Image default
আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিন কি কখনো স্বাধীন হতে পারবে না?

আরব-ইসরাইলের মধ্যে ১৯৪৮ সালের যুদ্ধের পর থেকে ফিলিস্তিনে যে যুদ্ধ শুরু, সেটা চলছে এখনো। পঞ্চাশ বছর আগে ১৯৭৩ সালে তৃতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর আরব দেশগুলোর সঙ্গে আর কোন যুদ্ধ না হলেও ফিলিস্তিন-ইসরাইল দ্বন্দ্ব-সংঘাত বন্ধ হয়নি। যদিও সংঘাত বন্ধে শান্তির ফরমুলা হিসেবে বিভিন্ন সময় দুই রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেটা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের হাজার হাজার লোক হত্যা করেছে। এ ছাড়া দেশটি গাজার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে বহুবার বাস্তুচ্যুত করেছে এবং হাসপাতালগুলোতে বোমা মেরেছে। তারা পরিকল্পিতভাবে ডাক্তার, সেবাকর্মী ও সাংবাদিকদের নিশানা বানিয়ে হত্যা করেছে। পুরো জনগোষ্ঠী অনাহারে রয়েছে এবং তাদের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও শক্তিশালী সরকার এবং তাদের মিডিয়া এসব আগ্রাসনে নৈতিক ও বস্তুগত সমর্থন দিচ্ছে। এসব দেশ ও ইসরায়েলের অবস্থানের মধ্যে কোনো ফারাক নেই। শুধু গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দিতে ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। সুতরাং আসুন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যস্থতাকারী, নিয়ন্ত্রণকারী বা প্রভাবক হিসেবে তুলে ধরে যে মিথ্যা প্রচারণা চলছে বা আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ (যাকে মূলধারার মার্কিন রাজনীতিতে চরম বামপন্থি বলে মনে করা হয়) বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ‘যুদ্ধবিরতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে’– এই মিথ্যা বাণী পরিহার করি। গণহত্যার পক্ষে অবস্থানকারী কোনোভাবে মধ্যস্থতাকারী হতে পারে না।

কোনো শক্তি ও অর্থ, পৃথিবীর সব অস্ত্র ও প্রপাগান্ডা ফিলিস্তিনের ক্ষত আর আড়াল করতে পারছে না। যে ক্ষতের কারণে ইসরায়েলসহ সারাবিশ্বে রক্ত ঝরছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, যেসব দেশের সরকার ইসরায়েলি গণহত্যায় সহযোগিতা করছে, সেগুলোর বেশির ভাগ নাগরিকই স্পষ্ট করেছে– তারা সরকারের সঙ্গে একমত নয়। আমরা হাজার হাজার মানুষের সেই মিছিল দেখেছি। এতে ইহুদিদের তরুণ প্রজন্মও রয়েছে, যারা সুকৌশলে ব্যবহৃত ও মিথ্যার মুখোমুখি হতে হতে ক্লান্ত। কে কল্পনা করেছিল, আমরা সেই দিনটি দেখতে বেঁচে থাকব, যেদিন জার্মান পুলিশ ইহুদি নাগরিকদের ইসরায়েল ও ইহুদিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য আটক করবে এবং তাদের ইহুদি-বিরোধিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করবে? কে ভেবেছিল, মার্কিন সরকার ইসরায়েলি রাষ্ট্রের সেবায় ফিলিস্তিনপন্থি স্লোগান নিষিদ্ধ করে রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি বাকস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করবে? পশ্চিমা গণতন্ত্রের তথাকথিত নৈতিক কাঠামো বিশ্বের বাকি অংশে কিছু ক্ষেত্রে সম্মান পেলেও মারাত্মক হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে।
নেতানিয়াহু যখন মধ্যপ্রাচ্যের এমন একটি মানচিত্র তুলে ধরেন, যেখানে ফিলিস্তিন নেই এবং ইসরায়েল নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে, তখন তিনি একজন স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে প্রশংসিত হন বলা হয়, তিনি ইহুদিদের স্বদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। কিন্তু যখন ফিলিস্তিনবাসী ও তাদের সমর্থকরা ‘নদী থেকে সমুদ্র, ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে’ স্লোগান দেয়, তখন তাদের বিরুদ্ধে ইহুদিদের গণহত্যার পক্ষে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়।

