ময়মনসিংহ জেলায় গত ১৫ দিনে করানোয় আক্রান্ত হয়েছেন ২৭৯২ জন। একই সময়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৪৯ জন। স্বাস্থ্যবিধি না মানা, মানুষের মাঝে উদাসীনতা ও মাস্ক ব্যবহার না করায় সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে গত ২২ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি ১৫ দিনে ৯০৩১ নমুনা পরীক্ষায় ২৭৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। হিসাবে ১৫ দিনে গড়ে শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন চিকিৎসক মহিউদ্দিন খান বলেন, গত ১৫ দিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় মারা গেছেন ১৪ জন এবং বাকি ৩৫ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ৮৯ জন রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন সাত জন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিভাগের প্রধান ও করোনা বিষয়ক চিকিৎসক আনিসুর রহমান বলেন, শনাক্ত বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ মানুষের মাঝে অসতর্কতা, মাস্ক না পরা, উদাসীনতা এবং বাইরে থেকে ঘরে গেলে সাবান দিয়ে ভালোমতো হাত না ধোয়া।
তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে শুধুমাত্র স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু হাট-বাজার দোকানপাট সবকিছু খোলা আছে। এসব স্থানে মানুষের ভিড় আগের মতোই রয়ে গেছে। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বলেই করোনা শনাক্তের হার দিন দিন বাড়ছে। টিকা দেওয়ার কারণে মৃত্যুহার অনেকটাই কমেছে দাবি করেছেন এই বিশেষজ্ঞ। যারা মারা যাচ্ছেন তারা আগে থেকেই ডায়াবেটিস, হার্ট, কিডনিসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত থাকার পর করোনা পজিটিভ হয়ে মারা যাচ্ছেন।
জেলা সিভিল সার্জন চিকিৎসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে আনতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। স্থানীয়ভাবে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সভা করে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা আইন মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।