নিবন্ধন ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডে কেয়ার সেন্টার) চালালে দুই বছরের জেল ও দশ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বিল-২০২১’ সংসদে পাস হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুননেছা ইন্দিরা বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
গতকাল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপি’র সংসদ সদস্যরা। তাদের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরপর স্পিকার সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন। বিএনপি’র এমপি রুমিন ফারহানার একটি সংশোধনী প্রস্তাব সংসদ গ্রহণ করে। পাস হওয়া বিলের বিধান অনুযায়ী, যেসব শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র এখন পরিচালিত হচ্ছে, নতুন আইন পাস হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে তাদের নিবন্ধন নিতে হবে। তখন সবগুলো শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে আসবে।
তবে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজ ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত শ্রেণির কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার পাশাপাশি আইনের অধীন নিবন্ধন সনদ নিয়ে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে। এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর অনুমোদন ছাড়া কেউ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবে না। অনুমোদন ছাড়া এসব পরিচালনা করলে অপরাধ হবে। নিবন্ধন ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র চালালে দুই বছরের জেল ও দশ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থেকে শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। এ ছাড়া শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে সংক্রামক রোগের বিস্তার ঘটার তথ্য গোপন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, শিশু বা ক্ষেত্রমতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর প্রয়োজনীয় সেবা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বিনোদন, শিক্ষা ও শিশুর জন্য অনুকূল পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি তিন মাসে একবার করে শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে হবে। উল্লেখ্য, গত ৩রা এপ্রিল বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।