Image default
অন্যান্য

ময়মনসিংহে ৫০ গ্রামে পানিবন্দি ১৮ হাজার পরিবার

গত বর্ষায় গারো পাহাড়ের পাদদেশের সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবন হয়েছিল। চারটি পয়েন্টে বাঁধ ভাঙার কারণে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বছর পেরিয়ে সেই বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয় চলতি ২ জুন।

বর্ষার মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ তৈরির আয়োজন ভেসে যায় পানির তোড়ে। গত শুক্রবার পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যায় সামান্য বাঁধ, প্লাবিত হয় উপজেলাটির অন্তত ৫০টি গ্রাম। এতে পানিবন্দি জীবন যাপন করছেন অন্তত ১৮ হাজার পরিবার। সময় মতো বাঁধ নির্মিত হলে এমন দুর্যোগ দেখতে হতো না বলে দাবি স্থানীয়দের।

ভারতীয় সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া উপজেলাটি সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট উপজেলা দিয়ে বয়ে গেছে নেতাই নদী। নেতাই নদী অন্তত ২৫ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। এর মধ্যে ধোবাউড়া উপজেলার ঘোষগাঁও ইউনিয়নে গেল বছর অন্তত চারটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবন দেখা দেয়। এর মধ্যে এক বছর পেরিয়ে গেলেও ভাঙা বাঁধ সংস্কারে পদক্ষেপ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। দু’একটি স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ মাটি ফেলে ভরাট করে.

চলতি মাসের ২ তারিখে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন চারটি পয়েন্টে কাজ শুরু করে। বালু ফেলে গর্তগুলো ভরাটের চেষ্টা শুরু করে। গত শুক্রবার পাহাড়ি ঢলে আবার ভাসিয়ে নেয়ে সেই উদ্যোগ। বর্ষার মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মনে।

শুক্রবার থেকে পুরো উপজেলা নেতাই নদীর পানিতে প্লাবিত। এর মধ্যে ঘোষগাঁও, পোড়াকান্দুলিয়া, দক্ষিণমাইজপাড়া, ও গামারিতলা ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামগুলোতে সুপেয় পানি, খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি গ্রামের মানুষগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ধোবাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. ইশতিয়াক হোসাইন শনিবার বিকেলে সমকালকে বলেন, চারটি ইউনিয়নে অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৭ হাজার ৫০০ পরিবার পানিবন্দি জীবন কাটাচ্ছে। ত্রাণ হিসেবে ১০ টন চাল ও এক লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে আজ (শনিবার)।

দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের খাগগড়া গ্রামে নিতাই নদীর ভাঙনে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকশেদ আলীর বাড়ি পানির তোড়ে ভেঙে গেছে, পাশাপাশি এই বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বীর নিবাসটিও ভেসে গেছে পানিতে। যা প্রায় ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছিল। বেড়িবাঁধের পাশে বাড়িটিতে ইতোমধ্যে টাইলসের কাজ চলছিল বলে জানিয়েছেন পিআইও।

পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের বতিহালা গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, বন্যার পানিতে আমরা গৃহবন্দি হয়ে আছি। ঘরে চুলায় পানি উঠায় রান্না করা য়ায না, চরম দুর্ভোগে আছি।’ বেদগাছিয়া গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, আমরা যে কি দুর্ভোগে আছি এটা বলার কোনো ভাষা নেই, ঘরের মধ্যে পানি। কেউ খোঁজ নেয় না।’

ঘোষগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, যখন বর্ষাকাল হয় তখনই পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ ধরে। অল্প কাজ করে বলবে ভেঙে চলে গেছে। পুরো লুটপাট করে টাকা খায়। এটা হলো তাদের চরিত্র। মাটি দিয়ে বাঁধার কথা, বেঁধেছে বালু দিয়ে। যে জায়গা দিয়ে বাঁধার কথা সেখান দিয়ে বাঁধেনি। সময় মতো যদি বাঁধটি হতো তাহলে দুর্যোগ হতো না, ঘরবাড়িগুলো নষ্ট হতো না। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দেন তিনি।

Related posts

মধুমতি ব্যাংকে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে বিজ্ঞপ্তি

News Desk

অভিজ্ঞতা ছাড়াই প্রাণ গ্রুপে চাকরির সুযোগ

News Desk

কক্সবাজার সৈকতে আবার ভেসে আসছে প্রচুর মরা জেলি ফিশ

News Desk

Leave a Comment