এই খবরদার খবরদার, আমরা আছি পাহারাদার।’ সমস্বরে এমন ধ্বনিতে নির্ঘুম সারা রাত কাটাচ্ছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার হাওরপাড়ের মানুষ। ডাকাতের উৎপাত বন্ধে হাওরপাড়ের মানুষ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন, আর ‘খবরদার খবরদার’ বলে তাঁদের চিৎকারে জলদস্যুরা ফিরে যাচ্ছে। প্রায় প্রতি রাত জলদস্যুর হানা দেওয়ার গুঞ্জন থাকলেও পাড়ায় পাড়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে রাত জেগে পাহারা দিয়ে ডাকাতদের প্রতিহত করা হচ্ছে।
হাওরপাড়ের বাসিন্দারা জানান, বন্যা পরিস্থিতির শুরু থেকেই জগন্নাথপুর উপজেলার হাওরগুলোতে নৌকাযোগে ডাকাতের উৎপাত বাড়তে থাকে। বেশ কয়েকটি এলাকায় নৌকা যোগে গরু চুরির ঘটনা ঘটে। গত কয়েক দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতদের উপস্থিতি টের পেয়ে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন জানমালের নিরাপত্তায় রাত জেগে দল বেঁধে পাহারার উদ্যোগ নেন। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা-পুলিশও নৌ-টহল চালায়। তবে পুলিশের নৌযান ও এ খাতে পরিবহন খরচ কম বরাদ্দ থাকায় নৌ-টহল কম হচ্ছে।
জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা কাদির মিয়া বলেন, ‘গত রাত ১২টার দিকে আমাদের গ্রামে নৌকাযোগে একদল ডাকাত হানা দেয়। টের পেয়ে আমরা গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে “খবরদার খবরদার” বলে চিৎকার দিয়ে তাদের প্রতিহত করি।’
চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহিদুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে হাওরপাড়ের গ্রামগুলোতে ডাকাতের উৎপাত বৃদ্ধি পায়। এবারও উৎপাত মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকাতের উৎপাত বন্ধে হাওরপাড়ের গ্রামসহ উপজেলাব্যাপী আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকায় এলাকায় রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’ তিনি বলেন, ‘ডাকাত পড়েছে বলে কিছু কিছু গুজবও ছড়িয়ে পড়ছে। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা এই সংকট কাটাতে কাজ করছি। নৌকা ও পরিবহন খরচ না থাকায় নৌ-টহল পর্যাপ্ত করা যাচ্ছে না।