বাংলাদেশের পর্যটন স্থানসমূহ
বাংলাদেশে এমন কিছু পর্যটন স্থান রয়েছে যা আপনার মনে গভীর প্রভাব ফেলবে তাদের অতুলনীয় সৌন্দর্যের জন্য। সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেজা সৈকত থেকে প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান, মনোমুগ্ধকর জাতীয় উদ্যান পর্যন্ত, বাংলাদেশের বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থান আপনাকে স্মৃতি দিয়ে ভরিয়ে তুলবে যা আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এখানে খুলনা ও সিলেটের মতো প্রাণবন্ত শহরগুলো রয়েছে, যা আপনাকে ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে অতীতে নিয়ে যাবে।
ঢাকায় ঘুরতে পারেন, যেখানে আধুনিক উঁচু ভবনগুলো প্রাচীন মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান, যার বিশাল অবিচ্ছিন্ন সমুদ্র সৈকত প্রায় একশ বিশ কিলোমিটার দীর্ঘ। বাগেরহাটে যেতে পারেন, যা একটি ঐতিহাসিক শহর এবং প্রাচীন রহস্য উদ্ঘাটন করে।
শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর স্থানগুলোর একটি, যেখানে বিস্তৃত চা বাগান এবং ঝর্ণার অপূর্ব দৃশ্য রয়েছে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ও খেরুয়া মসজিদেও প্রার্থনার জন্য যেতে পারেন। এই জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলোতে ঘুরে এসে আপনার ছুটির সময়কে স্মরণীয় করে তুলুন, যা আপনাকে চমৎকার সৌন্দর্য, মনোমুগ্ধকর স্থাপত্য এবং জাদুকরি আবহের সাথে স্বাগত জানাবে।
০১: রাজশাহী
রাজশাহী পদ্মা নদীর সমতলে অবস্থিত একটি প্রাণবন্ত শহর যা উত্তরে, পশ্চিমে এবং পূর্বে পবা উপজেলার দ্বারা বেষ্টিত। এটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত এবং চারপাশে কাথাকালি ও নওহাটা শহরগুলি দ্বারা পরিবেষ্টিত।
রাজশাহী তার বিশ্বমানের স্থাপত্য, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং সংকীর্ণ পাথরের রাস্তার মাধ্যমে ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে। শহরের রঙিন ভবন, সবুজ উদ্যান, মনোরম বাগান এবং দুর্গসদৃশ স্থাপনা রাজশাহীকে একটি রূপকথার গল্পের মতো করে তোলে।
রাজশাহীর সেরা স্থাপনাগুলোর মধ্যে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর উল্লেখযোগ্য, যেখানে বহু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও স্থাপত্য প্রদর্শনী রয়েছে। পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পরিদর্শন করতে পারেন এবং পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে ভ্রমণের মাধ্যমে ইতিহাসের এক অনন্য অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। ধর্মপ্রাণ দর্শনার্থীরা পুঠিয়া মন্দির কমপ্লেক্সে গিয়ে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি অনুভব করতে পারেন।
রাজশাহীর শীতল আবহাওয়ার কারণে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে শীতল অঞ্চল, যেখানে গড় তাপমাত্রা প্রায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভ্রমণের জন্য অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সময়টি সবচেয়ে ভালো।
০২: সিলেট
সিলেট বাংলাদেশে একটি সুন্দর শহর, যা উত্তর-পূর্ব বাংলার সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সিলেট জেলার প্রধান সদর দপ্তর।
এটি প্রকৃতির এক পরিপূর্ণ উপহার, যেখানে মনোরম পরিবেশ, পাহাড়ি গ্রুপের ভিউ এবং রঙিন কাঠের ঘরগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবে। গাছ-শোভিত পার্ক এবং পাথরের রাস্তা সমৃদ্ধ এই শহরটি একটি রূপকথার দৃশ্যপট মনে হয়।
