পাঁচ জেলার বাসিন্দারা পাবেন যে মহাসড়কের সুবিধা
বাংলাদেশ

পাঁচ জেলার বাসিন্দারা পাবেন যে মহাসড়কের সুবিধা

দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে নওগাঁর রাণীনগর-সান্তাহার আঞ্চলিক মহাসড়কের ৮ কিলোমিটারের নির্মাণকাজ। দুর্ভোগ কমাতে কাজের গুণগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে শতকরা ৪০ ভাগ কাজ। পুরো এই আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হবে উত্তরবঙ্গের ৫টি জেলা।

নওগাঁ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ অন্যান্য জেলায় চলাচলে দূরত্বের পাশাপাশি এক ঘণ্টা সময় কমিয়ে এনেছে নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক। মোট ৩১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে নওগাঁ সড়ক বিভাগের আওতায় থাকা ২৯ দশমিক ১৯ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ শেষে কয়েক বছর আগেই চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু মহাসড়কের সান্তাহার মোড় থেকে রাণীনগর রেলস্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ছিল খুবই সরু ও বড় বড় যানবাহন চলাচলের জন্য অনেকটাই অনুপযোগী। সেই ৮ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে প্রশস্তকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে নওগাঁ সড়ক বিভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় নওগাঁ সড়ক বিভাগের অধীন ৩টি আঞ্চলিক ও ৩টি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সান্তাহার থেকে রাণীনগর রেলস্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ১৮ ফিট থেকে ৩৪ ফিট প্রশস্তকরণে ৬৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর কাজটির কার্যাদেশ প্রদানের মাধ্যমে সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পান মেসার্স জামিল ইকবাল লিমিটেড নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। শুরুতেই বিভিন্ন সমস্যার কারণে নির্মাণকাজ একটু দেরিতে শুরু হলেও বর্তমানে সড়ক বিভাগের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে দ্রুতগতিতে নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। জনদুর্ভোগ লাঘবের কথা চিন্তা করে নির্ধারিত সময় আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের আগেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার আশা করছে নওগাঁ সড়ক বিভাগ।

রাতোয়াল গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ মিয়া বলেন, ‘পুরো আঞ্চলিক মহাসড়কের সুবিধা পেতে হলে সান্তাহার-রাণীনগর পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণের কোনও বিকল্প ছিল না। অবশেষে সেই কাজ শুরু হয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। কাজ শেষ হলেই আমরা অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষ ঢাকার সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের জন্য উন্নয়নের মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবো। এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সড়ক বিভাগের সকলকে।’

রাণীনগরের বাসিন্দা ছাত্তার বলেন, ‘রাণীনগর থেকে সান্তাহার যাওয়ার আগের সড়কটি ছিল এবড়োখেবড়ো। সেই সড়কে গাড়ি চালিয়ে নিজের শরীরের যেমন ক্ষতি হয়েছে তেমনি গাড়ির যন্ত্রাংশও নষ্ট হতো। কিন্তু বর্তমানে যে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে মনে হয় আগামী একশ বছর আর এই আট কিলোমিটার সড়কে মেরামত করা ছাড়া বড় ধরনের কোনও কাজ করতে হবে না। আমরা আর দুর্ভোগের সড়কে যাতায়াত করতে চাই না। আমরা দ্রুত এই সড়ক নির্মাণকাজের সমাপ্তি চাই।’

নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আশা (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র মো. হাসান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি কাজ নির্ধারিত ডিজাইন অনুসারে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা মোতাবেক সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। যদি আর কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেয় এবং নতুন করে কোনও সমস্যার সৃষ্টি না হয় তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ করে সড়ক বিভাগের নিকট হস্তান্তর করতে সক্ষম হবো। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য স্থানীয় জনসাধারণসহ সকলের কাছ থেকে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’ 

নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল হক রাসেল বলেন, ‘আমরা সড়কের নির্মাণকাজ কঠোর নজরদারিতে রেখেছি। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক টেকসই যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে যথাযথ মান বজায় রেখেই আমরা সড়কের প্রতিটি কাজ বুঝে নিচ্ছি। আমরা এই অঞ্চলের মানুষ তথা উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই নির্মাণকাজ চলমান রেখেছি।’

Source link

Related posts

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে অক্টোবরে

News Desk

সরিষার নতুন ৫ জাত উদ্ভাবন, ভোজ্যতেলে সম্ভাবনা

News Desk

হুইপ সামশুল হক চৌধুরীসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

News Desk

Leave a Comment