দেড় মাসেও নামেনি বন্যার পানি, দুর্ভোগে লক্ষ্মীপুরের ৩ উপজেলার মানুষ
বাংলাদেশ

দেড় মাসেও নামেনি বন্যার পানি, দুর্ভোগে লক্ষ্মীপুরের ৩ উপজেলার মানুষ

বন্যার দেড় মাস কেটে গেলেও লক্ষ্মীপুরে পানি পুরোপুরি নামেনি। এখনও কিছু এলাকায় হাঁটু পানি। নানা প্রতিবন্ধকতা এবং খালে পানি প্রবাহের গতি কম থাকায় পানি নামতে পারছে না। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এমন জলাবদ্ধতা বিরাজ করছে। এতে সদর, কমলনগর ও রামগতির প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানির কারণে দুর্ভোগে আছেন।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলার সদর উপজেলার টুমচর, ভাঙ্গাখাঁ ও দত্তপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এ দুই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধ হয়ে আছে। কোনও কোনও বাড়ির উঠান, রাস্তাঘাট, বাগান এখনও পানিতে তলিয়ে আছে।

বিশেষ করে জকসিন-পোদ্দারবাজার সড়কের পাশে থাকা রহমতখালী খালের সংযোগ খালের পূর্ব পাড়ের বাড়িগুলোতে পানি রয়েছে। দীর্ঘ দেড় মাস ধরে পানিবন্দি থাকায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্য আলি আজগর রবিন বলেন, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় আকস্মিক বন্যায় টুমচর ইউনিয়নের কালিরচর ও ইলের গোজায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সদর উপজেলার ভাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের বাসিন্দা আজগর হোসেন বলেন, খাল পাড়ে আমাদের ঘর। প্রায় দেড় মাস আগে আমাদের ঘরে পানি উঠেছে। বাড়ির উঠানে কোমর পানি, ঘরে হাঁটু পানি ছিল। স্ত্রী এবং মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। এখন ঘরে পানি না থাকলেও উঠানে আছে। বৃষ্টির কারণে পানি শুধু বাড়তে থাকে।

তিনি আরও বলেন, খালে পানি প্রবাহের গতি নেই। গাছপালা এবং কচুরিপানার কারণে পানি নামছে না। দীর্ঘ সময় বন্যার কারণে খুবই কষ্টে আছি- বলে বোঝাতে পারবো না।

একই এলাকার মিরিকপুর বাজারের বাসিন্দা সোহাগ মিয়া বলেন, খালপাড়ের বাড়িগুলো এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। দেড় মাস ধরে এ অবস্থা। এসব এলাকায় পানি উঠেছে আগে, কিন্তু নামবে সব এলাকার শেষে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পরিষ্কার করা হচ্ছে

দত্তপাড়া ইউনিয়নের গঙ্গাশিবপুর গ্রামের বাসিন্দা মাহফুজ হোসেন জানান, উত্তর বড়ালিয়া ও গঙ্গাশিবপুর গ্রাম এবং এ ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকার পাঁচ হাজার মানুষ এখনও পানিবন্দি।

কমলনগর উপজেলা চরকাদিরা ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, ভূলুয়া নদীর দুই পাড়ে কমলনগরের চরকাদিরা ও রামগতির চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের বাসিন্দারা এখনও পানিবন্দি।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজিব কুমার সরকার জানান, জলাবদ্ধতার বড় কারণ হচ্ছে, এখানে পানির অবাধ প্রবাহ ছিল না। বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েও অনেকে খালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৩টি স্থানে রহমতখালী খাল পরিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া রামগতি, রায়পুর ও রামগঞ্জ পৌরসভাতেও খাল পরিষ্কার অভিযান চলছে।

Source link

Related posts

সবকিছু লিখে নিয়ে মা-বাবাকে বের করে দিলো ছেলে

News Desk

শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় বাংলাদেশর এক ধাপ অগ্রগতি

News Desk

জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট ইসি

News Desk

Leave a Comment