Image default
অন্যান্য

জাল টাকার ব্যবসা, পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট

জাল টাকার ব্যবসার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের ট্রাফিক শাখায় কর্মরত এএসআই মো. আল আমিনকে প্রধান আসামি করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। মামলার দীর্ঘ ৯ মাস পর মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) এই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .

অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘ ৯ মাসেও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তিনি বহাল তবিয়তে চাকরিতে রয়েছেন। এ বিষয়ে কোনও পুলিশ কর্মকর্তাই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, এএসআই আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকার ব্যবসা করে আসছিলেন। এর মধ্যে তার সঙ্গে পরিচয় হয় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য তরিকুল ইসলামের ছেলে নগরীর পশ্চিম মুলাটোল মহল্লার বাসিন্দা সোহান ও তার বন্ধু নিউ ইঞ্জিনিয়ার পাড়ার ব্যবসায়ী হাজি রবিউল ইসলামের ছেলে জিসানের। গত বছরের ৫ জুলাই ওই পুলিশ কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে সোহান ও জিসানকে নগরীর সোডাপীর এলাকায় একটি হোটেলে ডাকেন। সেখানে আলোচনার একপর্যায়ে আল আমিন তার পকেট থেকে ৫০০ টাকার দুইটি বান্ডিল বের করে তাদের জানান, তার কাছে জাল টাকা আছে। এসব টাকা চালাতে পারলে অর্ধেক তাদের দেওয়া হবে। এতে দুই বন্ধু সম্মত না হলে অনেকটা জোর করেই পাঁচটি নোট তাদের হাতে দিয়ে বলেন প্রাথমিকভাবে এগুলো চালাও।

বাধ্য হয়ে তারা নোটগুলো নিয়ে মিঠাপুকুরে যান। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে ফেরার পথে দমদমা ব্রিজের কাছে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশির সময় তারা নোটগুলোসহ ধরা পড়েন। এরপর তাদেরকে আটক করে তাজহাট থানা পুলিশ হাজতে নিয়ে আসে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনা খুলে বলেন। মোবাইল ফোনে থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আল আমিনের কথাও বলিয়ে দেন। পুরো বিষয়টি তাজহাট থানা পুলিশ জানার পরও আল আমিনের নাম না দিয়ে তাজহাট থানার এসআই আশাদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। মামলায় সোহান ও জিসানকে আসামি করা হয়। পরে ওই দুই বন্ধু ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিতেও বিষয়টি খুলে বলেন।

এদিকে, ছেলে সোহানকে নির্যাতন ও এএসআই আল আমিন তাকে জাল টাকা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ঘটনা তদন্ত করে সুবিচারের দাবিতে রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য তরিকুল ইসলাম।

এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, কোনও পুলিশ কর্মকর্তা যদি জাল টাকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকেন- তাহলে বিষয়টি পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করবে। যেহেতু দুই জন আটক যুবক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে তার নাম বলেছে পুলিশের দায়িত্ব অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা। মামলার এজাহারে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়টি গোপন করাও ঠিক হয়নি।

সার্বিক বিষয় রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলীম বলেন, ‘এএসআই আল আমিন জাল টাকার ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। তদন্তে তার সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।’

তবে দীর্ঘ ৯ মাসেও কেন তাকে গ্রেফতার করা হলো না- এ বিষয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা কোনও কথা বলেননি। তবে তাজহাট থানার এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, আদালত চার্জশিট গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত হবে। তাকে আদালতে হাজির হতে হবে। তারপর সাক্ষ্য প্রমাণে তার ভবিষৎ নির্ধারণ হবে।

Related posts

নামিবিয়ার রূপকথার নেপথ্যে যে তিনজন

News Desk

ডলার–সংকটের মধ্যে কমল প্রবাসী আয়ও

News Desk

বলসোনারো নীরবতা ভাঙলেন, এল ক্ষমতা ছাড়ার ঘোষণাও

News Desk

Leave a Comment