বিশ্বে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতাদের উচিত আরও কঠোর ও শক্তিশালী নীতি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগিয়ে যাওয়া। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলন শুরুর আগে রোববার (১৩ জুন) পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ একথা বলেন।
কানাডার সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, চীনের সামরিক বাজেট বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দেশটির নৌবাহিনী সারা বিশ্বে সবচেয়ে বড়। দেশটি নিত্যনতুন সামরিক অস্ত্র ও সরঞ্জামের ওপর অব্যাহত ভাবে বিশাল বিনিয়োগ করেই চলেছে। এর মাধ্যমে মূলত আমাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে। তাই দেশটিকে মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগিয়ে যেতে হবে।
স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘চীনের নীতি ও মূল্যবোধ আমাদের মতো নয়। হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের কীভাবে দমন করা হয়েছে সেটা আমরা দেখেছি। একইসঙ্গে চীনের পশ্চিমাঞ্চলে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপরও বেইজিংয়ের কঠোর নীতি ও নিপীড়ন আমরা দেখেছি। এর পাশাপাশি যেভাবে নিজ দেশের মানুষের ওপর নজরদারি চালাতে শি জিনপিং প্রশাসন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, সেটা আমরা এর আগে কোথাও দেখিনি।
আর তাই এসব কিছু বিবেচনা করে চীনকে মোকাবিলায় শক্তিশালী ও কঠোর নীতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া ন্যাটোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের মতো সাধারণ সমস্যা সমাধানে সকল দেশেরই চীনের সঙ্গে কাজ করা উচিত বলে সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেন ন্যাটো মহাসচিব।
এর আগে অন্য অনেক ইস্যুর পাশাপাশি চীন এবং বিশ্বে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলার উপায় নির্ধারণে ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালে বৈঠকে বসে বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলোর জোট জি-৭। বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে অর্থাৎ শনিবার আলাপ-আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল বিশ্বে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলা।
অবকাঠামো এবং অন্যান্য কারিগরি সাহায্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে চীন যেভাবে তাদের প্রভাব বলয় বাড়াচ্ছে তার মোকাবিলায় বিকল্প অভিন্ন একটি কৌশল নিতে নতুন একটি পশ্চিমা জোট প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছে জোটের রাষ্ট্রনেতারা।
শনিবার চীন ইস্যুতে হওয়া জি-৭ এর ওই বৈঠকে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে সদস্য দেশগুলোর নেতাদের প্রতি সেসময় আহ্বান জানান তিনি। রোববার সেই একই প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ।