Image default
আন্তর্জাতিক

হৃদযন্ত্রের সমস্যার সঙ্গে ফাইজারের টিকার যোগ আছে: ইসরায়েল

ইসরায়েলে ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকা ডোজ গ্রহণ করার পর যারা মায়োকার্ডিটি বা ‘হৃৎপিণ্ডের আকার বৃদ্ধি’ সমস্যার মুখে পড়েছেন, তাদের এই সমস্যার সঙ্গে এই টিকার ডোজের সম্পর্ক পেয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশেষ করে ১৬ থেকে ১৯ বছর বয়সী টিকা গ্রহণকারী যারা মায়োকার্ডিটি বা হৃৎপিণ্ডের আকার বৃদ্ধি সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই টিকার ‘সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতা’ রয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্তে উঠে এসেছে।

ফাইজার অবশ্য দাবি করেছে, মায়োকার্ডিটির সমস্যার সঙ্গে তাদের করোনা টিকার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে করছে না ফাইজার-বায়োএনটেক কর্তৃপক্ষ। কারণ, দেশটির যে পরিমাণ মানুষকে এই করোনা টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে, সেই তুলনায় এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ‘নিতান্তই নগন্য’।

গত ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করে ইসরায়েলের সরকার। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনা প্রতিরোধী টাস্কফোর্সের কমিশনার ন্যাচম্যান অ্যাশ জানিয়েছেন, কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকার দুই ডোজ গ্রহণ করেছেন।

তাদের মধ্যে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত মায়োকার্ডিটিতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২৭৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগেরই বয়স ১৬ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে।

এই সমস্যা দেখা দেওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ডিসেম্বরে তিনজন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি সেই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রতিবেদনের বিষয়ে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘১৬ থেকে ১৯ বছর বয়সী যেসব যেসব ব্যক্তি মায়োকার্ডিটিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের এই সমস্যার সঙ্গে ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকার সম্ভাব্য যোগসূত্র পাওয়া গেছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মায়োকার্ডিটিতে আক্রান্তদের শতকরা ৯৫ জনের দেহেই এই সমস্যার মৃদু উপসর্গ লক্ষ্য করা গেছে এবং হাসপাতালে ভর্তির চার দিনের মাথায় তারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

তবে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এখনও বিশ্বাস করে, এই টিকায় ঝুঁকির চাইতে উপকার অনেক বেশি। তাই আগামী সপ্তাহ থেকে দেশটিতে শুরু হতে যাওয়া ১২ থেকে ১৫ বছরবয়সীদের টিকাদান কর্মসূচিতেও এই টিকাটি ব্যবহার করার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের বিবেচনায় রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে মঙ্গলবারের বিবৃতিতে।

এদিকে, পৃথক এক বিবৃতিতে ফাইজার জানিয়েছে, ইসরায়েলের দেখা দেওয়া এই সমস্যার বিষয়ে ফাইজার-বায়োএনটেক কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন; কিন্তু কোম্পানি দু’টির কর্তৃপক্ষ এখনও বিশ্বাস করে তাদের টিকার সঙ্গে এই সমস্যার প্রত্যক্ষ্য কোনো যোগাযোগ নেই। টিকা নেওয়ার পর যারা এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন, তারা অন্য কোনো কারণে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করে ফাইজার-বায়োএনটেক।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিডিসি ইসরায়েলের দেখা দেওয়া মায়োকার্ডিটি সমস্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, এ বিষয়ে যেন আরও অনুসন্ধান ও তদন্ত অব্যাহত রাখা হয়।

গণটিকাদান কর্মসূচিতে বিশ্বের অন্যতম সফল দেশ হিসেবে ধরা হয় ইসরায়েলকে। দেশটিতে বর্তমানে দৈনিক সংক্রমণের হার প্রায় শূন্যের কোঠায় এবং বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা মাত্র ৩৪০ জন। এ পর্যন্ত দেশের মোট জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশকেই টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে দেশটির সরকার।

Related posts

বহুমেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব কেন জরুরি

News Desk

সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও জয়ী আসাদ

News Desk

এবার নোবেল পেলেন ৩ অর্থনীতিবিদ

News Desk

Leave a Comment