চট্টগ্রামে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৩, দুজনের বুকে-পিঠে গুলির চিহ্ন
বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৩, দুজনের বুকে-পিঠে গুলির চিহ্ন

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চট্টগ্রামে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে তিন জনে দাঁড়িয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ ১৫ জনসহ আহত হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। তবে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কারও আহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর মুরাদপুর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিকাল ৪টার দিকে আহত কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে তিন জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। নিহতদের মধ্যে দুজনের বুকে-পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

নিহতরা হলেন মো. ওমর ফারুক (৩২), ওয়াসিম আকরাম (২৩) ও ফিরোজ আহমেদ (২৪)। এর মধ্যে ফারুক স্থানীয় একটি ফার্নিচার দোকানের কর্মচারী, ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। ফিরোজের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নুজহাত ইনু বলেন, ‘আহতদের হাসপাতালে আনা হলে তিন জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ওয়াসিমকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ফারুককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনা হয়েছিল। তার বুকে গুলি লেগেছে। ফিরোজের পিঠে গুলির চিহ্ন আছে।’

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই নুরুল আলম আশিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সংঘর্ষে আহতের হাসপাতালে আনা হলে তিন জনকে মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসক। আহত অন্তত ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘সংঘর্ষে তিন জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন পথচারী, আরেকজন ছাত্র, অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। দুজনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে কতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তা জানা নেই আমার।’

সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার আশরাফুল আলম বলেন, ‘বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নগরীর মুরাদপুর এলাকায় সংঘর্ষ

স্থানীয় সূত্র জানায়, নগরীর মুরাদপুর এলাকায় এই সংঘর্ষ শুরু হলেও, তা ছড়িয়ে পড়ে বহদ্দারহাট থেকে জিইসি মোড় পর্যন্ত। কয়েক কিলোমিটার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একপক্ষ অপরপক্ষের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হামলা ও গুলি ছুড়েছেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকাল ৩টা থেকে নগরীর ষোলশহর স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের কথা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের। এর আগেই ষোলশহর স্টেশন দখল করে রাখেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনকারীরা মুরাদপুরে অবস্থান নেন। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা ষোলশহর থেকে মিছিল নিয়ে মুরাদপুরে গেলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছোড়ে। এতে তিন জন নিহত ও শতাধিক আহত হন।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত ২

Source link

Related posts

রাজশাহী মেডিকেলে একদিনে আরও ১০ জনের মৃত্যু

News Desk

ময়মনসিংহ ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জনের মৃত্যু

News Desk

চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যু

News Desk

Leave a Comment