দেশের মোট নারী শ্রমশক্তির ৭৫ শতাংশ গ্রামে কাজ করে। আর কৃষি, বনায়ন ও মৎস্য খাতে কাজ করে নারীদের ৭২.৬ শতাংশ। কৃষিতে নারীর এই বিপুল অংশগ্রহণের পরও সরকারের দেওয়া কৃষক কার্ড পাচ্ছেন না নারীরা। মূলত জমির মালাকানা না থাকায় তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
আজ বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে গ্রামীণ নারী’। পরিবার ও সমাজে গ্রামীণ নারীর অবস্থানের মূল্যায়ন করার লক্ষ্যে ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালন করা হয়।
ইউএন ওম্যানের তথ্য বলছে, পর্যপ্ত সুযোগ ও প্রযুক্তিগত বাধা দূর করতে পারলে নারী শ্রমিকদের মাধ্যমে কৃষিতে উৎপাদনশীলতা ২.৫ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায়। নারীদের কৃষিতে সরাসরি নিয়োজিত করা গেলে পরিবারের অপুষ্টি কমার গতি বৃদ্ধি পায় ১২-১৭ শতাংশ।
তবে সমাজ ও পরিবারে নারীরা নানামুখী অবদান রাখা সত্ত্বেও নানা বৈষম্য ও কম মজুরি পাচ্ছে তাঁরা। বেশি করুণ অবস্থায় থাকেন গ্রামীণ নারী শ্রমিকরা।
উন্নয়নকর্মী ও এএলআরডির উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান বলেন, কৃষক হিসেবে নারীদের স্বীকৃতি না থাকায় চারটি ক্ষেত্রে তাঁরা প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রথমত. আর্থিক ও প্রযুক্তি, দ্বিতীয়ত. খাসজমি লিজ না পাওয়া, তৃতীয়ত. সরকারি প্রণোদনা এবং চতুর্থত. যথাযথ মজুরি না পাওয়া।
রওশন জাহানের পরামর্শ, এই বৈষম্য দূর করতে হলে বিদ্যমান মজুরি আইন বদলাতে হবে। কৃষি আইনে জমির মালিকানাসংক্রান্ত ধারা সংশোধন করতে হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপের (এলএফএস) তথ্য বলছে, দেশে মোট নারী শ্রমশক্তি আছে দুই কোটি। এর মধ্যে গ্রামেই রয়েছে দেড় কোটি নারী। অর্থাৎ মোট শ্রমশক্তির প্রায় ৭৫ শতাংশ গ্রামে কাজ করে।
নারী শ্রমিকদের বেশির ভাগই পারিবারিক কর্মী এবং বিনা মূলে শ্রম দিচ্ছে। আবার পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় নারীর পারিশ্রমিক কম। গত বছর কৃষিতে একজন পুরুষ শ্রমিকের গড় মজুরি ছিল ৪১৮ টাকা। নারী পেয়েছেন ৩১৬ টাকা। ঢাকা, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে নারীদের পারিশ্রমিক জাতীয় গড়ের চেয়ে একটু বেশি। কিন্তু বাকি জেলায় নারীদের পারিশ্রমিক ২০০-২২০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ।