ফ্যাসিবাদের পক্ষে লিখলে কলম ভেঙে দেবো, সমর্থন করলে বিপক্ষে থাকবো
বাংলাদেশ

ফ্যাসিবাদের পক্ষে লিখলে কলম ভেঙে দেবো, সমর্থন করলে বিপক্ষে থাকবো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘জানুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত সরকারকে সময় দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণার মাধ্যমে জুলাই আন্দোলনকে দালিলিক স্বীকৃতি দেবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনও পদক্ষেপ আমরা দেখিনি। আমরা যাদের উপদেষ্টা বানিয়েছি আমাদের প্রতিনিধি হয়ে যারা সরকারে গিয়েছে, তাদের যদি কোনও কারণে ঘোষণাপত্র দিতে রাষ্ট্রীয় কোনও বাধা থাকে, সেটি আপনারা জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। আর যদি সেটিতে ব্যর্থ হোন উপদেষ্টার কাতার থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসুন। আমরা যেভাবে একসঙ্গে হাসিনার পতন ঘটিয়েছি দরকার হলে সেভাবে আবার ঘোষণাপত্র আদায় করে নেবো।’

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘সর্বপ্রথম আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে। যেসব টকশোজীবী, মিডিয়াপাড়া, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীরা আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য সরব হয়েছেন, তারা ফ্যাসিবাদের তেল, নুন, ঘি খেয়ে এতদিন ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব কলম লিখবে আমরা সেই কলমগুলো ভেঙে দেবো, যেসব মিডিয়া কথা বলবে সেসব মিডিয়ার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান থাকবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মগজ তাদের চিন্তা প্রসারিত করবে তাদের চিন্তার বিপক্ষে আমাদের শক্ত অবস্থান থাকবে। আপনারা যদি তরুণ প্রজন্মের কথা বুঝতে ব্যর্থ হন আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে পরবর্তীতে যারা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আসবে তাদেরও একই পরিণতি হবে।’

আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হবে কিনা সেটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ৫ আগস্ট হয়ে গেছে। সেই সিদ্ধান্ত নতুন করে নেওয়ার কিছুই নাই। এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি পুনর্বাসিত হবে কিনা সেটা এখন প্রাসঙ্গিক আলাপ নয়। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আবার যারা তাদের পুনর্বাসনের কথা বলবে, আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না বলবে আমরা ধরে নেবো গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের জাহিলিয়াতের রাজনীতি কায়েমে তাদেরও ইন্ধন ছিল।’

বিপ্লবের দালিলিক স্বীকৃতির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আজকে বিপ্লবীদের রাস্তায় রাস্তায় পথসভা করতে হচ্ছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পরিণতি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের শাসন নিষিদ্ধ হবে কিনা সেটি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল ৫ আগস্ট। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজকে বিপ্লবীরা এই বিপ্লবের লিখিত দালিলিক স্বীকৃতির জন্য যেখানে অপেক্ষা করছে, অন্যদিকে রাষ্ট্রযন্ত্র এই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্নভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

তরুণদের মাইনাস করার কথা উল্লেখ করে এ ছাত্রনেতা বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে অতীতে যারা রাজনীতি করেছে তাদের অভিজ্ঞতা ও তরুণ প্রজন্মের ভয়হীন মনোভাবের সংমিশ্রণে। কিন্তু এখানে যদি তরুণদের মাইনাস করার কোনও ধরনের চিন্তা থাকে, গণঅভ্যুত্থানের একক অ্যাজেন্ডার প্রবণতা আমরা দেখতে পাচ্ছি।’

সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা শেষে শহরের চাষাঢ়া এলাকা থেকে মিশনপাড়া পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ করে গণসংযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা। পরে সেখান থেকে গাড়িযোগে সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন তারা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুলাহ আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদসহ মুখপাত্র আরেফীন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী, তামিম আহমেদ প্রমুখ।

Source link

Related posts

দেশে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২৬৪ জনের মৃত্যু

News Desk

২ সপ্তাহ পর রোদের দেখা, বোরো শুকানোয় ব্যস্ত কৃষক (ফটোস্টোরি)

News Desk

মহামারিতে উৎপাদন-রপ্তানি অব্যাহত রাখা বড় অর্জন: সালমান এফ রহমান

News Desk

Leave a Comment