সিলেটের উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে মণিপুরী রাজবাড়ি এবং হাকালুকি হাওর, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির জীববৈচিত্র্য দেখা যায়। নিরন্তর আনন্দের জন্য ড্রিমল্যান্ড পার্কে ঘুরতে পারেন, যেখানে অসাধারণ রাইডের সুবিধা আছে।
সিলেট ভ্রমণের সেরা ক্রিয়াকলাপগুলোর মধ্যে রয়েছে নৌকাভ্রমণ, স্থানীয় দোকানে কেনাকাটা এবং স্থানীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণ। সুরমা নদীর তীরে ক্যাম্পিং, শাহ সৈয়দ নাসির উদ্দিনের মাজার পরিদর্শন এবং রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টে ট্রিপও বেশ আকর্ষণীয়।
সিলেটের আবহাওয়া সাধারণত উষ্ণ ও আর্দ্র, বছরে ২৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস গড় তাপমাত্রা এবং ১৯৮.৭ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়।
০৩: ঢাকা
ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শহর, যা বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর পাশে অবস্থিত। এটি কেন্দ্রীয় বাংলাদেশে গঙ্গা ডেলটার নিচু অঞ্চলে অবস্থিত। ঢাকা বাংলাদেশের মেগাসিটি, যেখানে সবুজ উদ্যান, মনোরম জাদুঘর এবং প্রাচীন লাল-ইটের স্থাপত্য রয়েছে। আধুনিক উঁচু ভবনগুলো পুরনো মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে এই শহর একটি আকর্ষণীয় রূপ ধারণ করেছে।
ঢাকায় অসংখ্য দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা আপনার সফরে আপনাকে বিভিন্ন বিকল্পের মধ্যে বিভ্রান্ত করে তুলতে পারে। মুঘল জীবনযাত্রার একটি ঝলক পেতে আহসান মঞ্জিল জাদুঘর এবং স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত লালবাগ কেল্লা দেখতে পারেন। ঢাকেশ্বরী মন্দির, খান মুহাম্মদ মির্জা মসজিদ এবং বায়তুল মোকাররম শহরের বিখ্যাত ধর্মীয় আকর্ষণ।
ঢাকায় একটি আদর্শ অভিজ্ঞতা লাভের জন্য কিছু উত্তম ক্রিয়াকলাপগুলোর মধ্যে রয়েছে বুড়িগঙ্গায় নৌকাভ্রমণ, গুলশান লেক পার্কে হাঁটা এবং নন্দন পার্কে মজার রাইডগুলি উপভোগ করা। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন করে ঢাকার সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারেন।
ঢাকায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া রয়েছে, যেখানে তাপমাত্রা ৯৩°F থেকে ৫৭°F পর্যন্ত পরিবর্তিত হয় এবং খুব কমই ৯৮°F এর উপরে বা ৫২°F এর নিচে থাকে।
০৪: খুলনা
বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর খুলনা, যা দেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত। এটি রূপসা নদীর তীরে এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলা বন্দরের মাধ্যমে সংযুক্ত।
পর্যটকদের কাছে খুলনা অত্যন্ত জনপ্রিয় এর সবুজ গাছপালা, ঐতিহ্যবাহী শপহাউজ এবং আধুনিক স্কাইলাইনের জন্য। এটি বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় শহর, যেখানে সমকালীন শিল্পকেন্দ্র, ধর্মীয় স্থান এবং দোকানপাটে ভরপুর। এখানে শৈলশ্রেণি থেকে শুরু করে সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত অসাধারণ দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।
খুলনার অসংখ্য দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা আপনার ভ্রমণ তালিকায় অবশ্যই থাকা উচিত। এখানে আপনি শৈত গম্বুজ মসজিদ, রন জয়পুর মসজিদ, এবং খান জাহান আলীর মাজার পরিদর্শন করতে পারেন। শহরের সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে জানতে আপনি বাগেরহাট জাদুঘরও ঘুরে আসতে পারেন।
