টানা বৃষ্টিপাত, বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারত। এসবের প্রভাবে গত কয়েকদিনে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে অন্তত ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য কর্ণাটক এবং তেলেঙ্গানাতেও।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার কিছু অংশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো একাধিক বাঁধ খুলে দিতে বাধ্য হয়েছে এবং ঝুঁকিতে পড়া মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে বলেছেন, অপ্রত্যাশিত ভারি বৃষ্টিপাতে অনেক জায়গায় ভূমিধস দেখা দিয়েছে এবং নদীগুলো উপচে পড়েছে। আমরা বাঁধের পানি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি এবং সেইমতে নদীপাড়ের মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছি।
উপকূলীয় এলাকাগুলোতে উদ্ধার অভিযানে ভারতীয় নৌ এবং সেনাবাহিনী অংশ নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিজয় ওয়াদেটিওয়ার নামে রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রী জানান, ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় তালিয়ে গ্রামে ভূমিধসে অন্তত ৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। খোদ মুম্বাইয়ে একটি ভবন ধসে মারা গেছেন অন্তত চারজন। এছাড়া ভূমিধস ও ভারি বৃষ্টিপাতজনিত দুর্ঘটনায় মহারাষ্ট্রের অন্যান্য অংশগুলোতে মারা গেছেন আরও ২৭ জন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজ্যের সাতারা ও রাইগড় জেলায় ভূমিধসে কয়েক ডজন মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সাতারা, রাইগড় ও রত্মাগিরির বিভিন্ন জায়গায় উদ্ধার অভিযান চলছে। ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে আমরা উদ্ধারের যন্ত্রপাতি দ্রুত পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছি।
মহারাষ্ট্রের আরেক কর্মকর্তা জানান, মুম্বাইয়ের সঙ্গে বেঙ্গালুরুর সংযোগকারী একটি মহাসড়কের বেশ কয়েকটি জায়গা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আটকা পড়েছে হাজার হাজার ট্রাক। এছাড়া, কয়েকশ গ্রাম ও শহর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাবও।
নদীর পানি উপচে পড়ছে পার্শ্ববর্তী দুই রাজ্য কর্ণাটক এবং তেলেঙ্গানাতেও। সেখানকার সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।