এ অভিযোগ কি বাস্তব? নাকি এটি একটি অসুস্থ কল্পনা, যার মাধ্যমে তারা নিজেদের অন্ধকার অন্যদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে? এটি এমন এক কল্পনা, যা বৈচিত্র্য সমর্থন করে না। একইভাবে তা অন্যদের সঙ্গে সমান অধিকার ভোগ করে একটি দেশে বসবাসের ধারণাও গ্রহণ করে না। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় অন্য সবাই যেমন করে। এটি এমন এক কল্পনা, যা স্বীকার করতে পারে না– ফিলিস্তিনিরা স্বাধীন হতে চায়, যেভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও অন্যান্য দেশের মানুষ ঔপনিবেশিকতার জোয়াল ছুড়ে ফেলেছে। এসব দেশ বৈচিত্র্যময়, এমনকি অত্যন্ত মারাত্মক ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তারা মুক্ত। দক্ষিণ আফ্রিকানরা যখন তাদের জনপ্রিয় সমাবেশে চিৎকার করছিল, ক্ষমতা! জনগণের কাছে ক্ষমতা, তারা কি শ্বেতাঙ্গদের গণহত্যার জন্য ডাক দিচ্ছিল? না। তারা বর্ণবাদী রাষ্ট্র ভেঙে ফেলার আহ্বান জানিয়েছিল, এখন যেমন ফিলিস্তিনিরা করছে।

ফিলিস্তিন এবং ইসরাইল দুটি আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্রের সমাধান প্রথম এসেছিলো ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের মাধ্যমে। সে সময় বলা হয়, ইসরাইল হবে ইহুদিদের জন্য এবং ফিলিস্তিন আরবদের জন্য। তবে ইহুদিরা মোট ভূখণ্ডের ১০ শতাংশের মালিক হলেও তাদের দেয়া হয় মোট জমির অর্ধেক। যেটা আরবরা মানেনি। এর ধারাবাহিকতাতেই হয় প্রথম আরব-ইসরাইল যুদ্ধ। কিন্তু একটা সময়ে এসে ঠিকই ইসরাইল এবং ফিলিস্তিন উভয়পক্ষই দুই রাষ্ট্র সমাধানে ঐকমত্য হয়। কিন্তু সেটা কিভাবে হলো? এবং পরে কেন আবার ব্যর্থও হলো সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

‘দুই রাষ্ট্র’ সমাধানে কী ছিলো?

ফিলিস্তিন এবং ইসরাইল পৃথক দুটি রাষ্ট্রের ধারণা প্রথমবারের মতো বাস্তবতার দিকে এগোতে শুরু করে ১৯৯৩ সালে নরওয়ের অসলোতে ফিলিস্তিন-ইসরাইলের শান্তিচুক্তির মাধ্যমে। যেটা অসলো অ্যাকর্ড নামে পরিচিতি। এই চুক্তিতে পশ্চিম তীর এবং গাজায় সরকার পরিচালনার জন্য একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়। এটা গঠনের সময়সীমা ছিলো পাঁচ বছর। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা স্বীকার করে নেয় ইসরাইল রাষ্ট্রকে। চুক্তি অনুযায়ী অবশ্য খুব দ্রুতই পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকা নিয়ে সম্ভাব্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের একটি কর্তৃপক্ষও গঠন করা হয়। কিন্তু তারপরই শান্তি প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। নানারকম বাধা তৈরি হয়।

 

শান্তি প্রক্রিয়া কেন স্থবির হলো?