খুলনায় দেখতে চাইলে, নয় গম্বুজ মসজিদের স্থাপত্যকলা উপভোগ করতে পারেন এবং উচ্চ আদালত ভবনে আইনি প্রক্রিয়া কেমন হয় তা দেখতে পারেন। এছাড়াও, আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন সম্পর্কে কুঠিবাড়ি ভ্রমণ করে জানতে পারেন।
খুলনার আবহাওয়া মৃদু এবং আর্দ্র, এবং এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। জুন মাসে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়, গড়ে ৩৬৮ মিমি।
০৫: চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম একটি আর্থিক কেন্দ্র এবং দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের প্রধান উপকূলীয় শহর। এটি বঙ্গোপসাগর এবং চট্টগ্রাম পাহাড়ি এলাকার মধ্যে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত।
০৬: কক্সবাজার
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থানের মধ্যে কক্সবাজার অন্যতম, যা বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রসৈকতের পাশেই অবস্থিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ একটানা সমুদ্রসৈকত হিসেবে পরিচিত, যা একশ বিশ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।
এখানে সোনালী বালুকাবেলা, সার্ফিংয়ের ঢেউ, সুউচ্চ পর্বত, বিরল শঙ্খ, জলপ্রপাত, প্যাগোডা এবং পার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আগমেদা খিয়াং, যা একটি বিশাল বৌদ্ধ বিহার, কক্সবাজারের প্রধান আকর্ষণ এবং এখানে প্রাচীন পাণ্ডুলিপি এবং বড় ব্রোঞ্জের বুদ্ধ মূর্তি রয়েছে।
অবস্থান: বঙ্গোপসাগর, কক্সবাজার, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: রেস্তোরাঁ, হোটেল, বিহার, জলপ্রপাত, প্যাগোডা।
০৭: সুন্দরবন
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিস্তৃত। এটি একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। শত শত খাল ও খাঁড়ি সুন্দরবনে ছড়িয়ে রয়েছে, যেখানে আপনি সকালের নৌকা ভ্রমণ করতে পারেন।
এখানে একটি সুন্দর সৈকত রয়েছে যেখানে আপনি রোদে গা শুষে নিতে পারেন এবং জলক্রীড়া উপভোগ করতে পারেন। এছাড়াও, বিভিন্ন বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রয়েছে যেখানে আপনি হরিণ, বানর, বাঘ এবং অন্যান্য প্রাণী দেখতে পারেন।
অবস্থান: খুলনা, খুলনা শহর, ৯১০০, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ইরাবতী ডলফিন, জামতলা বিচ, ওয়াচটাওয়ার
০৮: শ্রীমঙ্গল
শ্রীমঙ্গলকে বাংলাদেশের চা রাজধানী বলা হয়, কারণ এটি বিশ্বের মোট চা উৎপাদনের ৩% যোগান দেয়। এটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর স্থান, যা পাহাড় ও ঘন বনভূমি, উপজাতীয় গ্রাম এবং অপরিসীম চা বাগানে পরিপূর্ণ।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইকো-ট্যুরিজম গন্তব্য, যেখানে অক্ষত প্রাণীজগৎ এবং উচ্চতম জলপ্রপাত রয়েছে। এখানে চা বাগানে সাইকেল চালানো বা কাছের গ্রাম ও বনাঞ্চল ঘুরে দেখাও চমৎকার অভিজ্ঞতা।
অবস্থান: সিলেট বিভাগ, উত্তর-পূর্ব, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: চা বাগান, উপজাতীয় গ্রাম, হাইকিং ট্রেইল, বনাঞ্চল
০৯: লালবাগ কেল্লা
