তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) একজন বাংলাদেশী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলোয়াড়। তামিম 2007 সালে তার একদিনের আন্তর্জাতিক (ODI) ক্রিকেটে অভিষেক করেন এবং পরের বছর তার প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেন। তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) ডিসেম্বর 2010 থেকে সেপ্টেম্বর 2011 পর্যন্ত জাতীয় দলের সহ-অধিনায়কের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) খেলার তিনটি ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি করেছেন এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে 10,000 আন্তর্জাতিক রান করেছেন। 2018 সালের জানুয়ারিতে ঢাকার শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, তিনি বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওডিআই ক্রিকেটে 6,000 রান করেন এবং একটি স্টেডিয়ামে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ডও করেন। এর আগে এই রেকর্ডটি শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়সুরিয়ার নামে ছিল যিনি আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ 2,514 রান করেছিলেন।
বাংলাদেশী জনপ্রিয় ক্রিকেটার তামিম ইকবাল এর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । তামিম ইকবাল এর জীবনী – Tamim Iqbal Biography in Bengali বা তামিম ইকবাল এর আত্মজীবনী বা (Tamim Iqbal Jivani Bangla. A short biography of Tamim Iqbal. Tamim Iqbal Birth, Place, Life Story, Life History, Biography in Bengali) তামিম ইকবাল এর জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
তামিম ইকবাল কে ?
তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) একজন বাংলাদেশী ক্রিকেটার। তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) 2007 সালে তার একদিনের আন্তর্জাতিক এবং টেস্টে অভিষেক হয়। তিনি একজন বাঁ-হাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এবং মার্চ 2020 থেকে আগস্ট 2023 পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন।
তামিম ইকবাল এর জীবনী
নাম (Name) | তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) |
জন্ম (Birthday) | ২০ মার্চ ১৯৮৯ (20th March 1989) |
জন্মস্থান (Birthplace) | চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ |
পেশা (Occupation) | ক্রিকেটার |
ব্যাটিংয়ের ধরন | বাঁহাতি |
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফব্রেক |
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান |
তামিম ইকবাল এর প্রারম্ভিক জীবন
তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) জন্ম ইকবাল খান এবং নুসরাত ইকবাল খান, বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। তার পৈতৃক খান পরিবারটি শহরের একটি মর্যাদাপূর্ণ পরিবার, তার পূর্বপুরুষরা বিহার থেকে চট্টগ্রামে এসেছিলেন। তার মাতৃকুল উত্তর প্রদেশের সালেমপুরের অন্তর্গত। তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) হলেন নাফিস ইকবালের ভাই এবং আকরাম খানের ভাতিজা, যিনি দুজনেই বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলেছেন।
তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) বাবা ইকবাল ছোট ছোট ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করতেন ছেলেদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং ক্রিকেটে উন্নতি করতে। তার ভাই নাফীস, একজন প্রাক্তন জাতীয় দলের ক্রিকেটার, একটি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, “তামিম ছিলেন সবচেয়ে প্রতিভাবান। তামিম যখন 12 বা 13 বছর বয়সে, তিনি 148 রান করেছিলেন যখন দলটি 150 রান তাড়া করেছিল”।
তামিম ইকবাল এর ক্যারিয়ার
তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) উচ্চতা 5’8″। 2009 মৌসুমের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তামিম ইকবাল তার প্রথম টেস্ট শতক করেন। খেলোয়াড় ও ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে বিবাদের কারণে ক্যারিবীয় দলটি অবশ্য খানিকটা দুর্বল ছিল। 7 জন খেলোয়াড়ের টেস্ট অভিষেক হয় এ ম্যাচে। তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) ব্যাটিং বাংলাদেশকে এক ঐতিহাসিক বিজয় এনে দেয়। এটি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট বিজয় এবং দেশের বাইরের মাটিতেও প্রথম টেস্ট জয়।