অসলোতে দুই রাষ্ট্র সমাধান মেনে নেয়া হলেও সেই রাষ্ট্র কবে গঠন হবে তার কোন সময়সীমা বেধে দেয়া হয়নি। এমনকি ইসরাইলের বাইরে আলাদা একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চারটি বিষয়েরও কোন সমাধান করা হয়নি। এই চারটি বিষয় হচ্ছে, প্রথমত: দুই রাষ্ট্রের সীমান্ত কোথায়, কিভাবে নির্ধারণ হবে সেটা। দ্বিতীয়ত: জেরুসালেম কার অধীনে থাকবে। তৃতীয়ত: ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ভেতরে থাকা ইসরাইলি বসতিস্থাপনকারীদের কিভাবে সরিয়ে নেয়া হবে। এবং চতুর্থত: ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের পর থেকে ইসরাইলের ভেতরে থাকা যেসব ফিলিস্তিনি বাস্তচ্যুত হয়েছেন, তারা ইসরাইলে কিভাবে ফিরবেন।

 

চুক্তিতে বলা হয়েছিলো, পাঁচ বছরের মধ্যে একটি ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ গঠনের পর এগুলো আলোচনার ভিত্তিতে পরে ঠিক করা হবে। কিন্তু সেটা আর কখনোই হয়নি। ইসরাইলের তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের অধ্যাপক মেইর লিটভ্যাক বলছেন, চুক্তি বাস্তবায়ন না হবার পেছনে দু’পক্ষেরই দায় ছিলো। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “ইসরাইল এবং ফিলিস্তিন -দুই পক্ষেই চুক্তি বিরোধী শক্তিশালী দুটি গ্রুপ ছিলো, যারা এই ঐক্যমত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো। কারণ, দুই পক্ষই বলছিলো পুরো এলাকা তাদের এবং শুধু তাদেরই রাষ্ট্র হবে। ফিলিস্তিনে এটা ছিলো হামাস এবং ইসলামী জিহাদ। আর ইসরাইলে ধর্মীয় এবং জাতীয়তাবাদী গ্রুপগুলো। ফলে অসলো অ্যাকর্ড আর এগোয়নি।”

 

কিন্তু ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তির পরপরই এর বিরোধিতায় হামাস এবং ইসলামিক জিহাদ ইহুদিদের উপর হামলা শুরু করে। অন্যদিকে ইসরাইলে একজন ইহুদি কট্টরপন্থীর হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন শান্তিচুক্তি করা দেশটির প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন। এরপর ১৯৯৬ সালে ইসরাইলে ডানপন্থীরা ক্ষমতায় আসার পর ইসরাইলের সরকারও আর শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে চায়নি। পরবর্তী বছরগুলোতে বিভিন্ন সময় দুই পক্ষের বৈঠক হলেও সমাধান আসেনি। এ সময় ইসরাইল মূলত: নজর দিয়েছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের উপর এবং জেরুসালেমকে তারা ইসরাইলের রাজধানীও ঘোষণা করেছে। সবমিলিয়ে ফিলিস্তিনে এখন যে ভৌগলিক বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, তাতে করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বাস্তবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব কি-না তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই সন্দেহ রয়েছে।

 

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কি আর সম্ভব?

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য সবার আগে দরকার ভূখণ্ড। কিন্তু পশ্চিম তীর যেটা কি-না ফিলিস্তিনের অংশ হবে সেখানে এখন কয়েক লাখ ইহুদি বসতিস্থাপনকারী বসবাস করছেন। এছাড়া জেরুসালেমকেও ইসরাইল তার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং আমেরিকা সেটাকে স্বীকৃতিও দিয়েছে। ফলে ভৌগলিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন এখন আর বাস্তব সম্মত নয় বলেই অনেকে মনে করেন। যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক গবেষক শাহিন বেরেনজি মনে করেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে।

 

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছিলেন, “এটা বাস্তবায়ন করা ১৯৯০ এর দশকের তুলনায় খুবই কঠিন। কারণ, পশ্চিম তীর এবং জেরুসালেমের ইহুদি বসতি। ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তির সময় এটা ছিলো এক লাখ ২০ হাজার। গেলো তিন দশকে ইহুদি বসতিস্থাপনকারী বেড়ে হয়েছে সাত লাখ। এছাড়া খোদ ইসরাইলের আইন অনুযায়ীই অবৈধ এরকম ইহুদি বসতিও আছে।”

 

তিনি মনে করেন, এরকম বসতি সম্প্রসারণ এবং ইসরাইলের রাজনীতিতে এর প্রবল সমর্থনের কারণে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন কঠিন হয়ে পড়েছে। “তাছাড়া দুই রাষ্ট্র সমাধানের প্রতিও এখন আর ইসরাইলের আগ্রহ নেই। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরাও হামাস এবং ফাতাহ দুই দলে বিভক্ত। এবং তাদের মধ্যে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কথা বলা বা শান্তি প্রক্রিয়া এগুনোর মতো একক এবং বিশ্বস্ত নেতা নেই,” বলেন তিনি।

 

তাহলে কি দুই রাষ্ট্র সমাধান আর সম্ভব নয়?