এটি সপ্তদশ শতাব্দীর অসম্পূর্ণ মুঘল দুর্গ কমপ্লেক্স, যা বাংলাদেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়। দুর্গটি বুড়িগঙ্গা নদীর সামনে দাঁড়িয়ে আছে, এবং মুঘল সম্রাটের পুত্র এর নির্মাণ শুরু করেছিলেন। তবে তার মৃত্যুর পর পরবর্তী শাসক পারিবারিক বিপর্যয়ের কারণে নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারেননি।
লালবাগ কেল্লার সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক স্থান হল পারি বিবির সমাধি, যেখানে ফুলের স্থাপত্যশিল্পের নিদর্শন রয়েছে। দুর্গের ভেতরে সুন্দর বাগান এবং সবুজ প্রান্তর রয়েছে, যা রঙিন ফুল এবং সবুজ ক্ষেত্র দিয়ে সাজানো।
অবস্থান: লালবাগ রোড, ঢাকা শহর ১২১১ বাংলাদেশ
হাইলাইটস: পারি বিবির সমাধি, বাগান, সবুজ প্রান্তর, মসজিদ
১০: রাঙামাটি
কাপ্তাই লেকের পাশে অবস্থিত রাঙামাটি বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর বাসস্থান। এটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র যা সবুজ পাহাড় এবং উঁচু-নিচু প্রান্তর দ্বারা অলঙ্কৃত, এবং এটি পৃথিবীতে একটি আশ্চর্যের মতো মনে হয়।
রাঙামাটির সবচেয়ে জনপ্রিয় আকর্ষণগুলি হল ঝুলন্ত সেতু, রাঙামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট এবং রাজবন বিহার প্যাগোডা। এখানে আপনি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মুরং, তঞ্চঙ্গ্যা, বোম, খুমি, চাক, পাংখোয়া, খেয়াং এবং লুসাইসহ আদিবাসী গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
অবস্থান: লালবাগ রোড, ঢাকা শহর ১২১১ বাংলাদেশ
হাইলাইটস: আদিবাসী গ্রাম, ঝুলন্ত সেতু, রাঙামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট
১১: বান্দরবান
বান্দরবান বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর স্থান, যা তার মনোরম সবুজ প্রকৃতি এবং বিরল ঝরনা জন্য বিখ্যাত। এর সুন্দর হ্রদ এবং অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য দর্শকদের শান্তি এনে দেয়।
বাংলাদেশের বৃহত্তম বৌদ্ধ মন্দির বুদ্ধ ধাতু জাতি বান্দরবান জেলার অন্তর্গত। বগা লেক বান্দরবানের সর্বোচ্চ প্রাকৃতিক হ্রদ, যা প্রকৃতি প্রেমীদের অত্যন্ত আকর্ষণ করে।
হাইলাইটস: বুদ্ধ ধাতু জাতি, বগা লেক
১২: সেন্ট মার্টিন
সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত এবং দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। স্থানীয় জনগণ এই ছোট্ট দ্বীপটিকে “নারিকেল জিঞ্জিরা” বলে, কারণ এখানে প্রচুর পরিমাণে নারিকেল জন্মায়। এটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর পর্যটন স্থান, যেখানে কিছু চমৎকার সৈকত রয়েছে যেখানে আপনি সমুদ্রক্রীড়া, বনফায়ার এবং সৈকত পার্টি উপভোগ করতে পারেন।
এছাড়াও, আপনি স্কুবা ডাইভিং করতে পারেন বা একটি স্পিড বোট ভাড়া নিয়ে দ্বীপের চারপাশে ঘুরতে পারেন। এখানে অনেক রেস্টুরেন্ট এবং সৈকত ক্যাফে রয়েছে, যেখানে আপনি স্থানীয় তাজা সামুদ্রিক খাবার উপভোগ করতে পারেন।
অবস্থান: সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ, কক্সবাজার, ৯৭১৫০ বাংলাদেশ
হাইলাইটস: সমুদ্রক্রীড়া, বনফায়ার এবং সৈকত পার্টি
১৩: পাহাড়পুর
পাহাড়পুর বাংলাদেশে একটি বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, যেখানে বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এটি সপ্তম শতাব্দী থেকে মহাযান বৌদ্ধ ধর্মের উত্থানের প্রমাণ প্রদান করে।
এই প্রাচীন স্থাপনা প্রায় বারোশ বছর পুরোনো, এবং এর গঠন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি বজ্রযান বৌদ্ধ ধর্মের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যা তিব্বতে এখনও আধিপত্য বিস্তারকারী একটি ধর্মীয় শাখা।
