রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের যে ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান, তা অবশ্যই ধরে রাখতে হবে এবং সুরক্ষিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এ ছাড়া আদালত আরও বলেছেন, কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষকে উদ্দেশ্য করে ঘৃণা প্রসূত বক্তব্য দেওয়া বন্ধে রাজ্যগুলোকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।
সম্প্রতি ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে ধরনের বক্তব্য দেওয়ার হয়েছে তা নিয়ে করা একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি ভারতীয় এক মুসলমান দেশটির সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। ওই ব্যক্তি তাঁর আবেদনে বলেছিলেন, সম্প্রতি মুসলমানদের বিরুদ্ধে যত্রতত্র ঘৃণা প্রসূত বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে রাজ্যগুলোকে ব্যবস্থা নিতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনের শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এম জোসেফ ও হৃশিকেশ রায়ের বেঞ্চে।
যে কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রসূত বক্তব্য বন্ধে পদক্ষেপ নিতে দুই রাজ্যর পুলিশ প্রধান ও দিল্লি পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন আদালত। যে বা যারা এই ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন তারা যে ধর্মেরই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, আদালত বলেছেন, কেউ ধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রসূত বক্তব্য দেওয়ার কারণ যারা হতাশ এবং রেগে আছেন তাদের একজন ওই মুসলিম, যিনি আদালতে আবেদন করেছেন। আদালত আরও বলেন, ‘এটা একবিংশ শতাব্দী। ….. ভারতের সংবিধানের ৫১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নতুন জ্ঞান, পূর্বনির্ধারিত মতামতের বিরুদ্ধে যায় এমন কিছুও আমাদের গ্রহণ করা উচিত। ধর্মের নামে এখন যা হচ্ছে বেদনাদায়ক।’
এ ছাড়া উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখন্ড প্রদেশে যারা এমন বক্তব্য দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এমনকি ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা না করলেও নিজ থেকে রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি হলে তা আদালত অবমাননা হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করেছেন আদালত।