রাজশাহী নগর ভবন, পুলিশ সদর দফতর, মেয়রের বাড়ি, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি, বোয়ালিয়া, মালোপাড়া, রাজপাড়া, মতিহার ও কাশিয়াডাঙ্গা থানা, আওয়ামী লীগ নেতাদের কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়েছে। লুটপাট থেকে বাদ যায়নি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক, ব্যাংক ও চিড়িয়াখানা।
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে গত সোমবার বিকাল সাড়ে চার পর সড়কে নেমে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে স্থানীয়রা। এরপর থেকে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও লুটপাট করছে দুর্বৃত্তরা। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে পাহারা বসিয়ে নিরাপত্তা দিয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
ইতোমধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়, এইচ এম খায়রুজ্জামন লিটনের ব্যক্তিগত কার্যালয়, বাড়িসহ আরও কয়েকজন নেতার কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব স্থাপনা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ছাড়া আরএমপি ও সদর থানা, পুলিশ ফাঁড়ির ভবনগুলোতে লুটপাটের পর আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব থানা ও ফাঁড়িতে পুলিশ নেই। হাইটেক পার্ক ও শহীদ কামারুজামান কেন্দ্রীয় উদ্যানে ভাঙচুর হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজশাহীতে চিড়িয়াখানায় লুটপাট চালানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার বিকালে মোহনপুর থানা ও উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। নগরের সব রাস্তাঘাটে পতাকা নিয়ে হাজার হাজার মানুষ উল্লাসে মাতেন। নারী-পুরুষ, শিশু সবাইকে রাস্তায় নেমে পতাকা নিয়ে উল্লাস করতে দেখা যায়। এই আনন্দ মিছিলে যাওয়ার সময় সোমবার বিকালে লোকজন নগরের কুমারপাড়া এলাকায় অবস্থিত রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের মালিকানাধীন সরকার টাওয়ারে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেন। এখানে ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। একই এলাকায় মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি জেলা পরিষদ ভবন ভাঙচুর, সোনালী ব্যাংকে লুটপাট, সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশার বাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাট করা হয়েছে।
এ ছাড়া পুঠিয়ায় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদের বাসায় আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা থানার ভেতরে রয়েছি। আগুন দেওয়ার খবরটি শুনেছি। কিন্তু থানা ছেড়ে যেতে পারিনি।’
রাজশাহী নগরীতে এসব লুটপাটের ঘটনার বিষয়ে জানতে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র জামিরুল ইসলামকে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি।