মাঠে মাঠে সোনালি ধান। আবহাওয়া অনুকূল আর কোনো রোগ-বালাই না থাকায় ধান অনেক ভালো হয়েছে। খেতে যেন প্রতিটি ধানের শীষ সোনার মতো জ্বলছে। বুধবার (০২ জুন) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার (ঠাকুরগাঁও-বালিয়াডাঙ্গী) সড়কের ভেলাজানে ধান কাটার সময় এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন কৃষক জয়নাল উদ্দিন। শুধু জয়নাল উদ্দিন নয়, তার মতো জেলার অনেক চাষিই আনন্দে নিজের ধান কাটছেন। স্বল্প খরচে অনেক ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। মহামারি করোনায় দীর্ঘ দিন ধরে মুখে হাসি না থাকলেও ধানের বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
কৃষি অধিদফতরের তথ্য মতে, এবার জেলায় ৫৮ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে চাষ হয়েছে ৫৮ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯০৭ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত জেলায় ৮৫ শতাধিক বোরো ধান কর্তন হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলনে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা কৃষি অধিদফতরের। সরেজমিনে দেখা যায়, আনন্দের সঙ্গে ধান কাটছেন পুরুষ-নারী। কেউ ধান কাটছেন, কেউ সেই ধান তুলে নিয়ে যাচ্ছেন মাড়াইয়ের জন্য। মাড়াই শেষে বস্তা ভর্তি ধান মাঠ থেকে চলে যাচ্ছে কৃষকের উঠানে। কৃষকের আনন্দ যেন ঈদের থেকে কম নয়।
কথা হয় কৃষক বাবুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। ফলন অনেক বেশি হয়েছে। গতবার করেছিলাম কিন্তু তেমন ফলন ছিল না। এবারে অল্প খরচে অনকে বেশি লাভবান হব আমরা। বিঘা প্রতি ১০-১৫ হাজারের মতো লাভ হবে বলে আশা করছি। আরেক কৃষক হারুনুর রশিদ বলেন, ৬ বিঘার মতো জমিতে বোরো ধান করেছি। ফলনে আমিসহ আমার পরিবারের সকলে অনেক খুশি। এবারে বেশি ফলন হওয়ার কারণ আবহাওয়া ভালো ছিল। ধানের প্রতিটি শীষ যেন সোনার মতো জ্বলছে। ধানের এমন বাম্পার ফলন দেখে মন জুড়ে যায়।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, এবার জেলায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেক বেশি ফলন হবে। সেইসঙ্গে এবার কৃষকরা বোরো ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামীতে বোরো ধানসহ যেকোনো ফসল চাষে কৃষকরা অনেক বেশি উৎসাহিত হবেন।