বাবার বয়সী ঠিকাদারকে চড় মারলেন এসিল্যান্ড, বললেন ‘মীমাংসা হয়ে গেছে’
বাংলাদেশ

বাবার বয়সী ঠিকাদারকে চড় মারলেন এসিল্যান্ড, বললেন ‘মীমাংসা হয়ে গেছে’

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বাবার বয়সী এক ঠিকাদারকে প্রকাশ্যে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্তের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই এসিল্যান্ডের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের জামিলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মাঝবাড়ি-রাধাগঞ্জ সড়কের জামিলা নামক স্থানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ চলছে। ওই কাজের ঠিকাদার আব্দুস সামাদকে খাল থেকে মাটি তোলা নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে চড় মারেন কোটালীপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্ত।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল আজম, উপসহকারী প্রকৌশলী মনজুরুল হক ও নির্মাণশ্রমিকসহ অর্ধশতাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এ সময় স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হলে প্রতীক দত্ত দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

শ্রমিক আবুল বাশার বলেন, ‘আমরা ব্রিজ নির্মাণের সময় রাস্তার মাটি কেটে খালের কিনারায় রাখি। এখন ব্রিজের কাজ শেষ হওয়ায় ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়কের জন্য সেই মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে খাল থেকে উত্তোলন করছিলাম। এ সময় এসিল্যান্ড স্যার আসেন। তিনি ঠিকাদার সামাদকে খাল থেকে মাটি উত্তোলন নিয়ে বকাঝকা করে কাজের সাইড থেকে চলে যেতে বলেন। ঠিকাদারের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে এসিল্যান্ড স্যার উত্তেজিত হয়ে ঠিকাদারের গালে চড় মারেন। ঠিকাদার পড়ে যান। এতে তার পায়ের আঙুল কেটে যায়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

জামিলা গ্রামের হান্নান শেখ বলেন, ‘এসিল্যান্ড স্যার যে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তা আসলেই ন্যক্কারজনক। আমরা তার কঠোর শাস্তি চাই।’

ঠিকাদার আব্দুস সামাদ বলেন, ‘এসিল্যান্ড স্যার আমার সঙ্গে যা করেছেন বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের ওপর মহল থেকে আমার শ্বশুর ইউনুস শরিফের সঙ্গে মীমাংসার দিকে গেছে। আমাকে কিছু বলতে বলিয়েন না। ওপর মহল থেকে ঝামেলায় আছি।’

ইউনুস শরিফ বলেন, ‘আমার জামাইকে চড় দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে এসিল্যান্ড মঙ্গলবার রাতে আমার কাছে ভুল স্বীকার করেছেন। বিষয়টির মীমাংসা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্ত বলেন, ‘আমার সঙ্গে ঠিকাদার আব্দুস সামাদের কথা-কাটাকাটি হয়েছে। ঠিকাদারকে চড় মারার কোনও ঘটনা ঘটে নাই। যে ঘটনা ঘটেছে তা মীমাংসা হয়ে গেছে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহীনুর আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কোনও অভিযোগও পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।’

এর আগে, চলতি বছরের মার্চে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় বাবার বয়সী এক ব্যবসায়ীর মুখে ‘হোল্ড অন’ শুনে ব্যাপক চটে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। এ সময় তাদের দুজনের বাহাসের ভিডিও নেটমাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়। এ নিয়ে তখন পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ওই ভিডিওতে প্রতীক দত্তের সঙ্গে কথা বলা ওই আমদানিকারক ‘এ বি দাশ অ্যান্ড ট্রেডিং কোম্পানি’র স্বত্বাধিকারী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্রতি কেজি এলাচি আমদানিতে ১৪৫০ টাকা খরচ পড়লেও ৩১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছিলেন। যদিও এর পেছনে নানা কারণ দেখান ওই আমদানিকারক। তবে তার সেসব যুক্তি ধোপে টেকেনি। কেনা দামের প্রায় দ্বিগুণ বেশি দামে এলাচি বিক্রি করায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

Source link

Related posts

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলারসহ ২০ জেলে নিখোঁজ

News Desk

রাতে হতদরিদ্র, সকালেই ৩৫ লাখ টাকার সম্পদের মালিক!

News Desk

মোংলা বন্দর থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টায় ঢাকায়

News Desk

Leave a Comment