ইসরাইলের তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেইর লিটভ্যাক অবশ্য বলছেন, সুযোগ এখনো আছে। কিন্তু ইসরাইল কি দুই রাষ্ট্র সমাধান আর চায়? লিটভ্যাক বলছেন, ইসরাইল সেটা চায় না। “আমি এখানে ইসরাইলের সরকারি দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করি। তারা যেটাকে সমাধান মনে করে সেটা হচ্ছে, পরিস্থিতি যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকুক। অর্থাৎ তারা পশ্চিম তীরকে নিয়ন্ত্রণ করবে, যেখানে আবার একটা ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষও থাকবে – তবে দুর্বল এবং ইসরাইলের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু চিরদিন ইসরাইল এভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে এটা একটা ভুল ধারণা। এটা থেকে বেরিয়ে এলে সমাধান সম্ভব,” বলছেন লিটভ্যাক।

 

লিটভ্যাক মানছেন ইহুদি বসতি একটা বড় সমস্যা। কিন্তু তিনি এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, ইসরাইল এর আগে গাজা থেকে তাদের সব বসতি সরিয়ে নিয়েছিলো এবং নিজেরাও গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিয়েছে। সুতরাং কঠিন হলেও পশ্চিম তীরে সেটা করা যাবে। এমনকি জেরুসালেম নিয়েও দু’পক্ষ ছাড় দিলে ঐকমত্যে আসা সম্ভব। কিন্তু ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে এখন যে নতুন যুদ্ধাবস্থা, সেখানে যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা অচলাবস্থার পরিবর্তন কে করবে সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

 

মার্কিন গবেষক শাহিন বেরেনজি মনে করেন, এখানে আমেরিকাকেই আবার এগিয়ে আসতে হবে। তার মতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শান্তির উদ্যোগ নিলে সেটা সফল হতে পারে। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, “ঐতিহাসিকভাবে আমেরিকা যখন মধ্যপ্রাচ্যে কিছু করতে চেয়েছে, তখন সেটার বাস্তবায়নও হয়েছে। মিশর-ইসরাইল শান্তিচুক্তি, জর্ডানের সঙ্গে চুক্তি এমনকি সাম্প্রতিককালে আব্রাহাম অ্যাকর্ড -এর সবগুলোর পেছনে আমেরিকার ভূমিকা আছে।”

 

কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আমেরিকার আগ্রহ আছে কিনা, এমন প্রশ্নে মি. শাহিন বলছেন, “দুই যুগ আগে নাইন-ইলেভেনের পর আমেরিকার চোখ অসলো শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন থেকে সরে যায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। সেটা শেষ হলে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে ইরান, রাশিয়া, চীন নিয়ে। কিন্তু এখন আমেরিকাকে আবারো মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় হতে হচ্ছে। কারণ এখানে অবহেলা করলে এর ফল সবাইকেই ভোগ করতে হবে, কিছু সময় পর পর সংঘাত সামনে আসবে। আমেরিকা শান্তির উদোগ নিলে হয়তো সেটা আশা দেখাতে পারে। কিন্তু এখন ইসরাইল-গাজা সংকট যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিতে এগুচ্ছে, সেখানে আমেরিকা-ইসরাইল কিংবা হামাস, শান্তির কথা কেউই বলছে না। সংকটটা এখানেই। সূত্র: বিবিসি।

Related posts

সাবেক মোসাদপ্রধানের ভাষ্যে ইরানে ইসরায়েলের ‘মিশন’

News Desk

ভারতে এসে চরকা কেটে গান্ধীকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

News Desk

হৃদয়স্পর্শী স্ট্যাটাস দিয়ে দ. আফ্রিকায় বাংলাদেশির আত্মহত্যা

News Desk

Leave a Comment