সুখী কে না হতে চায়? আমরা প্রত্যেকেই যে যার মতো সুখে থাকতে চাই। এর মূল চাবিকাঠি রয়েছে নিজের হাতেই। প্রতিদিনের চলার পথ যত বন্ধুরই হোক না কেন, নিজেই পথটা তৈরি করে নিতে পারেন। সুখের সংজ্ঞা প্রত্যেকের নিকট আলাদা। কারও নিকট স্বাধীনতায় সুখ, কারও নিকট সকলের সাথে মিলে মিশে থাকাটাই সুখ। আবার কারও নিকট মনের সুখই আসল সুখ।
সুখী থাকতে হলে কিছু অভ্যাস আর লাইফ-স্টাইল পরিবর্তন করা যেতে মারে। অধিকাংশ মনোবিজ্ঞানী সুখের অনেকগুলো কারণ উল্লেখ করেছে। সেখান থেকে কিছু বিষয় বাছাই করে, আজকে আমরা কিছু বিষয় আলোচনা করবো।
সুখী হওয়ার উপায়
১. সুখী হতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান
গবেষণায় দেখা গেছে, সুস্বাস্থ্য, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মানসিক সুস্থতার জন্য ঘুমের কোন বিকল্প নেই। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। ভাল ঘুম না হলে আপনার মেজাজ সবসময় খিটখিটে থাকবে। ফলে, মানুষের সাথে আপনার আচরণ খুব একটা ভাল হবে না। মানুষ আপনার থেকে দূরে থাকবে। ফলাফল হিসাবে আপনার মানসিক অস্থিরতা আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে।
ভাল ঘুমের জন্য যে কাজগুলো করতে পারেন –
ঘুমানোর এবং ঘুম থেকে উঠার একটি নির্দিষ্ট টাইম সেট করুন। সে সময় সব ধরণের কাজ থেকে বিরত থাকুন।
প্রতিদিন একই টাইমে ঘুমানো এবং ঘুম থেকে উঠার চেষ্টা করুন।
ভাল ঘুমের জন্য প্রয়োজনে গোসল করে নিন, বই পড়ুন বা এমন কিছু করুন যারা দ্বার আপনি মানসিকভাবে শান্তিতে থাকবেন।
রুমের পরিবেশ ঘুমের জন্য উপযুক্ত করে তুলেন। রুম অন্ধকার, ঠাণ্ডা এবং শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।
২. নিজের জন্য পরিকল্পনা
বাস্তবসম্মত কোনো লক্ষ্য স্থির করে সেটি অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। সুখী হতে হলে লক্ষ্যটি অর্জন করতেই হবে, এমনটি নয়। বরং সেই প্রচেষ্টার মধ্যেই সুখ খুঁজে পাওয়া যায়।
৩. সুখী হতে হলে তুলনা করা বন্ধ করুন
আপনি যতদিন নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করবেন তত দিন আপনি অসুখী থাকবেন। আপনার মধ্যে যা আছে তাই নিয়ে খুশি থাকার চেষ্টা করুন। পৃথিবীতে এমন অনেক ব্যক্তি আছে যাদের দুটি চোখ অন্ধ কিন্তু তারপরেও তারা সুখী। আবার অনেকের এই মূল্যবান দুটি চোখ থাকা সত্ত্বে সে চোখ দিয়ে শুধু দুখের অশ্রু ঝরে। অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা না করে, আপনার নিজের মধ্যে যা আছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যান। পৃথিবীর সকল সফল ব্যক্তিরা পরিশ্রমের মাধ্যমেই সফলতা পেয়েছে।
৪. সুখী থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার খান
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আপনার স্বাস্থ্য যদি ভাল না থাকে, তাহলে আপনি যত কোটি টাকার মালিক হন কিংবা যত সফলতাই আসুক সুখী হতে পরবেন না। সুস্বাস্থ্যের জন্য ভাল খাবারের কোন বিকল্প নেই। সুস্থতার জন্য যোগব্যায়াম ও সকালে হাঁটার মতো হাজারো উপায় বেছে নিতে পারেন। শরীর ও মন একটি আরেকটির ওপর নির্ভরশীল। তাই একটি নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী চলার চেষ্টা করুন। যেমন পরিমিত পরিমাণে খাবার ও ঘুম। এ ছাড়া প্রতিদিন সকালে কিংবা সন্ধ্যায় শারীরিক ব্যায়াম বা ইয়োগা করতে পারেন। এতে দুশ্চিন্তা অনেকটাই লাঘব হয়।
৫. নেতিবাচক চিন্তা আর নয়
আগামীকাল পরীক্ষা আর আজ রাতে আপনার মনে ভিড় করল হাজারো দুশ্চিন্তা, যার অধিকাংশই নেতিবাচক। খুব সহজ ভাষায় এ ধরনের চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। শুধু এমন চিন্তাই নয়, নেতিবাচক মানুষ এবং আলোচনা থেকেও সরে আসুন। কেননা, আপনার পরিধি নিজেই বুঝবেন, অন্যের কথায় সহজেই প্রভাবিত হওয়ার কিছু নেই।
৬. নিজেকে ভালোবাসুন
সবার আগে নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন। সময় বরাদ্দ রাখুন কিছুটা নিজেরও জন্য। আপনার প্রিয় মানুষটি কাছে নেই? আপনি নিজেই ব্যস্ত হয়ে পড়ুন না! ঘুরে আসুন কোথাও কিংবা শখের বিষয়গুলো চর্চা করুন। কিংবা পরিবারের সবার জন্য কিছু একটা রান্না করে ফেলুন ঝটপট। যত যাই হোক, নিজেকে বোঝার ক্ষমতা আপনারই আছে। সব নেতিবাচকতা এড়িয়ে নিজেকে অভয় দিন, ‘দিন শেষে আমিই জয়ী!
৭. লক্ষ্য ঠিক করুন
লক্ষ্য ঠিক করার দ্বারা আপনি আপনার জীবনের একটি অর্থ ঠিক করলেন। অনেকে বেচে থাকার কোন অর্থ খুঁজে পায় না। কিন্তু আপনি যখন লক্ষ্য ঠিক করবেন তখন বেচে থাকার অর্থ খুঁজে পাবেন।