পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পিআইএ) তাদের ৩০ টি বিমানে অর্ধেক কর্মী দিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এসব বিমানে কর্মরত ১৪ হাজার কর্মচারীর অর্ধেককে আপাতত বাধ্যতামুলক ছুটিতে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি যেসব রুট এক দশকেরও বেশি সময় ধরে খারাপ অবস্থায় আছে সেগুলোকে লাভজনক অবস্থায় নিতে নতুনভাবে সব কিছু পুনর্গঠন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উপদেষ্টা ইশরাত হুসেন বলেছেন, পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা এই পুনর্গঠনের ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে।
এর আগে পিআইএয়ের কর্মচারী এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলগুলো এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল। ইশরাত হুসেইন জানান, এই মুহূর্তে, আমিরাত, এতিহাদ বা কাতার বিমান সংস্থার মতো হয়ে ওঠার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। তারা চান, ২০২৩ সালের মধ্যে পিআইএকে লাভজনক একটা অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে।
গত বছর পাকিস্তানের বিমানমন্ত্রী বলেছিলেন, দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ পাইলট ভুয়া লাইসেন্সধারী। তার এ বক্তব্যের পর করোনার বিধিনিষেধ ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশে পিআইএয়ের বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া করাচিতে একটি দুর্ঘটনায় ৯৭ জন নিহত হওয়ায় তদন্তকারীরা পিআইএর বিমানের ক্রুকে দোষোরোপ করেছিল।
পিআইএ সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে পিআইএ আরও খারাপ অবস্থায় পড়ে। অনেক রুট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকী হজ্জ্বযাত্রার সময়ও পিআইয়ের বিমানগুলো বাদ পড়ে। এর ফলে ২০২০ সালে বিমান খাতে ৩৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন রুপি (২৭৭ মিলিয়ন ডলার) লোকসান হয়।
করোনা মহামারির কারণে বিমান সংস্থাগুলি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গোটা বিশ্বে হাজারো মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশেন জানিয়েছে, ভাইরাসজনিত কারণ এবং পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী ২০২১ সালে বিমান সংস্থাগুলোর প্রায় ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লোকসান হবে।
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত পিআইয়ের ৩০ টি বিমান ছিল। এর মধ্যে বোয়িং বিমান, এয়াবাস ও এয়াক্রাপ্ট রয়েছে। ইশরাত হুসেইন বিমানের এই বহরে পরিবর্তন বা পুনর্গঠনের কথা বলেছেন। তবে ঠিক কি পরিবর্তন আনা হবে তা জানাননি। তবে হুসেইন এর আগে বলেছিলেন, টোকিও এবং ম্যানিলার মতো কয়েকটি গন্তব্যে আর চলবে না পিআইএয়ের বিমান।
ব্যাংকের সুদ পরিশোধ করার জন্য পাকিস্তান বিমান সংস্থা জুনের মধ্যে বিমানের কর্মী ছাটাইসহ আরও কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এয়ারলাইন্সের খবরে বলা হয়েছে, প্রায় ২ হাজার কর্মচারীকে ইতিমধ্যে স্বেচ্ছা অবসর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাটারিং এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো নন-কোর সেক্টরগুলোতে আউটসোর্স করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর হুসেইন।