Image default
অন্যান্য

উন্মুক্ত পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠনোর আহ্বান বিসিএসএমের

অভিবাসন নিয়ে কর্মরত ২০টি সংঘটনের জোট বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম) বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় নতুন করে সিন্ডিকেট করার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অভিবাসন নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর এই জোটের সদস্যরা আশা করছেন, অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল, ভবিষ্যতে যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এর বদলে উন্মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে যেন কর্মী পাঠানো হয়, যাতে অভিবাসী শ্রমিকরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হন। বুধবার (২৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।

. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .

বিবৃতিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের খবর সবাইকে আশাবাদী করেছিল। কিন্তু চার মাস হয়ে গেলেও এখনও কর্মী যাওয়ার প্রক্রিয়া নির্ধারণ হয়নি। এরই মধ্যে গত কয়েক মাসে গণমাধ্যমের বিভিন্ন খবরের সূত্রে আমরা জানতে পারছি যে, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের জনশক্তি ব্যবসায়ীদের একটি ক্ষুদ্র অংশ আগের মতোই সীমিত সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি বা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠাতে চায়। ২০১৮ সালে যে সিন্ডিকেটের তৎপরতার অভযিোগে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়েছিল, সেই একই পদ্ধতিতে ফের শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার খবর আমাদের ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন করেছে।

এতে আরও বলা হয়, ২০১৬ সালে সিন্ডিকেট গঠনের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ফলে অভিবাসন ব্যয় অত্যাধিক বেড়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের মাত্র ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় প্রথমে ৩৭ হাজার এবং পরে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা অভিবাসন খরচ ধরা হলেও বাস্তবে তিন থেকে চার লাখ টাকা দিতে হয়েছে কর্মীদের। এতে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় ফিরে মাহাথির সরকার জিটুজি প্লাস পদ্ধতি বাতিল করে।

গত কয়েক বছর বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ফের মালয়েশিয়া শ্রমবাজার চালুর খবর সবাইকে আশাবাদী করেছে। কিন্তু গণমাধ্যমের খবর বলছে, পুরনো চক্রটি ফের সিন্ডিকেট করতে তৎপর। বিশেষ করে মাত্র ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নেওয়ার জন্য গত ১৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারভান ঢাকায় চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। এটি আমাদের ভীষণ উদ্বিগ্ন করেছে। বাংলাদেশের দেড় হাজারেরও বেশি নিবন্ধিত রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ২৫টিকে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবকে ‘সিন্ডিকেট’ বলে অভিহিত করে ইতোমধ্যে কয়েকদফায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন জনশক্তি ব্যবসায়ীরা।

ওই চিঠির প্রত্যুত্তরে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এমপি আইএলও-এর সনদ এবং বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ এর বরাত দিয়ে ১৮ জানুয়ারি ২০২২ পাল্টা চিঠিতে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার সীমিত সংখ্যক এজেন্সিকে কাজ দিতে পারে না। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, বৈধ লাইসেন্সধারী সব রিক্রুটিং এজেন্সিকে সমান সুযোগ দিতে হবে। চিঠিতে বলা হয়েছে— স্বচ্ছ, অনিয়মমুক্ত এবং নিরাপদ অভিবাসন চায় বাংলাদেশ। পাশাপাশি কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া ঠিক করার জন্য দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর এই অবস্থানকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি, সিন্ডিকেটের বদলে সবাইকে সমান সুযোগ দিয়ে স্বচ্ছ, অনিয়মমুক্ত এবং নিরাপদ অভিবাসনের কোনও বিকল্প নেই। তবে আমরা দেখছি, এই চিঠি দেওয়ার তিন মাস পার হয়ে গেলেও কর্মী পাঠানোর বিষয়ে কোনও অগ্রগতি নেই।

আমরা উদ্বেগের সঙ্গে বলতে চাই, শুধু এবারই নয় এর আগে ২০১৬ সালে এবং তার আগে ২০০৬ ও ২০০৭ সালে কলিং ভিসায় কর্মী পাঠানোর সময়ও নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া এলেই স্বচ্ছতার বদলে নানা অনিয়মরে ঘটনা ঘটে। আমরা মনে করি, মালয়েশিয়া অন্যান্য দেশ থেকে যেভাবে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কর্মী নেয়, বাংলাদেশ থেকেও সেভাবে নেওয়া উচিত। পাশাপাশি কর্মী নিয়োগের অনলাইন পদ্ধতি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব পদ্ধতি থাকা উচিত, যাতে কোথাও কোনও অনিয়ম বা সিন্ডিকেট হতে না পারে।

Related posts

‘যে বিজেপি করবে, সে সুবিধা পাবে না’, হুঁশিয়ারি TMC-র জেলা সভাপতির

News Desk

After Chrissy Teigen bullying scandal, Lindsay Lohan rises again

News Desk

‘এই বয়সে আমি স্বাবলম্বী, তাই অন্য নারীরা আমাকে দেখে উৎসাহিত হন’

News Desk

Leave a Comment