Image default
বাংলাদেশ

মানুষ ঢাকায় ফিরছে ‘লাশবাহী’ গাড়িতে

সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস। যার নম্বর (ঢাকা মেট্রো-শ ১১-১৭৮৮)। মাইক্রোবাসটির সামনে ও পেছনে লাল রঙ দিয়ে বড় অক্ষরে লেখা ‘লাশবাহী’। ‘লাশবাহী’ এ মাইক্রোটিতে কোনো মরদেহ না থাকলেও তাতে করেই রাজশাহী থেকে রাজধানী ঢাকায় যাচ্ছেন যাত্রীরা। শুক্রবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজশাহী নগরীর ভদ্রামোড় থেকে পাঁচযাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ‘লাশবাহী’ সাদা মাইক্রোবাসটি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘লাশবাহী’ মাইক্রোটিতে পূর্বেই ভাড়া মিটিয়ে ঠিক করা হয় যাত্রী। আর এতেই শুরু হয় রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহীর গোপন সার্ভিস। কঠোর লকডাউনে মেডিকেল সার্ভিস লকডাউনের আওতামুক্ত থাকে। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে এ গোপন সার্ভিস। এ বিষয়ে জানতে মাইক্রোবাসের চালকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি। বলেননি নিজের নামটিও। তবে মাইক্রোতে থাকা যাত্রীরা জানান, তারা ঢাকায় যাচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিরোইল এলাকার এক যাত্রী বলেন, ‘ঢাকায় একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। কোরবানির ঈদে বাড়িতে এসেছি। ফেরার জন্য অনেক চেষ্টা করেও রেলের টিকিট পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে এ ‘লাশবাহী’ নামক সার্ভিসটির মাধ্যমে রওনা দিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘গত ঈদেও বাস চলাচল বন্ধ ছিল। সে সময় রাজশাহী-ঢাকা বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় যাই। সে সময় ৫০০ টাকার ভাড়া গুনতে হয়েছিল ১৫০০ টাকা। এভাবে তার মতো অনেকেই এই তিনগুণ ভাড়ায় ঢাকায় গেছেন উপায় না পেয়ে।

এদিকে ঈদুল আজহার পরদিন শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হয়। এ বিধিনিষেধ পালনে মাঠে সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে র‌্যাব ও বিজিবি কাজ করছে। বিধিনিষেধের প্রথম দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখা মেলেনি কোনো প্রকার সাধারণ যানবাহনের চলাচল।

সরজমিনে দেখা গেছে, নগরীর রেলওয়ে স্টেশন ও বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কগুলো ফাঁকা ছিল। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ছিল পুলিশের চেকপোস্ট। মোটরসাইকেল চড়ে রাজশাহী প্রবেশ করা দূর-দূরান্তের মানুষকে চেকপোস্টে দাঁড় করিয়ে করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ। তবে সারাদিন নগরীর সাহেববাজার, রেইলগেইট, কোর্ট কাশিয়াডাঙ্গা ও তালাইমারী এলাকার প্রবেশপথগুলোতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে যাওয়া-আসা করতে দেখা গেছে অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়িগুলো।

তবে রামেক হাসপাতাল এলাকাতেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সগুলো রোগী নিয়ে আসার পর ফেরার পথে তুলছেন যাত্রী। এতে ভাড়াও হাকছেন অন্যান্য দিনের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি। এ বিষয়ে রাজশাহী নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়িগুলো হাসপাতালে দ্রুত যাওয়ার তাড়া থাকে। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের থামানো হয় না। অধিকাংশ সময় করোনা আক্রান্ত রোগীও থাকে সে দিকটি বিবেচনা করে পুলিশ সদস্যরা মরদেহ কিংবা রোগীর স্বজনদের কাছে যেতে চায় না।

তিনি আরও বলেন, ‘তবে ‘লাশবাহী’ অ্যাম্বুলেন্স কিংবা কোনো পরিবহনের নামে যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করছে এমন তথ্য পেলে বা কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related posts

খাবার না থাকা মানুষকে ঘরে রাখা কঠিন হবে

News Desk

নতুন ডাক ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

News Desk

বইন্যার সময় মোগো আশ্রয় নেওয়ার জায়গা হইলো

News Desk

Leave a Comment