শুনতে অবিশ্বাস্যই লাগবে। কিন্তু এর মধ্যে একবর্ণও মিথ্যা নেই। সত্যি এমনটা ঘটেছে। মোট ১৮ হাজার রুপি দিয়ে টিকিট কেটে এমিরেটস বিমানে একাই মুম্বাই থেকে দুবাই গেলেন এক যাত্রী। বোয়িং-৭৭৭ এয়ারক্র্যাফটটিতে বসার আসন ৩৬০টি। কিন্তু গত ১৯ মে ভবেশ জাভেরি নামে ৪০ বছর বয়সী ভদ্রলোকের বিমানে কোনো সহযাত্রী ছিলেন না।
গত ২০ বছর ধরে দুবাইয়ের বাসিন্দা জাভেরি। মুম্বাই-দুবাই ফ্লাইটে চেপেছেন ২৪০ বার। কিন্তু তার এমন অভিজ্ঞতা এবার প্রথম। তিনি বলেছেন, বিমানে পা রাখতেই বিমানবালার হাততালি দিয়ে স্বাগত জানালেন। এতবার বিমান চড়েছি। কিন্তু সেরা ফ্লাইট এটাই।
বিমান ক্র্রু, কম্যান্ডারের সঙ্গে খোশগল্প করে দারুণ সময় কেটেছে বলেই জানিয়েছেন জাভেরি। কম্যান্ডার তাকে গোটা বিমানটা ঘুরিয়ে দেখান। ১৮ জাভেরির লাকি সংখ্যা। তাই ওই নম্বরের আসনটাই তিনি চেয়েছিলেন। আর তার অনুরোধও রক্ষা করেছেন বিমান কর্তৃপক্ষ।
জাভেরি বলেছেন, ‘বিমানের ভিতরে পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে বারবার আমার নাম করেই ঘোষণা হচ্ছিল। মিস্টার জাভেরি, শক্ত করে সিট বেল্ট বেঁধে রাখুন। মিস্টার জাভেরি আমরা অবতরণের জন্য তৈরি হচ্ছি। বিমান মাটি ছোঁয়ার পর আমি হেলতে দুলতে কনভয়েতে বেল্টে পড়ে থাকা একমাত্র লাগেজটা তুলে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।
মহামারি করোনাভাইরাসজনিত ভ্রমণ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারত থেকে যেতে পারেন একমাত্র সেদেশের নাগরিকরা, সংযুক্ত আরব আমিরাতরে গোল্ডেন ভিসাধারীরা ও কূটনৈতিক মিশনের সদস্যরা। তাই ফ্লাইট চলাচলে এ দুরবস্থা চলছে।
জাভেরির গোল্ডেন ভিসা আছে, নির্ধারিত যাত্রার দিনের এক সপ্তাহ আগে ১৮ হাজার রুপিতে ইকোনমি ক্লাসের টিকিট কেটেছিলেন তিনি। জাভেরি বলেন, ‘সাধারণত বিজনেস ক্লাসের টিকিটই কাটি। কিন্তু এবার ফ্লাইটে সামান্য কয়েকজন যাত্রী থাকবেন এমনটা ভেবেই টিকিট করি। কিন্তু বিমানবন্দরে পৌঁছাতেই টিকিটে নির্দিষ্ট দিনের উল্লেখ না থাকায় ভেতরে ঢুকতে দিতে দিচ্ছিলেন না নিরাপত্তারক্ষীরা।
পরে এমিরেটসে ফোন করে জানতে পারেন, তিনিই একমাত্র যাত্রী, তার জন্যই অপেক্ষা করছেন ইকে ৫০১ ফ্লাইটের স্টাফরা। এমনটা শোনার পর খুশির সীমা ছিল না জাভেরির।
জাভেরি বলছেন, আমায় তখন আর পায় কে। গত জুনেই দুবাই থেকে মুম্বাই একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে চেপেছিলাম। ১৪ সিটারের বিমানে ৯ জন সহযাত্রী ছিলেন। কিন্তু এই অভিজ্ঞতার সঙ্গে তার কোনও তুলনাই চলে না। এই অভিজ্ঞতা টাকা দিয়ে কেনা যায় না!