক সায়েন্টিস্টসের কর্মকর্তা হ্যানস ক্রিসটেনসেন ও ম্যাট কোরদার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ার হাতে যে পরিমাণ ‘ফিসাইল ম্যাটেরিয়াল’ রয়েছে, তা দিয়ে ৪৫ থেকে ৫৫টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা যাবে। এরই মধ্যে হয়তো ২০ থেকে ৩০টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করেছে তারা। ফিসাইল ম্যাটেরিয়াল হলো পারমাণবিক বোমা তৈরির মূল উপাদান।