দিনাজপুরসহ চিরিরবন্দরের লিচু বৈশিষ্টের কারণে অন্য এলাকার লিচুর চেয়ে আলাদা। গোলাপী এই লিচু মুখে দিলেই ঘ্রাণ আর মিষ্টি রসে মুখ ভরে যায়। দেশ ব্যাপী খ্যাত দিনাজপুরের লিচুতে এখন মেতে উঠেছে পুরো জেলা। এবারে চিরিরবন্দরে গড়ে উঠেছে প্রায় ১২ শত লিচু বাগান। লিচু বাগান গুলোতে প্রতি বছর খরচ হয়না এবং অল্প পরিচর্যায় প্রতি বছর মোটা অঙ্কের অর্থ আয় হয় বলে অনেকেই লিচুর বাগান করেছেন। চলতি বছর চিরিরবন্দর উপজেলায় ৫ শত ১১হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে। চিরিরবন্দরের প্রতিটি বাড়ির বসত ভিটায় বা আঙ্গিনায় গাছে গাছে লাল লিচুতে রঙিন হয়ে গেছে পুরো উপজেলা। পুরো উপজেলা জুড়ে এখন গাছ ভর্তি লিচু।
থোকায় থোকায় বাহারী লিচু সবার মন কাড়ছে।সেই সাথে লিচুর মৌ মৌ গন্ধ আর ছোট ছোট পাখিদের কিচির-মিচির শব্দে এলাকা মুখরিত। বাগান থেকে লিচু তোলার শেষ সময় পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে লিচু চাষীরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলে অনেকে মনে করছেন।এবারও গাছে মুকুল আসার আগেই খুচরা ব্যবসায়ীরা অনেক লিচু গাছ আগাম কিনেছেন। এছাড়াও পাকা লিচু রক্ষার জন্য বাগান মালিকরা সারা রাত সজাগ থেকে বাগান পাহাড়া দিচ্ছেন।চিরিরবন্দর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত। লিচু সুস্বাদু ও আগাম জাতের হওয়ায় চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিটি লিচুই গোলাপী রঙের, শাঁস মোটা ও রসে ভরপুর। খেতে অনেক সুস্বাদু ও গন্ধ অতুলনীয়।
চিরিরবন্দর সাতনালা লিচু চাষী মো: আব্দুল রহমান জানান, দিনে বিভিন্ন পাখি ও কিশোর-কিশোরীদের অত্যাচার এবং রাতে বাদুরের উপদ্রব থেকে লিচু রক্ষা করতে দিনরাত তাদের বাগান পাহাড়া দিতে হচ্ছে। লিচুর পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা মো: রহিম ইসলাম জানান, বর্তমানে পুরো দমে গাছ থেকে লিচু পারার কাজ ও বিক্রি শুরু হয়েছে। গত বছর ১০০ লিচুর দাম ছিল ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। এবার লিচুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে।পাইকাররা প্রতি বছর এখান থেকে লিচু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে থাকে। অন্যান্য এলাকার লিচুর দিনাজপুরের লিচুর স্বাদ আলাদা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন এসে ভিড় জমায় লিচু কেনার জন্য। গাছে মুকুল আসার আগেই গাছের মালিককে অগ্রিম টাকা দিয়ে লিচু গাছ কিনে নিয়ে যায় স্থানীয় ব্যাপারীরা।