‘নির্বাচনে যারা ভোট চাইতে আসেন, ভাঙনের সময় তাদের দেখা যায় না’
বাংলাদেশ

‘নির্বাচনে যারা ভোট চাইতে আসেন, ভাঙনের সময় তাদের দেখা যায় না’

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এতে ডুবে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ চর ও নিম্নাঞ্চল। সেই সঙ্গে নদীতে পানি বাড়ায় নদীতে স্রোত ও ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

ইতিমধ্যে ৬ ও ৭ নং ফেরিঘাটের অনেকটা এলাকা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীতে চলে গেছে কয়েকটি বসতবাড়ী ও দোকানপাট। বিআইডব্লিউটিএ প্রাথমিকভাবে কিছু বালুর বস্তা ফেললেও তা অনেক কম। এমতাবস্থায় শত শত বসতবাড়ি, ফসলিজমি ও দোকানপাট, স্কুল ও ফেরিঘাটমুখি পাকা সড়ক ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাট সংলগ্ন সাত্তার মেম্বারপাড়ার মো. কাদের বেপারী দুইবার পদ্মার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। আতঙ্কে রাত জেগে ছিলেন তিনি। শুধু কাদের বেপারী নন, তার মতো আরও শত শত পরিবারের একই অবস্থা।

দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার বাসিন্দা নেকবার মোল্লা বলেন, ‘ভাঙনের কারণে ঘর সরাতেই দিশেহারা। নির্বাচনের সময় যারা ভোট চাইতে আসেন, ভাঙনের সময় তাদের আর দেখা যায় না। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে বড় মানচিত্র থেকে দৌলতদিয়ার নাম মুছে যাবে। পথে বসবে ঘাটের কয়েকশ দোকানি। ঘরবাড়ি হারাবে শত শত পরিবার। নদীতে বিলীন হবে স্কুল, মসজিদ, মন্দিরসহ অনেক স্থাপনা।’

এদিকে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যার পর দৌলতদিয়ার ভাঙন কবলিত ফেরিঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয়রা ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে সংসদ সদস্যের কাছে দাবি জানান। পরিদর্শন শেষে সংসদ সদস্য বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।

তিনি বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে ফেরিঘাট এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করতে হবে। অন্যথায় এখানকার শত শত মানুষ মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে। কিছু দিন আগে এখানে প্রাথমিকভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু সেই কাজ নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। আগামীতে যে কাজ করা হবে সেটা জন্য আমাকে এবং স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানানো হয়।’

এমপি বলেন, ‘ভাঙনের খবর শোনা মাত্রই আমি চলে এসেছি। ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝখানে যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তা কখনও কেউ কল্পনা করেনি। বর্তমানে পদ্মায় স্রোত তেমন নাই, তবুও ভাঙন শুরু হয়েছে। আমি সংসদে এবার নদী শাসনের কথা বলেছি। নদী শাসনের বাজেট পাস হচ্ছে। আমরা আশা করছি, বাজেট দ্রুত পাস হবে এবং নদী শাসনের কাজও শুরু হবে।’

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, ‘দৌলতদিয়া ঘাট নিয়ে সরকারের বড় পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে নদীবন্দর করার কথা ভাবছে সরকার। এর আগে যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সেটির বরাদ্দ আরও বাড়বে, তাই এখনই কাজ শুরু হচ্ছে না। ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Source link

Related posts

৪০ টাকা দরে সেদ্ধ চাল ও ২৭ টাকায় ধান কিনবে সরকার

News Desk

পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, ভাতিজার ফাঁসি চান চাচা

News Desk

বন্দর নগরীর ৪৯২ স্থান ডেঙ্গুর হটস্পট, এক মাসে রেকর্ড রোগী শনাক্ত

News Desk

Leave a Comment