করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যশোরের বেনাপোল ও শার্শা উপজেলায় বিকেল ৫টার পর সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনাসহ ১২ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুন) এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ বিধিনিষেধ জারি করা হয়। শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর আলিফ রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঘরের বাইরে এবং জনসমক্ষে সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান করতে হবে। গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। বিকেল ৫টার পর সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।’
ইউএনও বলেন, ‘মোটরসাইকেলে একজন ও ইজিবাইকে দুজনের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। সব ধরনের গণজমায়েত, সভা-সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হোটেল রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া যাবে না এবং চায়ের দোকানে বেঞ্চ, কেরামবোর্ড ও টেলিভিশন রাখা যাবে না। বিনা কারণে সন্ধ্যা ৬টার পরে ঘরের বাইরে আসা যাবে না।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় শার্শায় ৩০টি নমুনার মধ্যে ২২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের শতকরা হার ৭৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এ পর্যন্ত উপজেলায় ৬২১ জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। যাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন করোনা টেস্টও করা যাচ্ছে। বন্দর কেন্দ্রিক যাত্রীর কথা ভেবে গত ১৮ মে করোনা টেস্টের জন্য হাসপাতালে মেশিন বসানো হয়েছে। এখন এখানেই র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরপরও অনীহার কারণে সাধারণ মানুষকে ব্যাপকভাবে টেস্টের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। যারা স্বেচ্ছায় টেস্টের জন্য আসছে তাদেরকেই কেবল পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে এ সংখ্যাও কম না।
ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন (দুপুর ২টা) পর্যন্ত ভারত থেকে ৫ হাজার ২৩০ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী বাংলাদেশে ফিরেছেন। করোনা পজিটিভ সনদ নিয়ে ভারত থেকে ফিরেছেন ১৩ জন। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ৪৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জনের শরীরে মিলেছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন)। ভারতে কখনো যায়নি যশোরে এমন মানুষের শরীরেও মিলেছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট।