নচিকেতা চক্রবর্তী। দুই বাংলার গানের শ্রোতাদের কাছে জীবনমুখী গানের জন্য নন্দিত নাম। বাংলা গানকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। বহু জনপ্রিয় গানের জনক তিনি। ২৯ বছর আগে বাংলা আধুনিক গানের পরিবর্তন এনেছিলেন। সেই ধারা বয়ে চলেছেন এখনও।
বাংলা গানের ভক্তরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন কলকাতার এই কণ্ঠশিল্পীর নতুন গানের।
গানের আগুনমানুষ নচিকেতা জীবদ্দশাতেই দারুণ এক সম্মান পেতে চলেছেন। তার নামে তৈরি হচ্ছে ৮০০ আসন বিশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহ। হাওড়ার আমতায় এই বিশেষ অডিটরিয়াম তৈরি হচ্ছে। এর নাম রাখা হয়েছে ‘নচিকেতা মঞ্চ’।
ভূপেন হাজারিকা ছাড়া আর কোনো শিল্পীর এমন সৌভাগ্য হয়নি। স্বভাবতই খুশি নচিকেতা। ‘জীবনমুখী’ গানের স্রষ্টা তার অনুভূতি জানিয়ে কলকাতার গণমাধ্যমে বলেন, ‘লজ্জা লাগছে। তবে আনন্দও হচ্ছে। আমার অনুষ্ঠান দিয়ে প্রেক্ষাগৃহের যাত্রা শুরু হলে আরও ভাল লাগবে।’
‘জীবনমুখী’ গানের সূত্র ধরেই তুমুল জনপ্রিয়তা নচিকেতার। শিল্পীর ‘নীলাঞ্জনা’, ‘অনির্বাণ’, ‘ডাক্তার’, ‘বৃদ্ধাশ্রম’-এর মতো গানগুলো এখনও সবার মুখে মুখে। দু’টি চায়ের স্টল রয়েছে শিল্পীর নামে। ‘চা ও নচিকেতা’ এখন পাটুলির অন্যতম ল্যান্ডমার্ক। নচিকেতার নামে ২০১৯ সালে সাতদিনব্যাপী মেলাও হয়েছে হাওড়ায়। এবার আস্ত একটি প্রেক্ষাগৃহ।
১৪ আগস্ট হাওড়ার আমতায় একটি বেসরকারি নার্সিং ও ফার্মাকোলজি কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন নচিকেতা। সেখানেই কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, এই কলেজে নচিকেতার নামে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হবে। নচিকেতা ফ্রেন্ডস ক্লাব ‘আগুনপাখি’র তরফে অভিষেক দে জানিয়েছেন, ‘কোনো শিল্পীর নামে জীবদ্দশায় প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হওয়ার ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে সত্যিই বিরল। আমরা ‘অগ্রগতি’ সংস্থার কাছে কৃতজ্ঞ।’
শুরু থেকেই স্রোতের বিপরীতে হাঁটতে ভালবাসেন নচিকেতা। একুশ শতকে দাঁড়িয়েও স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না তিনি। ‘ক্যাবলা’ ফোনেই সারেন কথা বলা আর মেসেজিংয়ের কাজ। নিজের কোনও ই-মেল আইডিও নেই। সম্প্রতি আত্মজীবনী শুরু করেছেন গায়ক। নাম দিয়েছেন ‘বিপজ্জনক হারমোনিয়াম’। তিরিশ বছরের সংগীত জীবনে প্রায় ১০ হাজারের কাছাকাছি স্টেজ শো। প্রকাশিত গানের সংখ্যা প্রায় আটশো।