গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘জুলাই ছাত্রজনতার গণ অভ্যুত্থানে রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান হলেও স্বৈরাচারের দোসরের আস্ফালন এখনও কমেনি। তারা রংপুরের মাটিতে গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দের নামে কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে।’
তিনি বলেন, ‘গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনও জায়গা হবে না। আওয়ামী লীগের দোসর (জাতীয় পার্টি) যে আস্ফালন দেখাচ্ছে প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, অবিলম্বে গণ হত্যাকারী স্বৈরাচারের দোসরদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে জনগণের মাঝে স্বস্তি প্রদান করুন। আর যদি প্রশাসন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয় তাহলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। আমরা চাই না, জনগণ আইন তাদের হাতে তুলে নিক । আমরা এই সরকারকে স্থিতিশীল করতে চাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করতে চাই।’
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকালে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে গণঅধিকার পরিষদ রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নুরুল হক বলেন, ‘বিগত ৫৩ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় ছিল, আজকে ভোটের অধিকার ও ন্যায় বিচার পাওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। অথচ যে সরকার ক্ষমতায় থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে নিপীড়ন-নির্যাতন ও গণবিরোধী অবস্থান সব সরকারের আমলে দেখেছি। আমরা চাই, জনবান্ধব প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী- যারা ক্ষমতায় থাকবে তারা ক্ষমতাকে ভোগের বস্তু মনে না করে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেবে। সে ভাবেই রাষ্ট্রনীতি ঠিক করবে।’
গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের আগে নির্বাচন দিলে জনগণের ভাগ্যের কোনও পরিবর্তন হবে না।’ রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে একইসঙ্গে ভাববার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। বিকাল ৩টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৪টার পর সমাবেশ শুরু হয়। তার আগে জেলা স্কুলের সমাবেশ স্থলে প্রবেশপথে দলের নেতাকর্মীদের লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তবে দুপুর থেকে রংপুর বিভাগের সব জেলা থেকে কয়েকটি মিছিল জনসভাস্থলে এলে নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক কমে যায়।
সভায় জনসমাগম কম হবে ভেবে মাঠের একাংশে মঞ্চ তৈরি করা হলেও কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সভায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হামলা করতে পারে এমন আশঙ্কায় সভাস্থলের আশপাশে দুই স্তরের পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। সেনাবাহিনীও সতর্ক অবস্থান নেয়। অন্যদিকে সভায় কী হয় এটা দেখার জন্য নগরীর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ সভাস্থলে মাঠের ডানদিকে অবস্থান নেন। তবে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।