ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৭ জন। এর মধ্যে ছয় জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতরা সবাই খাগড়াছড়ি পরিবহন বাসের যাত্রী।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে ফরিদপুর সদরের কানাইপুরের মল্লিকপুর এলাকায় এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের সরা গ্রামের আবু বক্কর (৫৫), জাবাইল গ্রামের বাবু (৪০), মাগুরা জেলার সদর উপজেলার বরই গ্রামের পিকুল এবং খাগড়াছড়ি পরিবহন বাসের সুপারভাইজার মহসিন (৩৫) ও হেলপার বাজারগ্রামের নাহিদ কারিগর (১৯)। তাদের বাড়ি শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর ও বাজার গ্রামের।
আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাটায় শ্রম দেওয়ার উদ্দেশে সাতক্ষীরা থেকে ইটভাটার ৩০/৩৫ শ্রমিক খাগড়াছড়ি পরিবহন নামের একটি বাস ভাড়া করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এই দুর্ঘটনায় ঘটে। এ সময় অধিকাংশ যাত্রী ঘুমে ছিলেন।
ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, ঢাকার আব্দুল্লাপুর থেকে ঝিনাইদহগামী গ্রিন এক্সপ্রেস নামে একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে ছেড়ে আসা খাগড়াছড়ি পরিবহন নামে অপর বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। নিহত সবাই খাগড়াছড়ি পরিবহনের যাত্রী। গ্রিন এক্সপ্রেস বাসটি অসতর্কতাবশত বিপরীত লেনে চলে গেলে সংঘর্ষ ঘটে।
ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক মাহমুদুজ্জামান জানান, ভোরে ৩০ থেকে ৩২ জন আহতকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ২৭ জনকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ছয় জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একজনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে হতাহতদের খোঁজ নেন।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, নিহত প্রত্যেক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা ও আহত ১৭ জনকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। এ ছাড়াও কেন বারবার একই জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটছে তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত টিম গঠন করা হবে।
পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, গাড়ির গতি বেশি ছিল। চালকদের চোখেও ছিল ঘুম, আর এ কারণেই হয়তো নিজস্ব লেন চেঞ্জ হয়ে যাওয়ায় মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়াতে দূরপাল্লার গাড়িগুলোতে দুই জন চালক দেওয়ার বিষয়ে শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।