শীত মানেই নানা অসুখ-বিসুখের প্রকোপ। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে ঋতু পরিবর্তনের সময়টাতে যত্নবান হওয়া খুবই জরুরি। এই সময়ে ঠান্ডা, জ্বর, সর্দিকাশি, হাঁপানির টান, এমনকি সিওপিডি-র মতো সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই নিয়মিত ও সঠিক ডায়েটের মাধ্যমে বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব।
প্রবীণদের সাধারণ সমস্যা: খাদ্যাভ্যাসে গাফিলতি
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক প্রবীণ ব্যক্তি নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে উদাসীন হয়ে পড়েন। খাবারে অনিয়ম এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের সমস্যা, গাঁটের ব্যথার মতো সমস্যা বেড়ে যায়। কেউ কেউ ঠিকমতো খেতে চান না, আবার কেউ অতিরিক্ত মিষ্টি বা ফাস্টফুড খেয়ে ফেলেন। এ থেকে মুক্তি পেতে সঠিক ডায়েট অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি।
বয়স্কদের ডায়েট পরিকল্পনা
১. প্রাতরাশ: দিনের শক্তির মূলভিত্তি
সকালে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে প্রাতরাশ সেরে নেওয়া জরুরি। এতে থাকতে পারে:
- দুধ-কর্নফ্লেক্স
ডালিয়ার খিচুড়ি
সবজি দিয়ে ওটস
দুধ হজমে সমস্যা হলে রুটি ও সবজি বা মরসুমি ফল খাওয়াতে পারেন। ফল চিবিয়ে খেতে সমস্যা হলে ফলের রস খেতে দিন।
২. মধ্যাহ্নভোজন: পুষ্টিকর ও হালকা খাবার
মধ্যাহ্নভোজে পাতলা ঝোল থাকা ভাল। ঝোলের স্বাদ বাড়াতে গোলমরিচ গুঁড়ো, লেবুর রস বা ধনেপাতা ব্যবহার করা যায়। তেলের পরিমাণ কম এবং কাঁচা নুন এড়িয়ে চলুন। প্রোটিনের জন্য মাংস বা মাছের পাশাপাশি ডাল রাখতে পারেন।
৩. টিফিন ও সন্ধ্যার খাবার
সন্ধ্যার খাবার হালকা এবং সহজপাচ্য হওয়া উচিত।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের জন্য বিভিন্ন বাদাম ও শুকনো ফল
টক দই
৪. সুষম ডায়েটের উপাদান
বয়স্কদের খাদ্যে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সঠিক মাত্রায় থাকা জরুরি।
প্রাণিজ প্রোটিন: ডিম, মাছ বা পনির
শাকসবজি: আয়রন সমৃদ্ধ সবুজ শাক বেশি করে দিন।
শুকনো ফল ও খেজুর: হিমোগ্লোবিন বাড়াতে দিনে ১-২টি খেজুর রাখুন।
- গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস
রান্নায় চিনি কম ব্যবহার করুন।
বেশি মশলা বা অতিরিক্ত তেল এড়িয়ে চলুন।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে বলুন।
শরীরচর্চা এবং হালকা হাঁটাহাঁটি করতে উৎসাহ দিন।
সারমর্ম
শীতকালে বয়স্কদের সুস্থ রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত যত্ন অত্যন্ত প্রয়োজন। তাঁদের ডায়েটে পুষ্টিকর উপাদান রাখার পাশাপাশি সহজপাচ্য খাবারের দিকেও নজর দিন। সুস্থ ও নিরোগ থাকতে নিয়ম মেনে চলা এবং সুষম ডায়েট নিশ্চিত করুন।