অবস্থান: ময়মনসিংহ জেলা, ঢাকা বিভাগ, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: সোমপুর মহাবিহার মঠ, বজ্রযান বৌদ্ধ ধর্ম
১৪: কুয়াকাটা
কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত একটি সুন্দর সমুদ্রসৈকত, যেখানে আপনি সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই উপভোগ করতে পারেন। এটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর স্থান, যেখানে বিস্তৃত বালুকাবেলা রয়েছে এবং যেখানে আপনি বালি, সমুদ্রের ঢেউ এবং সূর্যের আলোর সাথে মিশে যেতে পারেন।
সমুদ্রসৈকতটি উনিশ মাইল দীর্ঘ এবং চার মাইল প্রশস্ত এবং এটি সুন্দরবন অরণ্যের অংশ। গঙ্গামাটি সংরক্ষিত বন একটি ম্যানগ্রোভ বন, যেখানে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী এবং গাছপালা রয়েছে। মাঘী পূর্ণিমা এবং রুশ পূর্ণিমার মতো উৎসবে অনেক হিন্দু ভক্ত এই সৈকতে পবিত্র স্নান করে।
অবস্থান: পটুয়াখালী, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: গঙ্গামাটি সংরক্ষিত বন, ডাইভিং, সূর্যাস্ত, সূর্যোদয়
১৫: আমিয়াখুম জলপ্রপাত
পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত আমিয়াখুম জলপ্রপাত প্রকৃতিপ্রেমী এবং শান্তিপ্রিয় মানুষদের জন্য একটি মনোমুগ্ধকর স্থান। প্রকৃতির মনোরম দৃশ্যের মাঝে এই মনোরম ঝরনাটি একটি ছোট উচ্চতা থেকে ঝরে পড়ে, যা ঠাণ্ডা পানিতে গা ভেজানোর জন্য একটি আদর্শ স্থান।
পর্যটকরা এখানে সাঁতার ও অন্যান্য জলক্রীড়া উপভোগ করতে পারেন এবং এর সৌন্দর্য ফটোগ্রাফির জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়।
হাইলাইটস: অগভীর পুল, বনের মধ্যে লুকানো, নিরাপদ স্থান, পিকনিকের জন্য আদর্শ, ফটোগ্রাফারদের জন্য আদর্শ
১৬: বাগেরহাট
যদি আপনি বাংলাদেশের সেরা পর্যটন স্থানগুলির সন্ধান করেন, তবে অবশ্যই বাগেরহাটে যেতে পারেন, যা একটি ঐতিহাসিক শহর যেখানে আপনি অতীতের রহস্য উন্মোচন করতে পারেন। এটি পঞ্চদশ শতাব্দীতে সুফি সাধক ও শাসক খান জাহান আলী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরে উনিশ শতকে বনের ঘেরাটোপ থেকে এটি উন্মোচিত হয়।
বাংলাদেশের অন্যতম সেরা স্থান হিসেবে বিবেচিত বাগেরহাটে প্রায় পঞ্চাশটি মধ্যযুগীয় মসজিদ, সমাধি এবং একটি মুক্তমেলা এশিয়ান মুসলিম স্থাপত্য ঐতিহ্য রয়েছে। এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় আকর্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চন্দ্র মহল ইকো পার্ক, যা প্রায় ত্রিশ একর জমির উপর নির্মিত এবং এর স্থাপত্য সৌন্দর্যের জন্য খ্যাত।
অবস্থান: খুলনা বিভাগ, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: চন্দ্র মহল ইকো পার্ক, হযরত খান জাহানের মাজার
১৭: সোনারগাঁও
সোনারগাঁও বাংলাদেশের প্রধান অভ্যন্তরীণ বন্দর এবং বাণিজ্য কেন্দ্র যেখানে আপনি আশ্চর্যজনক ঐতিহাসিক স্থানগুলি দেখতে পাবেন যা মানব ইতিহাসের গল্প বলে। এখানে প্রধান আকর্ষণ পনাম নগর, একটি পরিত্যক্ত বাণিজ্যিক শহর যেখানে এক রাস্তার উপর গঠিত বাহান্নটি বাড়ি রয়েছে।
আপনি সোনারগাঁও লোকশিল্প ও কারুশিল্প জাদুঘরও পরিদর্শন করতে পারেন, যেখানে সোনারগাঁও-এর কাপড় চমৎকারভাবে প্রদর্শিত হয়েছে। আপনি যদি চিরন্তন প্রশান্তির সন্ধান করেন, তবে পনেরো শতকের গোলাদি মসজিদ দেখতে পারেন, যা এই এলাকার একমাত্র মধ্যযুগীয় স্থাপনা।
অবস্থান: ঢাকা থেকে ২৯ কিমি দূরে, ঢাকা সিটি বাংলাদেশ
হাইলাইটস: গোলাদি মসজিদ, লোকশিল্প ও কারুশিল্প জাদুঘর
