সরবরাহ না থাকার অজুহাতে দেড়মাস ধরে দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে দোকানে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। দুয়েকটি দোকানে গোপনে মিললেও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাড়তি মূল্য নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তেল না পাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মানুষ। রমজানের আগে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের। এদিকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাড়তি দামে তেল বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
হিলি বাজারে তেল কিনতে আসা হায়দার আলী বলেন, হাফ, এক, দুই বা পাঁচ লিটারের কোনও বোতলজাত তেল নেই। আবার কোনও কোনও দোকানে তেল চাইলে এর সঙ্গে আটা, ময়দা, সুজি বা চাল নিতে বলছে- তো আমরা তো তেল কিনতে আসছি আমার তো ওইসব প্রয়োজন নেই। আপাতত খোলা তেল কিনছি। কিন্তু সেই তেলের দামও বেশি। সামনে রমজান, ওই সময়ে তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সরকারের বসে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। চাহিদামতো তেল পেলে ও দাম কিছুটা কম পেলে আমাদের সুবিধা হবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দোকানে প্যাকেট তেল নেই। এখন দোকানিরা খোলা তেল নিতে বলছে। খোলা তেল প্রতি লিটার ১৭৫ টাকা ধরছে। আর কিছু কিছু দোকানে প্যাকেট তেল বিক্রি হচ্ছে। তবে গায়ে লেখা দামের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি।
অপর ক্রেতা নাজমা আকতার বলেন, বাজারে কোনও দোকানেই বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা সয়াবিন পাওয়া গেলেও দাম বেশি তাই বাধ্য হয়ে কম দামের পামঅয়েল তেল কিনে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা গরিব, দাম যেটার কম সেটাই খাই।
হিলি বাজারের তেল বিক্রেতা ইনতাজ আলী বলেন, আমরাও বোতলজাত সয়াবিন পাচ্ছি না। কোনও ডিলার বা কোম্পানির প্রতিনিধি আমাদের সয়াবিন তেল দিচ্ছে না। কোম্পানি নাকি তেল ডেলিভারি দিচ্ছে না- কোম্পানির প্রতিনিধিরা এমনটা বলছেন। অর্ডার কেটে টাকা দিয়ে রাখলেও তেল দিচ্ছে না।
অপর দোকানি মাহবুব হোসেন বলেন, কোম্পানিগুলো তেল স্বাভাবিকভাবে যে চাহিদা সেই মোতাবেক সরবরাহ করছে না। কোম্পানি বলছে, সরকার খোলা তেলের মূল্য বাড়ালেও বোতলজাত সয়াবিনের মূল্য বাড়াচ্ছে না- যার কারণে ঠিকমতো তেল দিচ্ছে না। দিলেও সঙ্গে বাধ্যতামূলক চাল, সুজি, আটা, সরিষার তেল দিচ্ছে। তারপর কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ঠিকমতো আসছেই না। কিন্তু কাস্টমারদের আমরা সেভাবে তেল দিতে পারছি না।
অপর দোকানি আনোয়ার হোসেন বলেন, কোম্পানির লোকেরা তেল আসেনি আসবে এভাবে বলছে। দেড় মাস ধরে তেল দিচ্ছে না। হঠাৎ তেল দিলেও সঙ্গে অন্য পণ্য বাধ্যতামূলক নিতে হচ্ছে। বোতলজাত তেল ২০০ টাকা হয়ে গেছে। হাফ লিটার ১০০।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় বলেন, প্যাকেটজাত তেলের কিন্তু মূল্য নির্ধারণ করে তার গায়ে লেখা থাকে- সেই মূল্যেই পণ্যটি বিক্রি করতে হবে। তার বাইরে বাড়তি দামে বিক্রির কোন সুযোগ নেই। যদি বাড়তি দাম নেওয়ার কোনও অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানাসহ যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সেটি নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে তেল নিয়ে সংকট তৈরির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।