করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরনের বিরুদ্ধে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকা এবং ফাইজারের করোনা টিকা বেশ ভালো কার্যকরী। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের ওই ধরনটি বি১.৬১৭.২ নামে পরিচিত। ব্রিটিশ সরকারের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকা এবং ফাইজারের করোনা টিকা বি১.৬১৭.২ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৮০ শতাংশ কার্যকরী। এছাড়া এই টিকা দুটি একই রকম ভাবে ব্রিটেনের কেন্টে প্রথম শনাক্ত হওয়া বি.১১৭ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও সমান কার্যকর।
করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে ভারত। দৈনিক আড়াই লাখ নতুন সংক্রমণের পাশাপাশি দেশটিতে দৈনিক মৃত্যু রয়েছে চার হাজারের আশেপাশে। বিশ্লেষকদের ধারণা, ভারতে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির পেছনে রয়েছে দেশটিতে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ওই নতুন ধরনটি।
তবে করোনা প্রতিরোধে ভারতে যে টিকাগুলো দেওয়া হচ্ছে তার মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন অন্যতম। চলতি বছরের শুরু থেকে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ককে এই টিকাই দেওয়া হচ্ছে। ভারতে এই টিকা প্রস্তুত করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকা এবং ফাইজারের করোনা টিকার দু’টি ডোজ ভাইরাসের বি.১১৭ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৮৭ শতাংশ কার্যকরী। করোনার এই ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম ইংল্যান্ডের কেন্ট এলাকায় খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। শনাক্তের পর থেকে দ্রুত মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ছিল এই ভ্যারিয়েন্ট।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে প্রকাশিত পিএইচই’র সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভাইরাসের বি১.৬১৭.২ ধরনের সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই কম। গত সপ্তাহে দেশটিতে ভারতীয় ধরনে যেখানে ৩ হাজার ৪২৪ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে এই সপ্তাহে সংক্রমণের সংখ্যা ২ হাজার ১১১ জন।
সাঙ্গার ইন্সটিটিউটের কোভিড-১৯ জেনোমিক্সের পরিচালক ড. জেফরি ব্যারেট বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, উন্নতি হচ্ছে। সপ্তাহের পর সপ্তাহ কেউ লক্ষ্য করলে তা বুঝতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ব্রিটেনে শনাক্ত ভাইরাসের কেন্ট ধরনের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম করোনার ভারতীয় ধরন। খুব খারাপ পরিস্থিতিতে তা ৫০ শতাংশে গিয়ে ঠেকতে পারে। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনই নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
কিছুদিন আগে পর্যন্ত করোনার ভারতীয় ধরন নিয়ে চিন্তায় ছিলেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা। জয়েন্ট কমিটি অন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনিসেশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অ্যান্টনি হার্নডেন বলেছিলেন, ভারতে আবিষ্কৃত ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এটি কত দ্রুত মানুষের শরীরে প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে এখনও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে সর্বশেষ গবেষণার পর সম্ভবত অনেকটাই স্বস্তিতে থাকবে মানুষ।