জেলা পরিষদ নির্বাচনে আগামীকাল সোমবার ভোট। চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে প্রচারণার শেষ মুহূর্তে এসে অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। খুলনায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং ঝিনাইদহে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে কালো টাকার ব্যবহার, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (আনারস) ও খুলনা বিএমএর সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। তিনি বলেন, এতে ভিন্নমতের ভোটাররা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাই প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
গতকাল শনিবার দুপুরে বিএমএ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ বাহারুল এসব অভিযোগ করেন।
রিটার্নিং অফিসারের দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ হারুনুর রশিদ (মোটরসাইকেল), স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ বাহারুল (আনারস) ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা (চশমা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া ৯টি সাধারণ সদস্য পদে ২৮ জন ও তিনটি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ বাহারুল ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোনসহ ইলেকট্রিক ডিভাইস বন্ধ, বুথে ভোটার ছাড়া অন্য কারো প্রবেশ বন্ধ করার দাবি জানান। তিনি আরো বলেন, ‘তারা ভোটারদের সঙ্গে করে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাবে এবং তাদের উপস্থিতিতে ভোট প্রদান করতে হবে বলে হুমকি জারি রেখেছে। শক্তির এমন নগ্ন প্রয়োগ ও ভোটারদের হুমকি নির্বাচনের মাঠে এক ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ’
ভোট কিনছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী
ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চশমা প্রতীকের প্রার্থী কনক কান্তি দাসের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরণ।
গতকাল দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে শহীদুল ইসলাম লিখিত অভিযোগে বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী এম হারুন অর রশীদ ভোটারদের টাকা দিয়ে প্রভাবিত করে ভোট ক্রয় করছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ’
হোটেলে নিয়ে টাকা প্রদান
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে (ওয়ার্ড-১১) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আবু আহমেদ চৌধুরী (হাতি) এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শেখ টিপু চৌধুরী (তালা)।
আবু আহমেদ চৌধুরীর অভিযোগ, ১০ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদে একটি অভিজাত হোটেলে শেখ টিপু চৌধুরীর পক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী ৯ জন ইউপি সদস্যের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
জানতে চাইলে আবু আহমেদ চৌধুরী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভোটারদের প্রভাবিত করতে উপজেলা চেয়ারম্যান আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে টাকা দেওয়াসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ’
অভিযোগ অস্বীকার করে আবদুল জব্বার চৌধুরী গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টাকা-পয়সা লেনদেন করার প্রশ্নই আসে না। এত টাকা কি গাছে ধরে? গত নির্বাচনে আবু আহমেদ চৌধুরীর পক্ষে আমি মাঠে নামায় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দুর্নীতির কারণে এবার আমি শেখ টিপু চৌধুরীকে সমর্থন দিয়েছি। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। ’