কক্সবাজার শহরের মোহাজের পাড়ার ট্যাংকি পাহাড়ের বসতি থেকে মো. ওসমান (৩০) নামের একজন ফল ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ঘরের বিছানা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হাবিবুল্লাহ ও ছৈয়দ নুর নামের দুই যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নিহত ওসমানের বিরুদ্ধে থানায় চুরি-ছিনতাইয়ের তিনটি মামলা আছে। কী কারণে ওসমানকে হত্যা করা হয়েছে, তার অনুসন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মদসহ মদ্যপানের সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ আলামত সংগ্রহ করেছে। মদ্যপানের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে ওসমানকে হত্যা করা হতে পারে।
নিহত ওসমানের ভাগনে মোহাম্মদ শামীম বলেন, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওসমান তাঁর দোকানের কর্মচারী ছৈয়দ নুর ও বন্ধু হাবিবুল্লাহ ওরফে সুন্দরসহ পাঁচ থেকে ছয়জনকে নিয়ে বাড়ির ছাদে আড্ডা দিয়েছিলেন। সেখানে সবাই হাসি ঠাট্টায় মত্ত ছিলেন। এসব দেখে তিনি ঘুমাতে যান। আজ সকালে ঘুম থেকে ওঠে তিনি ওসমানের কক্ষের লাইট জ্বলতে দেখে কক্ষের ভেতরে গিয়ে দেখেন, বিছানার ওপর ওসমানের গলাকাটা রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এক বছর ধরে ওসমান কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ভবনের সামনের সড়কে ফল বিক্রি করছিলেন। প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হতেন, ফিরতেন রাতে। বাড়িতে তিনি একাই থাকতেন। পাহাড়ের সরকারি ভূমিতে বাড়ি নির্মাণ করেন তিনি। নির্মাণাধীন একতলার বাড়িটির এখনো দরজা, জানালা লাগানো হয়নি। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত ওসমানের ঘরের ছাদে লোকজনের হইচই শুনতে পান প্রতিবেশীরা। ভোররাতের দিতে ওসমানকে গলা কেটে হত্যা করা হতে পারে বলে সন্দেহ স্থানীয় লোকজনের।
স্থানীয় লোকজন জানান, ১৯৯১ সালের এপ্রিলে ওসমানের পরিবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নাফ নদী অতিক্রম করে প্রথমে টেকনাফ আসেন। সেখান থেকে কক্সবাজার শহরের মোহাজের পাড়ার ট্যাংকি পাহাড়ে বসবাস শুরু করেন। কয়েক বছর আগেও ওসমান শহর এলাকায় চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধে যুক্ত ছিলেন। এক বছর আগে মায়ের মৃত্যু হলে চুরি-ছিনতাই ছেড়ে দিয়ে হাসপাতাল সড়কে ফলের ব্যবসা শুরু করেন ওসমান। তখন ছিনতাইকারীদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ শুরু হয়। বিয়ে করবেন বলে ওসমান পাহাড়ি একখণ্ড জমিতে আট মাস আগে একতলা পাকা বাড়ির নির্মাণকাজ শুরু করেন।