১৮: কুমিল্লা
এর ঔপনিবেশিক স্থাপত্য, মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং রসমালাই মিষ্টির জন্য কুমিল্লা বাংলাদেশে পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয়। বিখ্যাত ইতিহাসবিদদের মতে, এখানে সপ্তম শতাব্দী থেকে অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত বৌদ্ধ রাজবংশ শাসন করেছিল।
এই জেলা খাদি বা খদ্দর কাপড় এবং মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত। সপ্তম শতাব্দীর শালবন বৌদ্ধ বিহার এই জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় আকর্ষণ, যেখানে সন্ন্যাসীদের জন্য একশো পনেরটি কোষ রয়েছে। এছাড়াও আপনি ময়নামতি যুদ্ধ সমাধিস্থল দেখতে পারেন, যা চল্লিশ হাজার কমনওয়েলথ সৈনিকের স্মরণে নির্মিত হয়েছিল যারা বার্মার যুদ্ধে নিহত হন।
হাইলাইটস: ময়নামতি যুদ্ধ সমাধিস্থল, শালবন বৌদ্ধ বিহার
১৯: বগুড়া
বগুড়া বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি জেলা, যেখানে অনেক মাঝারি ও ছোট শিল্প রয়েছে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর পর্যটন স্থান, যেখানে প্রাচীন বৌদ্ধ স্তূপ, মুসলিম সুলতানদের প্রাচীন প্রাসাদ, এবং হিন্দু মন্দির রয়েছে।
এটি একটি প্রাচীন শহরের অবশিষ্টাংশ রয়েছে যা প্রাচীনকালে পৌন্ড্রবর্ধনপুর বা পুন্ড্রনগর নামে পরিচিত ছিল। পঞ্চ পীর মাজার, গোকুল মেধ, যোগীর ভবন, এবং খেরুয়া মসজিদ বগুড়ার জনপ্রিয় আকর্ষণ।
হাইলাইটস: মুহাম্মদ আলী প্রাসাদ জাদুঘর, হিন্দু মন্দির
২০: গৌড়
এটি একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত শহর যা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত। এটি একসময় বাংলা অঞ্চলের রাজধানী ছিল এবং এটি বাংলা ইতিহাসের ধনসম্পদ আবিষ্কারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
বারো থেকে চৌদ্দ শতক পর্যন্ত এটি একটি সমৃদ্ধিশালী শহর ছিল, তবে পরবর্তীতে কলেরার কারণে এর সমস্ত শ্রী নষ্ট হয়। এখানে গেলে আপনি আম বাগানের পিছনে লুকানো কিছু সুন্দর মসজিদ দেখতে পাবেন। বরদোয়ারি মসজিদ এখানকার প্রধান আকর্ষণ, যা একটি বৃহৎ আয়তাকার কাঠামো যা ইট এবং কাঠ দিয়ে তৈরি।
হাইলাইটস: দাখিল দরজা, ফিরোজ মিনার, বরদোয়ারি মসজিদ
২১: বরিশাল
বরিশাল বাংলাদেশের ভাসমান শহর হিসেবে পরিচিত, যা গঙ্গার মোহনায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পর্যটন স্থান, যা ভাসমান বাজারগুলোর জন্য বিখ্যাত, যা আপনাকে ভেনিসের অনুভূতি প্রদান করে। এলাকাটি মনোরম নদী, খাল বিল, সুন্দর বন এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর।
বর্ষায় খালগুলি নদীতে পরিণত হয়, এবং আপনি ভাসমান পেয়ারা বাজার থেকে আপনার প্রিয় ফল কিনতে পারেন। ব্যাকওয়াটারের সবচেয়ে সুন্দর এবং সহজলভ্য অংশগুলি হলো কুড়িয়ানা উপজেলা এবং আটঘর।
হাইলাইটস: ভাসমান বাজার, স্কুল, গ্রাম
২২: পুঠিয়া
বাংলাদেশের সেরা স্থানগুলির সন্ধান শেষ করতে পুঠিয়ায় যান, যা রাজশাহী জেলার একটি সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ উপজেলা। এটি অগণিত ঐতিহাসিক হিন্দু ধর্মীয় স্থানগুলির জন্য বিখ্যাত। এখানে বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সুন্দর হিন্দু মন্দির শিব মন্দির অবস্থিত।
এছাড়াও এখানে অনেক সুন্দরভাবে অলংকৃত মন্দির রয়েছে যা সোনালী এবং টেরাকোটা প্লাস্টার দিয়ে তৈরি যা মহাকাব্যিক হিন্দু কাহিনী বর্ণনা করে। এছাড়াও আপনি পুঠিয়া প্রাসাদ পরিদর্শন করতে পারেন যা ইনডো-সারাসেনিক রিভাইভাল স্থাপত্যে নির্মিত এবং পুঠিয়া রাজ পরিবারগুলোর বাসস্থান ছিল।