তামিম 128 রানে তার ইনিংস শেষ করেন এবং অসাধারণ ক্রীড়াশৈলীর কারণে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার জিতে নেন। এরপূর্বে প্রথম ইনিংসেও তিনি 33 রান করেছিলেন। নিজের ইনিংস সম্পর্কে বলতে গিয়ে তামিম বলেন, “উইকেট যথেষ্ট ফ্ল্যাট ছিল। আপনি যদি খেলায় ঠিকমত মনোনিবেশ করতে পারেন এবং সোজা ব্যাটে খেলেন, নিশ্চয়ই আপনি বড় স্কোর করতে পারবেন। আমার বয়স এখন বিশ এবং টেস্ট খেলেছি মাত্র 11টি। আশা করছি, এরকম আরো অনেক ইনিংস আমি দলকে উপহার দিতে পারবো।
2018 সালের ডিসেম্বরে উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে নেমে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে 12000 রানের রেকর্ড গড়েন তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal)। প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক শতক আসে আয়ারল্যান্ড দলের বিপক্ষে। ভারত, শ্রীলঙ্কা নিয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ত্রি-দেশীয় সিরিজের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রশিক্ষক জেমি সিডন্স তার সম্পর্কে বলেছেন, “তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিকমানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হবার যোগ্যতা আছে”।
25শে জানুয়ারি তামিম, জুনায়েদ সিদ্দিকীকে সঙ্গী করে ভারতের বিপক্ষে 151 রানের রেকর্ড জুটি গড়েন। 13ই মার্চ, 2010 ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে 86 রানের একটি অনবদ্য ইনিংস খেলে তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) 1000 রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। কেবল শচীন তেন্ডুলকর এবং মোহাম্মদ আশরাফুল তারচেয়েও কম বয়সে এ মাইলফলক স্পর্শ করতে পেরেছিলেন। এই টেস্টেরই দ্বিতীয় ইনিংসে ও পরের টেস্টের প্রথম ইনিংসে তামিম পরপর দু’টো সেঞ্চুরি করেন (103 ও 108)।
2012 সালে এশিয়া কাপে তামিম ইকবাল 4টি ম্যাচেই হাফ-সেঞ্চুরি করেন এবং বাংলাদেশ 2য় বারের মতো কোনো ত্রি-দেশীয় ক্রিকেট সিরিজের ফাইনালে উঠে।
তামিম ইকবাল এর ক্রিকেট বিশ্বকাপ
তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) 2007 সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট অংশগ্রহণ করেন এবং ভারতের বিপক্ষে প্রথম খেলায় 53 বলে 51 রান করেন, যা ভারতীয় দলকে পরাজিত করতে সবিশেষ অবদান রাখে।
2015 সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে 4 জানুয়ারি, 2015 তারিখে বিসিবি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ দলের 15 সদস্যের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। এতে তিনিও দলের অন্যতম সদস্য মনোনীত হন। 5 মার্চ, 2015 তারিখে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ৪র্থ খেলায় তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) 95 রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন। মাহমুদুল্লাহকে সাথে নিয়ে ও পরবর্তীতে সাকিব, মুশফিকের অনন্য নৈপুণ্যে ঐ খেলায় বাংলাদেশ দল বিশাল রান তাড়া করে 6 উইকেটের কৃতিত্বপূর্ণ জয়লাভ করে। এর ফলে বাংলাদেশ সফলভাবে একদিনের আন্তর্জাতিকে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে বিজয়ী হয়। এছাড়াও তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) সাকিবের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিকে 4000 রান সংগ্রহ করেন।
তামিম ইকবাল দলের অধিনায়ক
মাশরাফি বিন মর্তুজা একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাড়ালে 8 মার্চ 2020 তারিখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জাতীয় দলের দায়িত্বভার তার কাঁধে তুলে দেয়। এছাড়া এর আগে শ্রীলঙ্কা সফরেও ওডিআই দলের নেতৃত্ব দেন তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal)।
তামিম ইকবাল T-20 থেকে অবসর
2022 সালের 17ই জুলাই তামিম ইকবাল (Tamim Iqbal) নিজের ফেসবুক পেজে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা দেন।