Image default
অন্যান্য

ডলার–সংকটের মধ্যে কমল প্রবাসী আয়ও

সংকট কাটাতে ব্যাংকে বেঁধে দেওয়া হয়েছে ডলারের সর্বোচ্চ দাম। আর ডলারের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেওয়ার পর প্রবাসী আয়ে বড় পতন হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে যে আয় এসেছে, তা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

গত সেপ্টেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫৪ কোটি মার্কিন ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ডলার। ফলে আগের মাসের তুলনায় আয় কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। আর গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৭২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় প্রবাসী আয় কমেছে ১১ শতাংশ।

গত এপ্রিল থেকে দেশে ডলারের সংকট দেখা দেয়। এরপর ব্যাংকগুলো বেশি দাম দিয়ে ডলার সংগ্রহ শুরু করে। ফলে গত এপ্রিল, জুলাই ও আগস্টে ২০০ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল।

ডলার-সংকট প্রকট হওয়ায় গত মাসের শুরুতে দাম নির্ধারণের দায়িত্ব ব্যাংকগুলো তথা বাজারের ওপর ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) মিলে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে। প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম এখন ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দাম ৯৯ টাকা। এই দুই দামের গড় মূল্যের চেয়ে এক টাকা বেশি খরচ ধরা হয় আমদানির দায় নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ইউরোপের দেশগুলোতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দেওয়ায় সেখান থেকে প্রবাসী আয় আসা কমেছে। পাশাপাশি প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে ডলারের দুই ধরনের দাম বেঁধে দেওয়ার প্রভাবও পড়েছে প্রবাসী আয়ে। দেশে ডলারের প্রধান দুটি উৎস রপ্তানি ও প্রবাসী আয়। এ দুটি উৎসে প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক ধারা দেখা দেওয়ায় নতুন করে আবার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মনে।

এদিকে আমদানি খরচ বাড়ায় গত এপ্রিল থেকে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে ডলারের চাহিদা মিটছে না। এতে ডলারের সংকট তৈরি হয় এবং প্রতি ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। আমদানিতে ডলারের দাম দিতে হচ্ছে প্রায় ১০৫ টাকা। ডলার-সংকট মেটাতে গত সাত মাসে রিজার্ভ থেকে প্রায় ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে হয়েছে ৩ হাজার ৬৪০ কোটি বা ৩৬ বিলিয়ন ডলার। তবে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের পুরোটাই ব্যবহারযোগ্য নয়। কারণ, বিভিন্ন খাতে রিজার্ভের আট বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ফলে দেশে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৯০০ কোটি বা ২৯ বিলিয়ন ডলার।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হলে জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এ কারণেই মূলত এপ্রিল থেকে দেশে ডলারের সংকট দেখা দেয়। এতে বেড়ে যায় ডলারের দাম। সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলো বেশি দাম দিয়ে প্রবাসী আয় আনতে শুরু করেছিল। রপ্তানি আয়ও বেশি দামে কিনতে শুরু করে ব্যাংকগুলো। তারই একপর্যায়ে প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১১৫ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল, আর রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম উঠেছিল ১০৫ টাকা পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলো ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেয়। এরপর সেপ্টেম্বরে কমে গেছে প্রবাসী আয়। সঙ্গে কমেছে রপ্তানি আয়ও।

Related posts

Yellow Card scheme for adverse events does not suggest any new side effects of COVID-19 vaccines

News Desk

সোয়া কিলোমিটারে খরচ বাড়ছে ৭৫০০ কোটি টাকা

News Desk

দেশে গুমের ঘটনা নিয়ে অপপ্রচার চলানো হচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

News Desk

Leave a Comment