হাইলাইটস: পুঠিয়া প্রাসাদ, শিব মন্দির
২৩: বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন
শের-ই-বাংলা নগরে অবস্থিত, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন এমন একটি স্থান যেখানে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আইন তৈরি এবং অনুমোদিত হয়। এটি একটি স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন যা আমেরিকান স্থপতি লুই আই. খান দ্বারা ডিজাইন ও কল্পনা করা হয়েছে।
ভবনটির অভ্যন্তর একটি আধুনিক ক্যাথেড্রালের মতো দেখতে যেখানে বিভিন্ন জ্যামিতিক আকারের উপাদান রয়েছে এবং জানালা থেকে আয়তক্ষেত্র ও বৃত্তাকার আলোর মাধ্যমে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ করে। পুরো কমপ্লেক্সটি তিনটি অংশে বিভক্ত – প্রেসিডেন্টিয়াল প্লাজা, সাউথ প্লাজা এবং মেইন প্লাজা। মূল ভবনে প্রবেশাধিকার শুধুমাত্র সংসদ সদস্য এবং অনুমোদিত সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত।
অবস্থান: শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা শহর বাংলাদেশ
হাইলাইটস: প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, সংসদ সদস্যদের হোস্টেল, লেক
২৪: আহসান মঞ্জিল জাদুঘর
ঢাকার নবাবদের আসন হিসেবে পরিচিত আহসান মঞ্জিল জাদুঘর বাংলাদেশের অন্যতম সেরা স্থান যেখানে আপনি ঢাকার সমৃদ্ধ ইতিহাসের একটি ঝলক দেখতে পারেন। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এবং এটি ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবারের আবাসস্থল ছিল।
ব্রিটিশ শাসন শেষে প্রাসাদটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, এবং সরকার এটিকে জনগণের জন্য একটি জাদুঘর হিসাবে খুলে দেয়। জাদুঘরের ভিতরে দর্শনার্থীরা ঢাকার নবাবদের সংস্কৃতি এবং জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে পারেন। জাদুঘরের ভেতরে একটি বিশাল নৃত্যশালা রয়েছে যেখানে অনেক সুন্দর চিত্রকর্ম এবং শিল্পকর্ম রয়েছে।
অবস্থান: পুরান ঢাকা, ঢাকা শহর, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: চিত্রকর্ম, শিল্পকর্ম
২৫: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
যদি আপনি মুক্তিযুদ্ধ এবং মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সম্পর্কে জানতে চান তবে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিদর্শন করুন। এতে চারটি গ্যালারি রয়েছে যেখানে বাংলাদেশের মানুষের জাতিগত পরিচয় প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম প্রদর্শিত হয়েছে।
জাদুঘরটি একটি তিনতলা ভবনে অবস্থিত যেখানে ছয়টি গ্যালারিতে বিভিন্ন প্রদর্শনী রয়েছে। গ্যালারিগুলিতে মুক্তিযোদ্ধাদের এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ব্যক্তিগত সামগ্রী প্রদর্শিত হয়েছে।
অবস্থান: শের-ই-বাংলা নগর, সিভিক সেন্টার, আগারগাঁও, ঢাকা
হাইলাইটস: দুর্ল
২৬: রমনা পার্ক
আপনি যদি প্রকৃতির সান্নিধ্যে ফিরে আসার জন্য একটি আইকনিক সবুজ স্থান খুঁজছেন, তবে রমনা পার্কে অবশ্যই যেতে পারেন। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর স্থানগুলোর একটি, প্রায় আটষট্টি একর জুড়ে বিস্তৃত এবং আপনি এখানে অসংখ্য ফুটন্ত গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে পারেন।
