সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু মনে নেই আলেকজান্ডার লেসুনের। কিন্তু এই অঞ্চলেই ১৯৮৮ সালে তার জন্ম। এর তিন বছর পর সোভিয়েত ভেঙে যায়। এটি এখনো তার পাসপোর্ট তালিকাভুক্ত দেশ।
১৯৯০ এর দশকে বেলারুশে বেড়ে উঠেন লেসুন। তৎকালীন সময়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে সোভিয়েত ইউনিয়নের অর্জনের গল্পগুলো শুনে বড় হয়েছেন। সে সময় থেকেই একদিন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। একই সঙ্গে কিছুটা আপসোসও করতেন। কারণ, সোভিয়েত থাকতে খেলাধুলায় যেভাবে অগ্রাধিকার দেওয়া হতো, অঞ্চলটি ভেঙে যাওয়ার পর বেলারুশ সরকার সেভাবে ক্রীড়াক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেনি।
তাই ২০০৯ সালে সুযোগ পেয়েই রাশিয়ার পতাকাতলে চলে আসেন আলেকজান্ডার লেসুন। স্বপ্ন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কেবল যে ভালো ফান্ডিংয়ের কারণে এমন নয়। আরও কারণ ছিল। এ বিষয়ে ৩৩ বছর বয়সী এই ক্রীড়াবিদ বলেন, ‘রাশিয়ার পতাকার অধীনে খেলতে পেরে আমি গর্বিত ছিলাম। আমার দাদি রাশিয়ান। দেশটিতে আমার অনেক আত্মীয় রয়েছে।’
‘রাশিয়া সবসময় আমার মনের কাছাকাছি ছিল, শক্তিশালী কিছু, মহান। তবে আমি রাজনীতি অথবা দেশটির সেনাবাহিনীর কথা বলছি না। আমি কথা বলছি মানুষ এবং রাশিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে। আমি সবসময় এর সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অনুভব করি,’ যোগ করেন তিনি।
রাশিয়ার হয়ে এখন পর্যন্ত মডার্ন প্যান্থালনে বিভাগে ১৪টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মেডেল জিতেছেন আলেকজান্ডার লেসুন। এর মধ্যে চারটি স্বর্ণপদক। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে গোল্ড মেডেলও জয় করেন। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রাশিয়ার হয়ে আর কখনো কোনো প্রতিযোগীতায় অংশ নেবেন না। মূলত ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জের ধরেই তার এমন সিদ্ধান্ত।
লেসুন বলেন, ‘২২ ফেব্রুয়ারি থেকে আমি খেলার সব ফরম্যাট থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমি কী অনুভব করছি? আমি কি এই সাক্ষাৎকারে শপথ বাক্য পাঠ করতে পারি? আমি বুঝতে পারি বিশ্ব আর এক থাকবে না।’
এর দুই দিন পরই ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। যা এখনো চলছে। কবে নাগাদ সংঘাত বন্ধ হবে, তা কেউ বলতে পারছে না।