আফগানিস্তান থেকে শুক্রবার দূতাবাস গুটিয়ে নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দূতাবাস এবং এর কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটি। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার শুরু করার পর অস্ট্রেলিয়া এ সিদ্ধান্ত নিল। খবর এএফপির।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ ভাবছে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি ছাড়া আফগানিস্তানে কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা কতটা নিরাপদ হবে।
কাবুল ভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক সায়েদ নাসির মুসাউই এএফপিকে বলেন, তার ধারণা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও কয়েকটি বিদেশি দূতাবাস আফগানিস্তান থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নেবে।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলো এই সরকারের ধারাবাহিকতা এবং টিকে থাকার বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।’
আফগান সরকার জোর দিয়েছিল যে তারা তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে। কিন্তু গত কয়েক মাসে দেশটির গ্রামাঞ্চলে তালেবানরা ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ অর্জন করতে পেরেছে। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হচ্ছে।
তালেবানরা বর্তমানে আফগানিস্তানের প্রায় সব প্রদেশেই রয়েছে। হাজার হাজার জেলার কোথাও কোথাও সম্পূর্ণ আবার কোথাও কোথাও আংশিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তারা কয়েকটি শহর কার্যকরভাবে ঘেরাও করতে পেরেছে। ১৯৯৬ সালেও প্রায় একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যখন আফগানিস্তানের অধিকাংশ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল তালেবানরা।
ধারণা করা হচ্ছে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী পুরোপুরি চলে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে তালেবানরা। এর পরপরই হয়তো তারা ক্ষমতা উদ্ধারের জন্য পূর্ণ শক্তি দিয়ে আঘাত করবে।
দূতাবাস বন্ধ করে দেয়ার ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, ‘সেখানে ভীষণ অনিশ্চিত নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’
তালেবান অবশ্য বিদেশি কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে। এএফপিকে তালেবান বলেছে, বিদেশি দূতাবাসগুলো আগের মতোই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু তালেবানের এই কথায় ভরসা করতে পারছে না অনেক দেশই।
১৯৯৬ সালে তালেবান যখন কাবুল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়, তখন দেশটির জাতিসংঘের কার্যালয়ে ঢুকে তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট নাজিবুল্লাহ আহমাদজাইকে ধরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
এর দুই বছর পর আফগানিস্তানে থাকা ১০ জন ইরানি কূটনীতিককে হত্যা করে তালেবানরা।