রাশিয়া বারবার দাবি করছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, তিনি কোথাও যাননি, কিয়েভেই আছেন। রাশিয়ার দাবি উড়িয়ে স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। খবর বিবিসির।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিতই তাঁর অবস্থান জানাচ্ছেন। নতুন ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, তিনি রাজধানী কিয়েভেই আছেন, লড়াই করছেন। নিজের অবস্থানের প্রমাণ দিতে গত শুক্রবারও একটি ভিডিও বার্তা দেন তিনি।
গতকালের ওই ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘শুনুন, আমি এখানেই আছি। আমরা আমাদের অস্ত্র ফেলে দেব না। আমরা আমাদের দেশকে রক্ষা করব, কারণ, আমাদের কাছে এখন আমাদের অস্ত্রই সত্য। একই সঙ্গে আমাদের ভূমি, আমাদের দেশ ও আমাদের সন্তান সত্য এবং আমরা এগুলোর সবকিছুকেই রক্ষা করব।’
ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি ইউক্রেনের মানুষের ক্রোধ ও রুশ আগ্রাসন মোকাবিলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এমন দৃঢ়তার কারণে অনলাইনে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন তিনি।
জেলেনস্কি শুরু থেকেই বলে আসছেন রাশিয়া যতই হামলা করুক, তিনি দেশ ছেড়ে যাবেন না। তবে শুক্রবার গুঞ্জন উঠতে শুরু করে, জেলেনস্কি রুশ সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন নয়তো রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে পালিয়েছেন। এরপরই এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, ‘পালিয়ে যাইনি, আমরা দেশকে রক্ষা করব।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বাসভবন গরোদেৎস্কি হাউসের সামনের ওই ভিডিওতে জেলেনস্কিকে বলতে শোনা যায়, ‘অনলাইনে অনেক ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, আমি নাকি সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সমর্পণের নির্দেশ দিয়েছি এবং নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু আমি এখানেই আছি। আমরা অস্ত্র ছাড়ব না। দেশকে রক্ষা করব।’
রুশ সেনারা কিয়েভে ঢুকতে শুরু করলে এর আগে জেলেনস্কিকে ইউক্রেন থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জেলেনস্কি বলেন, ‘এখানে লড়াই হচ্ছে, আমার গোলাবারুদ দরকার, আমাকে সরিয়ে নেওয়ার দরকার নেই।’ এসব কথা বলে প্রশংসা কুড়ান তিনি।
জেলেনস্কি (৪৪) রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে ইউক্রেনের একজন জনপ্রিয় টিভি কৌতুকাভিনেতা ছিলেন। ২০১৯ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জেলেনস্কি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে বলেছিলেন, তিনি জয়ী হয়েছেন কারণ, মানুষ তাঁর ‘সিনড্রেলা স্টোরি’ দেখে ভেবেছে একজন সাধারণ মানুষও দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারে।