ছেলেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর বাবার মৃত্যু
বাংলাদেশ

ছেলেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর বাবার মৃত্যু

লক্ষ্মীপুরে সাইফ মোহাম্মদ আলী নামে এক কলেজছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছেলেকে আটকের পর পর বুকে ব্যথা উঠে মারা গেছেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা সামছুল আলম মামুন (৫১)। ধারণা করা হচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে।  

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ভোরে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কালু হাজী সড়কে এ ঘটনা ঘটে। সাইফ মোহাম্মদ আলী লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।

জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হওয়া সহিংসতার ঘটনায় নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে দুপুরে আদালতে তোলা হয়। বিকাল ৫টা পর্যন্ত এক আইনজীবীর জিম্মায় তাকে বাবার জানাজার নামাজে অংশ নিতে জামিন দিয়েছেন আদালত।  

পরিবারের লোকজনের দাবি, সাইফের নামে থানায় কোনও মামলা ছিল না। সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে সদর থানা পুলিশ কালুহাজী সড়কে অবস্থিত নিজ ঘরে থাকা সাইফকে ধরতে সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় সাইফ ঘুমিয়ে ছিলেন। তাকে ঘুম থেকে তুলে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দেন বাবা। ছেলের নামে কোনও মামলা বা ওয়ারেন্ট আছে কিনা, সে বিষয়টি তিনি পুলিশের কাছে জানতে চান। কিন্তু পুলিশ কোনও উত্তর না দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এতে দুঃখে ও আতঙ্কে বুকে ব্যথা অনুভব করেন মামুন। কিছুক্ষণের মধ্যে নিজ বাসায়ই মৃত্যু হয় তার।

পুলিশের দাবি, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ২১ জুলাই লক্ষ্মীপুরে উত্তর তেমুহনী এলাকায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন সাবুর বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের কাজে বাধাও দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনের নামে মামলা করেছে। ওই মামলায় সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তবে সাইফের নাম মামলার এজাহারে নেই। গ্রেফতার সাইফ মোহাম্মদ আলী সাইফ মোহাম্মদ আলী ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় বলেও জানায় পুলিশ।

নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাইফকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার জামিন আবেদন করেন আইনজীবীরা। আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মো. নোমান রাষ্ট্র এবং বিবাদী পক্ষের আইনজীবীর কথা শুনে সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ মোহাম্মদ সামছুল আলমের জিম্মায় বিকাল ৫টা পর্যন্ত সাইফকে জামিন দেন। এ সময়টাতে বাবার জানাজার নামাজে অংশ নেন ছেলে। তার দ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মা তাহমিনা আক্তার নাসরিন দাবি করেন, সাইফ কোনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তার নামে মামলা ছিল না। পুলিশ জোর করে ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় তার বাবা আতঙ্কিত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ছেলের মুক্তির দাবি জানান তিনি।

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি ইয়াছিল মজুমদার ফারুক বলেন, নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সকালে শুনেছি। সে ছাড়াও আরও চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। সহিংসতা ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান।

 

Source link

Related posts

প্রাণীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: পরিবেশমন্ত্রী

News Desk

বাজার-গণপরিবহন থেকে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত

News Desk

মহাখালীর বস্তিতে আগুন নিয়ন্ত্রণ

News Desk

Leave a Comment