পার্কটিতে সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা পথ রয়েছে যা হাঁটাচলা, প্র্যাম, এবং জগিং-এর জন্য উপযোগী। এছাড়াও এখানে বসার জন্য বেঞ্চ রয়েছে যেখানে বসে আপনি প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। এখানে অনেক খাবারের দোকানও পাবেন যা মুখরোচক খাবার পরিবেশন করে।
অবস্থান: মাওলানা ভাসানী রোড, ঢাকা সিটি ১২১৭, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষিত পথ, লেক
২৭: বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
এটি বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ যা ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং এর আইকনিক ডিজাইনের মাধ্যমে মুঘল স্থাপত্যের ঐতিহ্যবাহী নীতিগুলি সংরক্ষণ করে। এটি দেশের সবচেয়ে বড় মসজিদ, যেখানে একসাথে প্রায় ষাট হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারে।
ভবনটি নিরানব্বই ফুট উঁচু এবং আটতলা বিশিষ্ট, যেখানে মূল নামাজের হল ২৬,৫১৭ বর্গফুট। এতে মুঘল-শৈলীর বাগান রয়েছে যেখানে সারিবদ্ধভাবে ফোয়ারা এবং সুন্দর ফুলের সারি রয়েছে।
অবস্থান: ঢাকা, ঢাকা বিভাগ, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: মুঘল-শৈলীর বাগান, নামাজের হল, প্যাটিও
২৮: বাংলার তাজমহল
বাংলার তাজমহল একটি ভারতীয় তাজমহলের প্রতিরূপ, এবং এটি নির্মাণ করতে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। এই সুন্দর স্মৃতিসৌধের নির্মাণ কাজ ২০০৩ সালে শুরু হয়েছিল এবং এটি জটিল নকশা ও মনোমুগ্ধকর স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত।
এটিতে একটি সবুজ বাগান রয়েছে যেখানে ফোয়ারা ও ফুটন্ত ফুল রয়েছে, এবং আপনি এখানে একটি সজীব হাঁটা উপভোগ করতে পারেন।
অবস্থান: মহাজমপুর রোড, নারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: প্রশস্ত মাঠ, বাগান
২৯: আর্মেনিয়ান গির্জা
আপনি যদি এমন কোন বিখ্যাত স্থানে যেতে চান যেখানে আপনি ঈশ্বরের নিকটবর্তী বোধ করবেন, তবে আর্মেনিয়ান গির্জা আপনার জন্য আদর্শ স্থান হতে পারে। সুন্দর এই গির্জা অঞ্চলে প্রাক্তন আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ের অস্তিত্বের সাক্ষ্য বহন করে।
গির্জাটি বর্তমানে একটি আর্মেনিয়ান সমাধিক্ষেত্রে অবস্থিত। এখানে সমাধিক্ষেত্রটি আর্মেনিয়ানদের ইতিহাসের একটি ধারাবাহিক বর্ণনা হিসেবে কাজ করে এবং গির্জার পশ্চিম দিকে একটি ঘড়ি টাওয়ার নির্মিত হয়েছে। এই গির্জার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো, এর ঘড়ির শব্দ ছয় কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা যায়।
হাইলাইটস: ঘড়ি টাওয়ার, সমাধিক্ষেত্র
৩০: জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, ঢাকা
জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান ঢাকা বাংলাদেশের বিখ্যাত স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা দুইশ পাঁচ একর জুড়ে বিস্তৃত। এটি পশু ও উদ্ভিদ প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে এবং প্রকৃতিপ্রেমী এবং উদ্ভিদবিদদের জন্য এটি প্রিয় গন্তব্য।
এটি দেশের বৃহত্তম উদ্ভিদ সংরক্ষণ কেন্দ্র, যেখানে পঞ্চাশ হাজার গাছ এবং এক হাজার দুইশ প্রজাতির গাছ রয়েছে। এখানে শত শত গোলাপ, একটি অর্কিড হাউস, ছয়টি হ্রদ, একটি ক্যাকটাস হাউস, একটি পদ্ম পুকুর এবং একটি টিস্যু কালচার গবেষণা কেন্দ্রও রয়েছে।
অবস্থান: চিড়িয়াখানা রোড, মিরপুর-১, ঢাকা সিটি, বাংলাদেশ
হাইলাইটস: একটি ক্যাকটাস হাউস, একটি পদ্ম পুকুর, একটি টিস্যু কালচার গবেষণা কেন্দ্র