মাগুরায় এক ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৪ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। উচ্চ আদালতের জামিন শেষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তাঁরা। আদালত জামিন বাতিল করে তাঁদের কারাগারে পাঠান।
গত আগস্টে মাগুরায় বিএনপির সমাবেশ চলার সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে মামলাটি করেন মাগুরার আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ মোল্লা।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কারাগারে পাঠানো নেতাদের মধ্যে মাগুরা পৌর বিএনপির সভাপতি মাসুদ হোসেন খান, যুবদলের সাবেক সভাপতি আমিনুর রহমান খান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুর রহীম, সাধারণ সম্পাদক এ এস এম আবু তাহের আছেন।
মামলার এজাহার ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ আগস্ট মাগুরার ভায়না এলাকায় বিএনপির সমাবেশ চলার সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৩৬ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং ৩০০–৪০০ জনকে আসামি করে ২৮ আগস্ট সদর থানায় বোমা হামলা, ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগে মামলা করেন আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ মোল্লা। ওই মামলায় নেতা-কর্মীরা উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পান। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, মামলার এজাহারভুক্ত ২৮ জন নেতা–কর্মী আজ বৃহস্পতিবার মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আদালত শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে জেলা যুবদলের সভাপতি ওয়াসিকুর রহমান কল্লোল ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. শামিমুজ্জামানসহ চারজনের জামিন মঞ্জুর করে বাকিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শাহেদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে মামলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের কারাগারে দেওয়া হয়েছে, সেটা একটা মিথ্যা মামলা। বাদী যে অভিযোগ করেছেন, সে ঘটনার সঙ্গে আসামিদের একজনও জড়িত নন। পুরো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন একটা মামলায় তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে মাগুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মো. মসিয়ার রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই দিন জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত একটি সমাবেশ চলছিল। সেখানে বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগ ও বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। একই দিনে শহরজুড়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেন তাঁরা। উল্টো তাঁদের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। সেই মামলায় তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এটা আসলে বিএনপির আন্দোলন বন্ধে সরকারের ষড়যন্ত্রের অংশ।