ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়া সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো বলছে, দেশটিকে ঘিরে রাশিয়া তার সেনা ও সরঞ্জাম মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সংকট সমাধানে পুতিনের স্বদিচ্ছার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দাবি, সীমান্তে দেড় লাখ সেনা এখনও মোতায়েন করে রেখেছে দেশটি।
যদিও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, রাশিয়া ইউক্রেনের সীমান্তঘেঁষা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল থেকে মহড়া শেষে সেনা প্রত্যাহার করেছে। এদিকে বেলারুশও জানিয়েছে, মহড়া শেষ হওয়ার পর দেশটিতে একদিন বাড়তিও থাকবে না রুশ সেনারা।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ট্যাংক, ইনফ্র্যান্টি রেজিমেন্টের ভারী অস্ত্র ও আর্টিলারি ডিভিশনের কামানসহ ভারী অস্ত্র ক্রাইমিয়া থেকে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। যদিও এই ক্রাইমিয়া অঞ্চলই ইউক্রেন থেকে যুদ্ধ করে দখল করে নেয় মস্কো। পরে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলছেন, আক্রমণে সক্ষম রাশিয়ার সেনাদের প্রত্যাহার নয়, বরঞ্চ ইউক্রেন সীমান্তের কাছে নিয়ে আসছে।
এমএসএনবিসিকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এমনটাই (মিথ্যা তথ্য) রাশিয়া বলে। এমনটাই রাশিয়া করে। আমরা সেনা সরানোর কোনো লক্ষণই দেখছি না।’
একজন পশ্চিমা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়ার হামলার আশঙ্কা ফেব্রুয়ারিজুড়েই থাকবে। দেশটি এখনো ইউক্রেনকে আক্রমণ করতে পারে এবং কোনো ধরনের সতর্কতা ও পূর্বাভাস ছাড়াই।
ব্রাসেলসে ন্যাটো জোটের আলোচনার আগে সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল স্টোলেনবার্গ জানিয়েছেন, ‘আমরা যা দেখছি, তা হলো ইউক্রেন সীমান্তে সেনাসংখ্যা বাড়াচ্ছে রাশিয়া। এ ছাড়া আরো সেনাদের নিয়ে আসা হচ্ছে। কোনো ধরনের সেনা প্রত্যাহার হচ্ছে না।’
যদিও ক্রেমলিন দাবি করেছে, ন্যাটোর দাবি ভুল। আয়ারল্যান্ডে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, রাশিয়ার সেনারা ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে তাদের নির্ধারিত স্থানে ফিরে আসবে।
রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন হামলার কোনো পরিকল্পনাই রাশিয়ার ছিল না। রাশিয়া শুধু রেডলাইন ক্রস করার বিষয়ে সতর্ক করা ও ইউক্রেনের ন্যাটো জোটে যোগদান ঠেকাতে চেয়েছিল।
যুক্তরাজ্য এস্তোনিয়ায় তাদের সেনা সংখ্যা দ্বিগুণ করছে এবং সেখানে বাড়তি ট্যাংক ও আর্মড ভেহিকল পাঠিয়েছে দেশটি।
এদিকে বুধবার ইউক্রেনে হামলার হুমকির বিরুদ্ধে পালিত হয়ে গেল ‘ঐক্যের দিন’। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ডাকে সাড়া দিয়ে রাস্তায় জাতীয় পতাকা নিয়ে বের হয় সাধারণ মানুষ। এ সময় তাদের দেশটির জাতীয় সংগীত গাইতে দেখা যায়।
যদিও ইউক্রেন সরকার বলছে, ভয়াবহ সাইবার হামলার শিকার হয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এত বড় সাইবার হামলা এর আগে দেখেনি দেশটি। এ হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছে তারা। রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সূত্র : আলজাজিরা