Image default
অন্যান্য

‘নৌকায় ভোট দেওয়ায়’ হিন্দু বাড়িতে হামলার অভিযোগ

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নৌকায় ভোট দেওয়ায় একটি হিন্দু পরিবারের বসতঘরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার কালিপুর ইউনিয়নের জঙ্গল গুনাগরী এলাকার নাথপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, নৌকায় ভোট দেওয়ায় তার ঘর ভাঙচুর করেছে পরাজিত প্রার্থীর লোকজন। তবে পুলিশ বলছে, জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তরা দাবি করেছেন, কোনো বসতঘর ভাঙচুর করা হয়নি। চলাচলের পথে সম্প্রতি যে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করা হয়েছে, সেটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে উপজেলা সদরে মানববন্ধন করেছেন নাথপাড়ার লোকজন। তারা নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন।

গত ১৫ জুন বাঁশখালী উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কালিপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন আইনজীবী আ ন ম শাহাদত আলম। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন মো. নোমান। অপর প্রার্থী বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান চৌধুরী। সাবেক চেয়ারম্যান আমিন বাঁশখালীতে ১১ জন পুড়িয়ে হত্যা মামলার আসামি।

ভুক্তভোগী নারায়ণ নাথ সমকালকে বলেন, সকাল ১০টার দিকে ১৪ থেকে ১৫ যুবক ঘরের সামনে আসেন। তাদের হাতে রামদা, শাবল ও কুড়াল ছিল। তারা এসেই ঘর ভাঙা শুরু করেন। এ সময় নৌকায় কেন ভোট দিয়েছি জানতে চান তারা। গালাগালও করেন। তাদের মধ্যে মাসুদ, আবু তালেব, আবু ছালেক, নুরুল আমিন ও সেলিমকে চিনতে পেরেছি। তারা আগেও নির্বাচনের পর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।

বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চলাচলের পথ নিয়ে পাশের এক ব্যক্তির সঙ্গে সুবল নাথ ও নারায়ণ নাথের বিরোধ চলছিল। চলাচলের পথেই কিছুদিন আগে নারায়ণ নাথ টিনের ঘর নির্মাণ করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন প্রতিপক্ষের লোকজন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের লোকজন ওই ঘরটি ভেঙে দিয়েছেন। এখানে নির্বাচন-সংক্রান্ত কোনো বিষয় আছে বলে মনে হয় না। যারা ঘর ভেঙেছেন তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জঙ্গল গুনাগরীর নাথপাড়া সড়কের মুখে নারায়ণ নাথের বাড়ি। এরপর রাখাল নাথ ও রেজাউল হক চৌধুরীর বাড়ি। এ দুই পরিবারকে নারায়ণ নাথের বাড়ির পাশে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। যে রাস্তা ব্যবহার করে দুই পরিবারের সদস্যরা মূল সড়কে ওঠেন, সেটি তাদের জমি বলে দাবি করছেন নারায়ণ নাথ। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। ৬ জুন চলাচলের রাস্তার ওপর ঘর নির্মাণ করেন নারায়ণ নাথ। এ ঘটনায় ওই দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন রেজাউল হক চৌধুরী। শুক্রবার সকালে তাদের পক্ষের লোকজন চলাচলের রাস্তার ওপর থাকা ঘরটি ভেঙে দিয়েছেন স্বীকার করে রেজাউল হক চৌধুরী বলেন, ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দিতে ভোটের বিষয়টি আনা হচ্ছে। ১৯৯২ সাল থেকে আমি পরিবার নিয়ে ওই এলাকায় বসবাস করছি। আমার আগে রাখাল নাথ বসবাস করছেন। দীর্ঘদিন আমাদের দুই পরিবার যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতাম সেটি নারায়ণের জমি বলে দাবি করছেন এখন। অথচ তিনি আমাদের পরে এখানে ভিটা করে থাকছেন। তার জমির পরিমাণ ১০ গন্ডা। চলাচলের রাস্তাটি তার জমির বাইরে। আমাদের লোকজন তার ঘরে হাত দেয়নি। শুধু চলাচলের রাস্তার ওপর যে ঘর তৈরি করেছেন, সেটা ভেঙে দিয়েছে।

নারায়ণ নাথ বলেন, জমি নিয়ে যে বিরোধ ছিল, তা মিটমাট হয়ে গেছে। নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণে আমাদের ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্যের জন্য আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নোমান ও বিএনপির প্রার্থী আমিনুর রহমান চৌধুরীকে ফোন দেওয়া হলেও তারা রিসিভড করেননি।

Related posts

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন থেকে চিঠি পেয়েছেন

News Desk

অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ না করার প্রবণতা বাড়ছে, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

News Desk

ইউক্রেন নিয়ে নতুন শান্তি আলোচনা, থাকবে তুরস্কও

News Desk

Leave a Comment